এক ছাতার নিচে ৪৮ ব্র্যান্ডের ফার্নিচার, ৫-১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়
Published: 15th, October 2025 GMT
ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এখন চলতি জাতীয় ফার্নিচার মেলা, যেখানে এক ছাদের নিচে রয়েছে ৪৮টি ব্র্যান্ডের ২৭৮টি স্টল। সাজিয়ে রাখা হয়েছে সোফা, ড্রয়িং ও ডাইনিং টেবিল, আলমারি, ওয়ার্ডরোব, চেয়ার–টেবিল, দোলনাসহ নানা ধরনের আসবাবপণ্য। এসব পণ্যে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
‘আমার দেশ, আমার আশা—দেশীয় ফার্নিচারে সাজাবো বাসা’ স্লোগানে আয়োজিত এ মেলা শুরু হয় গত মঙ্গলবার। বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি আয়োজিত এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত। মেলা শেষ হবে আগামী শনিবার।
আজ বুধবার মেলা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ব্র্যান্ডই তাদের প্রচলিত ডিজাইনের পাশাপাশি নতুন ডিজাইনের ফার্নিচারও নিয়ে এসেছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে তাদের বিশেষ ছাড় ও অফার রয়েছে। অংশগ্রহণকারী ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—আখতার, হাতিল, ব্রাদার্স, নাদিয়া, জেএমজি, নাভানা, অ্যাথেনাস, পারটেক্স, রিগ্যাল, লেগাসি ইত্যাদি। মেলায় ক্রেতা–দর্শনার্থীদের বেশ ভালো সমাগম দেখা গেছে। তাঁদের অনেকেই পছন্দের ফার্নিচার কিনছেন, কেউ কেউ আবার ফার্নিচার পছন্দ করার পাশাপাশি কোন ব্র্যান্ড কত ছাড় দিচ্ছে, সে খবর নিয়ে বাসায় ফেরেন।
বিক্রেতাদের আশা, আগামী শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় মেলায় ক্রেতা–দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় হবে। প্রথম দুদিনেও অনেক স্টলে ক্রেতারা ভিড় করেন। হাতিলের বিক্রয় কর্মকর্তা মো.
ব্রাদার্স ফার্নিচারও দিচ্ছে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ ছাড়। তাদের নতুন ডিজাইনের অস্টিন খাটের দাম সাড়ে ৫২ হাজার টাকা।
গাজীপুর থেকে স্ত্রী–সন্তানসহ আসা ফরিদ আক্তার বলেন, পছন্দ হলে পরে কিনবেন। উত্তরার দম্পতি বলেন, ‘একটা আলমারি পছন্দ হয়েছে, দাম ৪২ হাজার টাকা। ছাড়ে ৩৪ হাজারে নেমেছে। ৩২ হাজারে দিলে আমরা নেব।’
নাদিয়া ফার্নিচারের সিনিয়র সেলস অফিসার মেহেদী হাসান মনে করেন, আসন্ন বাণিজ্য মেলায়ও নতুন ডিজাইন দেখানোর ক্ষেত্রে এই মেলা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জানান, মেলা উপলক্ষে সারা দেশে তাঁদের শোরুমগুলোতেও ১০ শতাংশ ছাড় চলছে।
পারটেক্স ফার্নিচারের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ রোমান মোল্লা জানান, পণ্যভেদে তাঁরা কিছুটা ছাড় দিচ্ছেন। ওমেগা ফার্নিচারের ম্যানেজার (সেলস) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের ১ লাখ টাকার সোফা এখন ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।’
মেলায় নাভানা, হাতিম ও রিচ হোম ফার্নিচার ১৫ শতাংশ পর্যন্ত করে এবং রিগ্যাল, আখতার হাইটেক ও ডেল্টা ফার্নিচার ১০ শতাংশ করে ছাড় দিচ্ছে।
এ খাতের উপকরণ সরবরাহকারীরাও মেলায় আসছেন। তেমনই একজন মুন্সিগঞ্জের মো. আমানুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘নতুন ডিজাইন দেখতে এসেছি।’ একইভাবে থিনার ও প্রিন্টিং কালি সরবরাহকারী হাসনাইন মুতাকাব্বির বলেন, ‘ডিজাইনে অনেক আধুনিকতা এসেছে, পশ্চিমা ধাঁচের কাজ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনেছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
সিএমএসএমই ঋণ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা
ব্যাংকের কার্ড থেকে নগদ, বিকাশে টাকা পাঠানোর নতুন সুবিধা
তিনি জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণে রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে বাজার থেকেই ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। নিলামের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত। আর এই প্রাইসেই ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কেনার ফলে বাজারে তারল্য বাড়ছে, আর রিজার্ভে যোগ হচ্ছে নিলামে কেনা ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট দুই হাজার ১২৬ মিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে। এসব ডলার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯ দফায় ডলার কিনেছিল। এর মধ্যে গত ৬ অক্টোবর ৮টি ব্যাংক থেকে নিলামে ১৪০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে, ২ সেপ্টেম্বর একই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ ব্যাংক থেকে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে, ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে, একই দরে গত ১৫ জুলাই ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া গত ২৩ জুলাই ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। গত ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় এবং গত ১০ আগস্ট ১১টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। আর ডলারের দাম আরও কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বে অপরদিকে রেমিট্যান্স আয় বৈধ পথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।
গত ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই ডলারের দর নির্ধারণ করছে।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ