এবার চার্লস–ক্যামিলাকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণের পরিকল্পনা ট্রাম্পের
Published: 20th, September 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলাকে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণের পরিকল্পনা করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতার ২৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করবে। এ আয়োজনে যুক্তরাজ্যের রাজা–রানিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা, সেটা নিশ্চিত নয়। তাঁদের আমন্ত্রণের সময় সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি।
সর্বশেষ ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যের কোনো রাষ্ট্রপ্রধান যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন। ওই সময় যুক্তরাজ্যের তৎকালীন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্র যান।
দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে সবে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাজ্য সফরে ট্রাম্পের সঙ্গী ছিলেন স্ত্রী মেলানিয়া, মেয়ে টিফানিসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুনযুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করলেন ট্রাম্প১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫সফরকালে তিনি যুক্তরাজ্যের রাজা–রানি, প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়াম ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গেও।
যুক্তরাজ্যে এটা ট্রাম্পের দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর। দায়িত্ব পালনকালে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুক্তরাজ্যে দুবার রাষ্ট্রীয় সফর বিরল ঘটনা। ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালের জুনে প্রথমবার যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুনরাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ট্রাম্প দম্পতির সম্মানে রাজকীয় নৈশভোজ আয়োজন করেন চার্লস–ক্যামিলা। উইন্ডসর ক্যাসলে ১৬০ জন অতিথির জন্য জাঁকজমকপূর্ণ এ ভোজসভা আয়োজন করা হয়।
ট্রাম্প বহু বছর ধরেই প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের একজন প্রশংসাকারী। সফরে ট্রাম্প উইন্ডসরে তাঁর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফরে ট্রাম্প১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ষ ট র য় সফর য ক তর জ য র য ক তর ষ ট র র য ক তর চ র লস
এছাড়াও পড়ুন:
সরকার, রাজনৈতিক দল সবারই দায়িত্ব আছে
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার মতপার্থক্য ও বিভক্তি রাজনীতিতে অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভায় রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসে সাত দিনের মধ্যে মতৈক্যে পৌঁছানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে অনিশ্চয়তা কতটা কাটবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ তৈরি হয়েছে, তাতে উদ্বেগ জানানো হয়। সাত দিনের মধ্যে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কার্যত রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরই সমঝোতার দায়িত্ব অর্পণ করল। প্রশ্ন হলো, এই সিদ্ধান্ত কি আদৌ কোনো ফলাফল আনতে পারবে?
এটা ঠিক, জাতীয় নির্বাচনের আগে যে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তার পেছনে রাজনৈতিক দলগুলোর অনড় অবস্থান একটা বড় ভূমিকা পালন করেছে। এই অনিশ্চয়তা দূর করার দায় ও দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর রয়েছে। রাজনৈতিক দল ও পক্ষগুলোকে এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা দেখেছি যে বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা, সমঝোতা ও কোনো কোনো জায়গায় ছাড় দিয়েই কয়েকটি দল বাদে আলোচনায় অংশ নেওয়া প্রায় সব দলই জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। এ ধরনের ঐক্য প্রচেষ্টা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল। সনদ বাস্তবায়নের উপায় এবং গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে না পরে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে সমঝোতায় আসার ব্যাপারেও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে একই দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশিত। তবে আমরা মনে করি, শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরে দায়িত্ব চাপানো নয়, সমঝোতার ব্যাপারে সরকারকেও নানামুখী উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে। যদিও এই সুপারিশের আইনি ভিত্তি নিয়ে সংবিধানবিশারদেরা প্রশ্ন তুলেছেন। এরপরও বলা যায়, ঐকমত্য কমিশন সুপারিশ দিয়ে দেওয়ার পর এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মূল দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের।
দেশের নাগরিকেরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের জন্য। এ নির্বাচনের সঙ্গে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, জাতীয় নিরাপত্তার মতো অতি জরুরি ও সংবেদনশীল বিষয়গুলো জড়িত। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এরই মধ্যে বেশির ভাগ আসনে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী কে হবেন, সেটাও নির্ধারণ করেছে। সব মিলিয়ে দেশ নির্বাচনী আবহে প্রবেশ করছে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে নির্বাচনী পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হলে, তার চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার আর কী হতে পারে?
অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে মতৈক্যে পৌঁছানোর জন্য সাত দিন সময় দিয়েছে। আমরা আশা করি, দলগুলো নিজেরা বসে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে। ঐকমত্যে পৌঁছানো ও নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব যেমন অন্তর্বর্তী সরকারের, সেই দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোরও। এখানে দায়িত্বকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই।
ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক উত্তরণযাত্রায় সব অংশীজন দায়িত্বশীল আচরণ করবে—সেটাই প্রত্যাশিত।