ইন্দোনেশিয়ায় গত সপ্তাহ থেকে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা রাজধানী জাকার্তায় পার্লামেন্ট ভবনের সামনে আজ বৃহস্পতিবার ফের বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একটি ছাত্র সংগঠন জানিয়েছে, সরকারের সঙ্গে নির্ধারিত একটি বৈঠক এখনও সম্পন্ন হয়নি। বিশাল বিক্ষোভের পর গত সপ্তাহে ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় এই আলোচনা নির্ধারিত ছিল। 

জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও এমপিদের জন্য বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধার বিরুদ্ধে ইন্দোনেশিয়ায় দুই সপ্তাহ আগে ছাত্র, শ্রমিক ও অধিকার গোষ্ঠীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিক্ষোভ দমনের সময় পুলিশের গাড়িচাপায় ২১ বছর বয়সী এক রাইড শেয়ার চালক নিহত হওয়ার পর দেশজুড়ে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে।

মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, এসময় লুটপাট এবং দাঙ্গার ঘটনায় ১০ জন নিহত এবং এক হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছে।

স্থানীয়ভাবে বেম সি নামে পরিচিত ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট বলেছে, “মানুষের উদ্বেগ রাস্তায় বিক্ষোভের কারণে নয়, বরং দুর্নীতি ও আইনের রাজনৈতিকীকরণে কারণে।”

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দশটি ছাত্র ইউনিয়ন সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তারা পুলিশি সহিংসতার স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে এবং পার্লামেন্ট সদস্যদের জন্য বিলাসী সুবিধা ও সাধারণ ইন্দোনেশীয়দের অর্থনৈতিক কষ্টের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরেছে। 

ডেপুটি হাউজ স্পিকার তাদের বৃহস্পতিবার সরকারের সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ দিয়েছিলেন, তবে বেম সি নেতা মুজাম্মিল ইহসান বলেছেন, ওই বৈঠকের বিষয়ে পরবর্তীতে কিছু জানানো হয়নি। 

গেব্রাক ইউনিয়নের কর্মীরা আজ বৃহস্পতিবার জাকার্তায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন। আটককৃতদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন।

নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক অধিকার গোষ্ঠী হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ান কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে আটক করেছে।

সংস্থাটির এশিয়া বিভাগের উপ-পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি মতে, ইন্দোনেশিয়ান কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও অন্যায়ভাবে বিক্ষোভকারীদের আটক করে সরকারি নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত নয়।

এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেছেন, সামরিক বাহিনী ও পুলিশ সহিংস বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইন দ ন শ য়

এছাড়াও পড়ুন:

মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে একটি মসজিদে ঢুকে ভাঙচুর ও মুসল্লিদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে নেশাগ্রস্ত তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে মসজিদ কমিটির সভাপতি আশরাফ আলী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারোমারী বাজার এলাকার উত্তর বাতকুচি ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন বাইতুল নূর জামে মসজিদে হামলা ও আসবাবপত্র ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে যুবক নিহত

লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তর বাতকুচি গ্রামের জহুর উদ্দিনের তিন ছেলে ফরহাদ মিয়া, রুবেল মিয়া ও ফারুক মিয়া নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করেন। তারা ইমাম শফিকুল ইসলামের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আজ থেকে এই মসজিদে আর আযান দেওয়া যাবে না। আমাদের অনুমতি ছাড়া আর আযান হবে না।’ ইমাম এই কথার প্রতিবাদ করলে তারা তাকে ভয়ভীতি দেখান। আত্মরক্ষার্থে ইমাম পালিয়ে গেলে অভিযুক্তরা মসজিদের মাইক সেট, বৈদ্যুতিক বোর্ড, টিনের বেড়াসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন।

এসময় হাবিবুর রহমান ও কাজল মিয়া নামে দুই মুসল্লি বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকেও মারধর করেন নেশাগ্রস্তরা। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে আহতদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আশরাফ আলী বলেন, “এই ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং এ নিয়ে থানায় একটি লখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

নালিতাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, “মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ