সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) পরিচালনা পর্ষদ থেকে উদ্যোক্তা পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর ডা. মো. রেজাউল হক পদত্যাগ করেছেন। তিনি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা পরিচালক ছিলেন। পদত্যাগ করা চিঠিতে তিনি স্বতন্ত্র পরিচালকদের অযোগ্যতা, দুর্নীতি ও ব্যাংকের সার্বিক ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার দায় তুলে ধরেছেন।

রবিবার (১২ অক্টোবর) ব্যাংকের চেয়ারম্যানের নিকট পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, ২০১৩ সালের ৩০ জুন থেকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হস্তক্ষেপে তাকে অস্ত্রের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।

রেজাউল হক অভিযোগ করেন, এস আলম গ্রুপ রাষ্ট্রীয় সহায়তায় ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর গত সাত বছরে (২০১৭ থেকে ২০২৪) ব্যাংকটিতে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে। এতে ব্যাংকটি প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার পতনের পর উদ্যোক্তারা আশা করেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকৃত উদ্যোক্তাদের হাতে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করে প্রস্তাবনাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তা না করে কিছু স্বতন্ত্র পরিচালকের সমন্বয়ে নতুন একটি পর্ষদ গঠন করা হয়। যা ছিল একেবারে ‘অকার্যকর’ সিদ্ধান্ত।’’

রেজাউল হক বলেন, ‘‘এই পর্ষদের সদস্যরা ব্যাংক কোম্পানি আইনের আলোকে উদ্যোক্তা বা শেয়ারহোল্ডার নন। তবুও তারা পর্ষদে থেকে ব্যাংক পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন। ফলে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক সহায়তা পাওয়ার পরেও ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।’’

তিনি অভিযোগ করেন, স্বতন্ত্র পরিচালকরা কেবল দৈনিক অফিসে উপস্থিতি ও সম্মানী নেওয়ার বাইরে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক যখন ব্যাংক মার্জার বিষয়ে শুনানির আয়োজন করে, তখন তাকে অবহিত না করেই স্বতন্ত্র পরিচালকরা তাতে অংশ নেন।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, উদ্যোক্তা না হয়েও তারা কীভাবে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।

রেজাউল হক বলেন, “ব্যাংকের হাজার হাজার আমানতকারী, শেয়ারহোল্ডার এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভবিষ্যৎ আজ অনিশ্চয়তার মুখে।” এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানান তিনি।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকসহ শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক বর্তমানে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

একীভূত তালিকায় অন্য ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি এবং এক্সিম ব্যাংক পিএলসি। নতুন ব্যাংকের জন্য নাম প্রস্তাব করা হয়েছে দুটি—‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’ ও ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’।

ঢাকা/নাজমুল/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ য ক ত ক প এলস কর ছ ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘা থেকে অপু বিশ্বাস

আজ ঢালিউড কুইন অপু বিশ্বাসের জন্মদিন। বাবা উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও মা শেফালী বিশ্বাসের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে অপু সবার ছোট। ১৯৮৩ সালের ১১ অক্টোবর বগুড়ার সদর উপজেলার সাতমাথা এলাকার কাকনারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। মায়ের উত্সাহেই মূলত নাচ শিখতে শুরু করেন অপু। হাতেখড়ি বগুড়ার বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে। 

অপু বিশ্বাস শিক্ষাজীবন শুরু করেন বগুড়ার এসওএস হারম্যান মেইনার স্কুলে। তারপর আলোর মেলা কেজি স্কুল থেকে প্রাইমারি ও ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পাস করেন। পরে সরকারি মুজিবুর রহমান কলেজে ইন্টারমিডিয়টে ভর্তি হন। 

আরো পড়ুন:

‘ডিরেক্টর কোনদিন আর্টিস্ট পয়দা করতে পারেনা’

মনামী ‘লক্ষ্মী’ না কি ‘দুষ্টু’ মেয়ে?

অপু বিশ্বাস পরিবারের সবার কাছে মেঘা নামে পরিচিত। তবে ঢাকাই চলচ্চিত্রে তার পরিচয় অপু বিশ্বাস নামেই। ক্লাস নাইনে পড়া অবস্থায় নৃত্যাঞ্চল আয়োজিত একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দশম হন অপু। অভিনয়শিল্পী আহসানুল হক মিনুর মাধ্যমে যোগাযোগ হয় গুণী নির্মাতা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে। ২০০৪ সালে এই পরিচালকের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। তখন অপু বিশ্বাস নবম শ্রেণির ছাত্রী। 

২০০৬ এরপর এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ সিনেমাতে প্রধান নায়িকা হয়ে অভিনয় করেন শাকিব খানের বিপরীতে। সিনেমাটি ব্যবসা সফল হওয়ার পর অপুকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।

শাকিব খানের সঙ্গে অপু বিশ্বাসের জুটি দর্শকদের দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়।২০০৭ সালে মান্নার বিপরীতে ‘মেশিনম্যান’ ছবিতে এবং শাকিব খানের বিপরীতে ‘কাবিননামা’ ছবিতে অভিনয় করেন অপু।  এই জুটি একের পর পর সিনেমায় অভিনয় করতে থাকেন। তাদের অভিনীত সিনেমার তালিকায় রয়েছে — ‘পিতার আসন’, ‘চাচ্চু’, ‘দাদিমা’, ‘মিয়া বাড়ির চাকর’, ‘জন্ম তোমার জন্য’, ‘মায়ের হাতে বেহেশতের চাবি’, ‘তোর কারণে বেঁচে আছি’, ‘কিং খান’, ‘বুক ফোটে তো মুখ ফোটে না’, ‘তুমি স্বপ্ন তুমি সাধনা,’ ‘মনে প্রাণে আছ তুমি’, ‘ভালোবাসার লাল গোলাপ’, ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’, ‘জান আমার জান’, ‘মনে বড় কষ্ট’, ‘মাই নেম ইজ খান’, ‘সম্রাট’, ‘রাজনীতি’ সহ আরও অনেক সিনেমা।

২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অপু–শাকিব জুটি একাধারে ৭০ টির মতো সিনেমাতে অভিনয় করেন। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে এক সময় প্রেমের সম্পর্ক হয় তাদের।

শাকিব খানের বাইরে অপু পর্দায় জুটি  বেধেছেন মান্না, ফেরদৌস, রিয়াজ, আমিন খান, অমিত হাসান, ইমন, কাজী মারুফ, নীরব ও ভারতের কলকাতার ইন্দ্রনীলের সঙ্গে। 

অপু বিশ্বাস ২০০৮ সালে ১৮ এপ্রিল গোপনে তার পর্দা জুটি শাকিব খানকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরও তারা কেউই এই বিষয়টি নিয়ে কোনো মুখ খোলেননি। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল বিকেলে একটি টেলিভিশনে সরাসরি সাক্ষাৎকারে অনুষ্ঠানে অপু বিশ্বাস উপস্থিত হয়ে শাকিব খানের সঙ্গে তার বিয়ের কথা প্রকাশ করেন। অপু এও জানান, মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করে নাম পরিবর্তন করে তিনি শাকিব খানকে বিয়ে করেন।
শাকিব অপু জুটির বিয়ের কথা জনসম্মক্ষে আসার পর থেকে তাদের সংসারে টানাপোড়েন তৈরি হয়। ২০১৮ সালের ১২ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে শাকিব ও অপুর বিবাহিত জীবনের অবসান ঘটে। 

লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্বতন্ত্র পরিচালকদের ওপর দায় চাপিয়ে পদত্যাগ করলেন একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালক
  • মেঘা থেকে অপু বিশ্বাস