শরিয়াহভিত্তিক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ব্যাংকটির একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালক মো. রেজাউল হক। তিনি ছিলেন ব্যাংকের উদ্যোক্তা শেয়ারধারী ও সাবেক চেয়ারম্যান। আজ রোববার ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকসহ শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক বর্তমানে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ–সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের পরপরই সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করলেন ব্যাংকটির শেয়ারধারী পরিচালক মো.

রেজাউল হক। ২০১৭ সালে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। গত বছর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর সাবেক চেয়ারম্যান মো. রেজাউল হক ও চার স্বতন্ত্র পরিচালকের সমন্বয়ে পর্ষদ পুর্নগঠন করা হয়। পুনর্গঠিত পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান স্বতন্ত্র পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলাম। তবে এক বছরেও ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ কারণে ব্যাংকটিকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে শিগগিরই ব্যাংকটির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার আগেই পদত্যাগ করেন মো. রেজাউল হক।

চিঠিতে পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে মো. রেজাউল হক লিখেছেন, ‘স্বতন্ত্র পরিচালকদের ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকের সঙ্গে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কোনো স্বার্থের বিষয় জড়িত না থাকা সত্ত্বেও তাঁদের সমন্বয়ে পর্ষদ গঠন করা হয়। এ কারণে এক বছরের অধিক সময়েও ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ব্যাংকের প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের হাতে ব্যাংকটি পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দিলে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হতো। এই দায় অবশ্যই ব্যাংকের বর্তমান পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনার ওপরে বর্তায়। স্বতন্ত্র পরিচালকেরা বিগত এক বছরের বেশি সময় শুধু দৈনিক অফিস করা ও বেতন নেওয়া ছাড়া ব্যাংক পরিচালনায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেননি। বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাংকটি একীভূতের জন্য যে শুনানির আয়োজন করেছিল, সেখানে স্বতন্ত্র পরিচালকেরা আমাকে না জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন। অথচ ব্যাংক একীভূতের শুনানিতে অংশগ্রহণের কোনো এখতিয়ার স্বতন্ত্র পরিচালকদের নেই।’

চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া চিঠিতে মো. রেজাউল হক আরও জানান, ‘২০১৩ সালের জুন থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর মেয়াদে ২০১৬ সালে শেয়ারধারীদের ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর আমাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে অস্ত্রের মুখে চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এস আলমের দখলের পর থেকে সাত বছরে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংকটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলমের পর্ষদ বাতিল করে ব্যাংকের প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের হাতে ব্যাংকটি পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই প্রস্তাব দেওয়া হলেও স্বতন্ত্র পরিচালকের সমন্বয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়, যা ছিল একটি অকার্যকর সিদ্ধান্ত।’

জানতে চাইলে মো. রেজাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যাংক পরিচালনায় স্বতন্ত্র পরিচালকেরা ব্যর্থ হয়েছেন। এ জন্য পদত্যাগ করেছি। এখন তাঁরা কোরাম পূর্ণ না হওয়ায় আর পর্ষদের সভা করতে পারবেন না।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স শ য ল ইসল ম এক ভ ত

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘা থেকে অপু বিশ্বাস

আজ ঢালিউড কুইন অপু বিশ্বাসের জন্মদিন। বাবা উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও মা শেফালী বিশ্বাসের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে অপু সবার ছোট। ১৯৮৩ সালের ১১ অক্টোবর বগুড়ার সদর উপজেলার সাতমাথা এলাকার কাকনারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। মায়ের উত্সাহেই মূলত নাচ শিখতে শুরু করেন অপু। হাতেখড়ি বগুড়ার বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে। 

অপু বিশ্বাস শিক্ষাজীবন শুরু করেন বগুড়ার এসওএস হারম্যান মেইনার স্কুলে। তারপর আলোর মেলা কেজি স্কুল থেকে প্রাইমারি ও ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পাস করেন। পরে সরকারি মুজিবুর রহমান কলেজে ইন্টারমিডিয়টে ভর্তি হন। 

আরো পড়ুন:

‘ডিরেক্টর কোনদিন আর্টিস্ট পয়দা করতে পারেনা’

মনামী ‘লক্ষ্মী’ না কি ‘দুষ্টু’ মেয়ে?

অপু বিশ্বাস পরিবারের সবার কাছে মেঘা নামে পরিচিত। তবে ঢাকাই চলচ্চিত্রে তার পরিচয় অপু বিশ্বাস নামেই। ক্লাস নাইনে পড়া অবস্থায় নৃত্যাঞ্চল আয়োজিত একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দশম হন অপু। অভিনয়শিল্পী আহসানুল হক মিনুর মাধ্যমে যোগাযোগ হয় গুণী নির্মাতা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে। ২০০৪ সালে এই পরিচালকের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। তখন অপু বিশ্বাস নবম শ্রেণির ছাত্রী। 

২০০৬ এরপর এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ সিনেমাতে প্রধান নায়িকা হয়ে অভিনয় করেন শাকিব খানের বিপরীতে। সিনেমাটি ব্যবসা সফল হওয়ার পর অপুকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। রাতারাতি তারকা বনে যান তিনি।

শাকিব খানের সঙ্গে অপু বিশ্বাসের জুটি দর্শকদের দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়।২০০৭ সালে মান্নার বিপরীতে ‘মেশিনম্যান’ ছবিতে এবং শাকিব খানের বিপরীতে ‘কাবিননামা’ ছবিতে অভিনয় করেন অপু।  এই জুটি একের পর পর সিনেমায় অভিনয় করতে থাকেন। তাদের অভিনীত সিনেমার তালিকায় রয়েছে — ‘পিতার আসন’, ‘চাচ্চু’, ‘দাদিমা’, ‘মিয়া বাড়ির চাকর’, ‘জন্ম তোমার জন্য’, ‘মায়ের হাতে বেহেশতের চাবি’, ‘তোর কারণে বেঁচে আছি’, ‘কিং খান’, ‘বুক ফোটে তো মুখ ফোটে না’, ‘তুমি স্বপ্ন তুমি সাধনা,’ ‘মনে প্রাণে আছ তুমি’, ‘ভালোবাসার লাল গোলাপ’, ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’, ‘জান আমার জান’, ‘মনে বড় কষ্ট’, ‘মাই নেম ইজ খান’, ‘সম্রাট’, ‘রাজনীতি’ সহ আরও অনেক সিনেমা।

২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অপু–শাকিব জুটি একাধারে ৭০ টির মতো সিনেমাতে অভিনয় করেন। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে এক সময় প্রেমের সম্পর্ক হয় তাদের।

শাকিব খানের বাইরে অপু পর্দায় জুটি  বেধেছেন মান্না, ফেরদৌস, রিয়াজ, আমিন খান, অমিত হাসান, ইমন, কাজী মারুফ, নীরব ও ভারতের কলকাতার ইন্দ্রনীলের সঙ্গে। 

অপু বিশ্বাস ২০০৮ সালে ১৮ এপ্রিল গোপনে তার পর্দা জুটি শাকিব খানকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরও তারা কেউই এই বিষয়টি নিয়ে কোনো মুখ খোলেননি। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল বিকেলে একটি টেলিভিশনে সরাসরি সাক্ষাৎকারে অনুষ্ঠানে অপু বিশ্বাস উপস্থিত হয়ে শাকিব খানের সঙ্গে তার বিয়ের কথা প্রকাশ করেন। অপু এও জানান, মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করে নাম পরিবর্তন করে তিনি শাকিব খানকে বিয়ে করেন।
শাকিব অপু জুটির বিয়ের কথা জনসম্মক্ষে আসার পর থেকে তাদের সংসারে টানাপোড়েন তৈরি হয়। ২০১৮ সালের ১২ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে শাকিব ও অপুর বিবাহিত জীবনের অবসান ঘটে। 

লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এসআইবিএলের উদ্যোক্তা পরিচালক রেজাউলের পদত্যাগ
  • মেঘা থেকে অপু বিশ্বাস