দেশটাকে বাঁচান, এখন আর বিভাজন সৃষ্টি করবেন না : মির্জা ফখরুল
Published: 15th, October 2025 GMT
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দয়া করে দেশটাকে বাঁচান। এখন আর বিভাজন সৃষ্টি করবেন না। এখন বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে দেশটাকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দেবেন না। যারা বিভিন্ন দাবি তুলছে, তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয়। তারা নির্বাচনটাকে বন্ধ করতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ ভোট দিতে চায়। দয়া করে এসব আন্দোলন বাদ দিয়ে নির্বাচনটা শেষ করতে দিন।’
আজ বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির এক মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি বিএনপির মহাসচিব এ আহ্বান জানান। সদর উপজেলার গড়েয়া গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে গড়েয়া ইউনিয়ন বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচিত হলে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। প্রতিটি পরিবারকে একটি করে ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হবে। সেই কার্ডের মাধ্যমে তাঁরা বিভিন্ন সেবা পাবেন। স্বাস্থ্যসেবাকে উন্নত করব, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াব। কারিগরি শিক্ষার প্রতি জোর দেব। আমরা আগে সরকারে ছিলাম; সরকার কীভাবে চলে আমরা তা জানি। সরকারে থেকে কীভাবে ভালো কাজ করতে হয়, তা-ও জানি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য আমরা লড়াই-সংগ্রাম করেছি; যে জন্য আমাদের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণ যেটা চাইবে, সেটাই হবে। এই ব্যবস্থাটায় এবার কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে। এখন থেকে দুইটা পার্লামেন্ট থাকবে—একটা নিম্নকক্ষ, আরেকটা উচ্চকক্ষ। নিম্নকক্ষে যাঁরা যাবেন, তাঁরা আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হবেন। আর দলের যে প্রতিনিধি সংখ্যা থাকবে, সেই সংখ্যা অনুযায়ী তাঁরা উচ্চকক্ষে যাবেন। এরপরও বিভিন্ন সেক্টরের মানুষকে সেখানে মনোনয়ন দেওয়া হবে। এভাবে এমন একটি পার্লামেন্ট তৈরি করা হবে, যেখানে সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। কোনো দলের একক কর্তৃত্ব থাকবে না। ফ্যাসিজম থেকে আমরা মুক্তি পাব।’
আরও পড়ুনগণতন্ত্র উত্তরণের পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে: মির্জা ফখরুল২০ ঘণ্টা আগেমির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আমাদের সামনে নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে। এখন আমরা দেশটাকে সুন্দর করে সাজাতে চাই। আমাদের মধ্যে অনেক মত আছে, এই মতগুলোকে এক জায়গায় আনতে হবে। আর সেই জায়গাটা হলো পার্লামেন্ট। এখানে তর্ক হবে, বিতর্ক হবে, সেখান থেকে আমরা সিদ্ধান্ত পাব।’ তিনি বলেন, ‘হিংসার রাজনীতি আমরা আর চাই না। আমরা হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানের মধ্যে কোনো বিভেদ সৃষ্টি করতে চাই না। হিংসার রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিতে চাই না, চাই শান্তির রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে।’
নতুন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকে আমরা কখনো ভুলব না। কারণ, এই দেশের স্বাধীনতা আমাদের অস্তিত্ব। এটাকে ভুলে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। একইভাবে ৫ আগস্টকে আমরা ভুলব না। কারণ, সেই সময় আমাদের ছেলেরা বুকের রক্ত দিয়ে দেশ থেকে স্বৈরাচারকে তাড়িয়েছে। এই যে একসঙ্গে নিয়ে চলা, এটাই নতুন বাংলাদেশ।’ তিনি বলেন, ‘দেশকে আর ভাগাভাগি করবেন না। বহুত ক্ষতি হয়ে গেছে, আর ক্ষতি চাই না। সবাইকে নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চাই।’
আরও পড়ুনএ দেশের মানুষ পিআর বোঝে না, মেনেও নেবে না: মির্জা ফখরুল১২ অক্টোবর ২০২৫গড়েয়া ইউনিয়ন মতবিনিময় সভা শেষে উপজেলার শুখানপুকুরী ও বালিয়া ইউনিয়নে সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা করেন মির্জা ফখরুল। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, গড়েয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজওয়ান শাহ চৌধুরীসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ব ব যবস থ ব এনপ র দ শট ক আম দ র ফখর ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে মারা গেলেন ৪ জন
ডেঙ্গুতে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে আজ বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত) ৪ জন মারা গেছেন এডিস মশাবাহিত এই রোগে। এ সময় নতুন করে ৭৫৮ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু নিয়ে দেওয়া প্রাত্যহিক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় তিনজনেরই মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আর একজন মারা গেছেন বরিশাল বিভাগে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে এই তিনজনের মৃত্যু হয়। আর বরিশাল বিভাগের রোগী মারা গেছেন বরগুনার পাথরঘাটার হাসপাতালে।
চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট ৫৭ হাজার ১৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫৪ হাজার ১১৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৫ শতাংশই পুরুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের সংখ্যা।
এদিন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় সর্বোচ্চসংখ্যক ব্যক্তি ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর সংখ্যা ২০৬। ঢাকা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন গাজীপুর জেলায়, ৬৩ জন। ঢাকা বিভাগের বাইরে বরিশাল বিভাগে রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল, এ সংখ্যা ১৩৩।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে গত সেপ্টেম্বর মাসে। তবে চলতি অক্টোবর মাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যু ও সংক্রমণ আগের যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টিপাত ও অপর্যাপ্ত মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের কারণে সংক্রমণ পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে।