কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত এলাকায় পদ্মা নদীতে গত দুই দিন অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৪ কোটি টাকার অবৈধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল জব্দ করেছে বিজিবি। বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা দৌলতপুর উপজেলার আশ্রয়ণ বিওপি এলাকায় উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করেন।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অভিযানে ৩৫ হাজার কেজি অবৈধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল জব্দ করা সম্ভব হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে গতকাল আশ্রয়ণ বিওপি এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন বিজিবির যশোর দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়নের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শিকদার। তিনি বলেন, যশোর রিজিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা দক্ষিণে তালপট্টি (নীলডুমুর) থেকে উত্তরে পদ্মা নদী পর্যন্ত প্রায় ৬০০ কিলোমিটার বিস্তৃত। গত এক বছরে এই এলাকায় বিজিবি ১২২ দশমিক ৩১ কেজি স্বর্ণ ও ৮২ জন আসামি আটক করেছে। মাদক, অস্ত্র ও অন্যান্য চোরাচালানবিরোধী অভিযানে ৪৩৩ জন আসামি আটকসহ মোট প্রায় ৪০০ কোটি টাকার পণ্য জব্দ করা হয়েছে, যার বেশির ভাগই মাদক। এ ছাড়া ২২ জন মানব পাচারকারী দালালসহ ২ হাজার ৪১৫ জনকে আটক করে মামলা দায়েরের মাধ্যমে থানায় পাঠানো হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিজানুর রহমান জানান, কুষ্টিয়ার ৪৭ ব্যাটালিয়ন ২০২৪ সালে ৮৩ কোটি টাকার মাদক ও অবৈধ মালামাল জব্দ করেছে। ২০২৫ সালে এই কার্যক্রম আরও বেগবান হয়। এ সময়ে বিপুল পরিমাণ মাদক, চোরাচালান দ্রব্য এবং ১০টি অস্ত্রসহ ১১৩ জন আসামিকে আটক করা হয়, যার মোট মূল্য প্রায় ১০৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। যৌথ টাস্কফোর্স অভিযানে প্রায় ৪৯ কোটি টাকার অবৈধ দুয়ারি, বেহুন্দা ও চায়না কারেন্ট জাল উদ্ধার ও ধ্বংস করা হয়েছে। সর্বশেষ চল্লিশপাড়া এলাকায় প্রায় ১৪ কোটি টাকার অবৈধ চায়না জাল জব্দ করা হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিজানুর রহমান বলেন, সীমান্তবর্তী জনগণের কল্যাণে সুন্দরবন এলাকায় লবণাক্ততার কারণে সুপেয় পানির সংকট নিরসনে বিজিবির অর্থায়নে স্থাপিত প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে ১১টি গ্রামের ৪ থেকে ৫ হাজার পরিবার উপকৃত হচ্ছে। এ ছাড়া তিন সহস্রাধিক দুস্থ ও অসহায় পরিবারকে খাদ্য, চিকিৎসা ও শীতবস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ১৪ ক ট এল ক য় রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তর কোরিয়ার ‘সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক অস্ত্র’ উন্মোচন করলেন

উত্তর কোরিয়ার নেতা জং উন দেশটির সর্বাধুনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) উন্মোচন করেছেন। ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠিত এক সামরিক কুচকাওয়াজে এই অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়। 

শনিবার (১১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা। 

আরো পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে ‘বিশেষ অস্ত্র’ মোতায়েন করল উত্তর কোরিয়া

পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়তে না বললে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত কিম

প্রতিবেদনে বলা হয়, কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত অস্ত্রগুলোর মধ্যে ছিল হোয়াসং-১১এমএ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং হোয়াসং-২০ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলোকে উত্তর কোরিয়া দেশটির ‘সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক কৌশলগত অস্ত্র ব্যবস্থা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

পিয়ংইয়ংয়ে এই অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের মধ্যে ছিলেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান উপ-প্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ এবং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা তো লাম।

উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হোয়াসং-২০ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম। তবে ক্ষেপণাস্ত্রটির সক্ষমতা নিয়ে এখনো কোনো পরীক্ষা করা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের পরমাণু নীতি প্রোগ্রামের স্ট্যান্টন সিনিয়র ফেলো অঙ্কিত পান্ডার মতে, “হোয়াসং-২০ আপাতত, উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার পারমাণবিক সরবরাহ ক্ষমতার উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতীক। দেশটির এই বছর শেষের আগেই তাদের এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে পারে।”  আমাদের এই সিস্টেমটি পরীক্ষা করা হবে বলে আশা করা উচিত,” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের অঙ্কিত পান্ডা বলেছেন।

তিনি বলেন, “এই সিস্টেমটি সম্ভবত একাধিক ওয়ারহেড সরবরাহের জন্য তৈরি করা হয়েছে। একাধিক ওয়ারহেড বিদ্যমান মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর চাপ বৃদ্ধি করবে এবং ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে অর্থপূর্ণ প্রতিরোধমূলক প্রভাব অর্জনের জন্য কিম যা প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন তা বৃদ্ধি করবে।”

এছাড়া উত্তর কোরিয়া নতুন হোয়াসং-১১এমএ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটিকে এমন এক ওয়ারহেড দিয়ে সজ্জিত করেছে, যা ‘বুস্ট-গ্লাইড যান’ হিসেবে কাজ করে। এটি মূলত চ্যাপ্টা ও পাখনাযুক্ত একটি গ্লাইডার, যা লক্ষ্যবস্তুর দিকে যাওয়ার সময় অনিয়মিত পথ অনুসরণ করে, ফলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য সেটি শনাক্ত করা বা আটকানো অত্যন্ত কঠিন।

সামরিক কুচকাওয়াজে দেওয়া  ভাষণে কিম জং উন বলেন, উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীকে ‘একটি অজেয় সত্তায় পরিণত হতে হবে যা সকল হুমকি ধ্বংস করবে’।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুতিন যুদ্ধ না থামালে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন ট্রাম্প
  • রাইজিংবিডিতে প্রতিবেদনের পর ১৪ রেলস্টেশনে পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী দিয়েছে ঠিকাদার
  • শিল্পপতি বাবুলের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল সার্ভিস
  • উত্তর কোরিয়ার ‘সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক অস্ত্র’ উন্মোচন করলেন