চকরিয়ায় জামায়াতের গণমিছিল, বিএনপির ঘাঁটিতে ‘শক্তি প্রদর্শন’
Published: 4th, August 2025 GMT
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর শহরে স্মরণকালের বড় গণমিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। আজ সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি ‘জুলাই গণ-আন্দোলনের’ এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত হলেও এটিকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কক্সবাজার-১ (চকরিয়া–পেকুয়া) আসনে জামায়াতের ‘শক্তি প্রদর্শন’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন কক্সবাজার-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ও কক্সবাজার শহর জামায়াতের আমির আবদুল্লাহ আল ফারুক। তিনি হাত নেড়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে অভিবাদন জানান।
এ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে আসছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি দুবার এবং তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চকরিয়া বাস টার্মিনাল থেকে মিছিল শুরু হয়ে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের চিরিঙ্গা সোসাইটি এলাকা প্রদক্ষিণ করে জনতা শপিং সেন্টার মাঠে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায় জনস্রোতের কারণে মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়। স্থানীয় জামায়াত নেতারা দাবি করেন, এতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ অংশ নেন।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চকরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল বশর। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী।
সমাবেশে নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে একশ্রেণির মানুষ চাঁদাবাজি শুরু করেছে। এর দায় কোনো নির্দিষ্ট দলের ওপর চাপাতে চাই না। তবে জনগণ আগামী নির্বাচনে এসব চাঁদাবাজদের প্রত্যাখ্যান করবে।’
নুর আহমদ বলেন, দেশে এখন একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে রয়েছে, অথচ প্রশাসন বিভিন্ন দলকে বৈষম্যমূলক সুবিধা দিচ্ছে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা আমির আনোয়ারী বলেন, ‘আমরা কারও রক্তচক্ষুকে ভয় করি না। বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’ এ সময় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আবদুল্লাহ আল ফারুককে কক্সবাজার-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। জনতা হাততালি দিয়ে ফারুকের প্রতি সমর্থন জানান।
আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের মূল দাবি ছিল ন্যায়ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন। তবে তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ইসলামি আদর্শ ছাড়া দুর্নীতিমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র সম্ভব নয়। আওয়ামী সরকার বিদায়ের পর দেশে এখনো ফ্যাসিবাদী আচরণ, দুর্নীতি ও বৈষম্য চলমান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য আক্তার আহমদ, জেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মীর মোহাম্মদ আবু তালহা, চকরিয়া পৌর জামায়াতের আমির আরিফুল কবির, মাতামুহুরি সাংগঠনিক উপজেলার আমির মাওলানা ফরিদুল আলম ও চকরিয়া উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত র আম র র আহমদ চকর য়
এছাড়াও পড়ুন:
বাবা-মেয়ের কাছ থেকে টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ২
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বাবা ও মেয়ের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে সিলেটের শাহপরাণ থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুলাউড়ার সেলিম আহমদ ওরফে অনিক (৩৭) ও সিলেটের শাহপরাণ এলাকার সাকিব আহমদ (২৫)।
আরো পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
হত্যাচেষ্টা মামলায় রসিকের সাবেক কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
পুলিশ জানায়, বড়লেখার শিমুলিয়া এলাকার আব্দুল আহাদ গত ৩০ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পূবালী ব্যাংকের বড়লেখা শাখা থেকে দুই লাখ টাকা উত্তোলন করেন। তার মেয়ে সুহাদা আক্তারের ব্যাগে নগদ ১৬ হাজার টাকা ছিল। টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে শিমুলিয়া এলাকায় চারজন সন্ত্রাসী দুইটি মোটরসাইকেলে এসে তাদের পথরোধ করে।
তারা ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে আব্দুল আহাদের মেয়ের ভ্যানেটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ছিনতাইকৃত ব্যাগে নগদ ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন, দুই ভরি রুপার চেইন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল। এ ঘটনায় বড়লেখা থানায় বাদী আব্দুল আহাদ অভিযোগ দেন। এরপর মামলা রুজু হয় (মামলা নম্বর-১৭, ধারা ৩৪১/৩৯২ দণ্ডবিধি)।
তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির সহায়তায় সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করা হয়। ১ আগস্ট রাতে সিলেট শহরের শাহপরাণ থানাধীন কাজিরবাজার এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা, ভিকটিমের মোবাইল, ধারালো একটি দা, একটি মোটরসাইকেল ও কালো হেলমেট, টি-শার্ট ও গেঞ্জি জব্দ করা হয়।
মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। মামলার বাদীও তাদের শনাক্ত করেছেন। তারা জবানবন্দিতে পলাতক আরো কয়েকজন সহযোগীর নাম প্রকাশ করেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।”
ঢাকা/আজিজ/মাসুদ