সার না পেলে কৃষকদের ডিসি অফিস ঘেরাওয়ের পরামর্শ মির্জা ফখরুলের
Published: 16th, October 2025 GMT
কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় সার না পেলে কৃষকদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় (ডিসি অফিস) ঘেরাও করার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন। সদর উপজেলার দানারহাট ঈদগাহ মাঠে এ সভার আয়োজন করে বেগুনবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘৩১ দফায় বলেছি, আমরা যদি সরকারে যেতে পারি; তবে ১৫ মাসের মধ্যে এক কোটি বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্যের ব্যবস্থা করব।’
সারসংকটের প্রসঙ্গ তুলে ধরে নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখন সারের সংকট চলছে। ডিসিক কইবা হবে (বলতে হবে) আপনার তো বাড়ি হচ্ছে কিশোরগঞ্জ। ওত্তি তো (ওদিক) পানি আর পানি। হামার এত্তি (এদিক) তো পানি বেশি নাই। আমাদের কৃষিকাজ করে খেতে হয়। পানি শ্যালো বা ডিপ টিউবওয়েল আর বরেন্দ্র থেকে নিতে হয়। সারটা আমরা ঠিকমতো চাই।’
একই সময়ে উপস্থিত জনগণকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘মুখ বন্ধ করে থাকলে কেউ কথা শুনবে না। যদি কথা না শুনে, সারের দাবিতে দরকার হলে ডিসি অফিস ঘেরাও করে দেবেন।’
২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া ভিশন টুয়েন্টি-থার্টি নামে একটি প্রস্তাব জনগণের সামনে তুলে ধরেছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওই প্রস্তাবনায় তিনি বলেছিলেন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট দরকার। সেই পার্লামেন্টের প্রতিনিধিরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসবেন, তাঁরাই দেশ চালাবেন। এতে ভারসাম্য থাকবে। ভারসাম্য থাকবে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে। বিচার বিভাগও একদম স্বাধীন থাকবে।
কয়েকটি রাজনৈতিক দল পিআর নিয়ে চিৎকার করছে মন্তব্য করে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা বোঝেন পিআরটা কী? এখন চলছে এক ব্যক্তির এক ভোট। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। আর পিআর হচ্ছে কোনো ব্যক্তিকে না, দলকে ভোট দেবে। সর্বনাশ! কাকে ভোট দিচ্ছি, আমি জানব না? দলকে ভোট দিলে তো ওটা কী হবে, তাও ঠিকমতো বলতে পারব না। তবে সেই ব্যবস্থায় আমরা যাব কেন? সবাই যদি একমত হয়, তবে চিন্তা করে দেখবে। সে কারণে আমরা বলছি, আগে নির্বাচনটা হোক। পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত হবে। জনগণ ভোট দিয়ে ঠিক করবে পিআর হবে কি হবে না।’
দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই মিলে নির্বাচনটা করি। পরে আমরা সবাই মিলে তর্ক-বিতর্ক করব, তবে মারামারি আর করতে চাই না রে, ভাই।’
এমপিওভুক্ত বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শিক্ষকেরা নানা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। আমরা বলছি বিএনপি সরকার গঠন করলে শুধু শিক্ষক নয়, গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করা হবে।’
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, বেগুনবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এসএস আবুল কাসেমসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫ দফা দাবিতে শহরে ইসলামী আন্দোলনের মানববন্ধন
দেশের রাজনৈতিক ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর উদ্যোগে বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহানগর সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। তাই কোন পক্ষের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য নয়, জনগণের স্বার্থেই মানুষের দাবি মেনে পছন্দমতো পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
মানববন্ধনে তিনি আরও বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের বিভিন্ন ইউনিট এখন পর্যন্ত প্রায় অকার্যকর। এমতাবস্থায় বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই, পেশি শক্তি ও কালো টাকার ব্যবহার ঠেকানো যাবে না। কাজেই অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি, পিআর পদ্ধতিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করুন। পিআর পদ্ধতি ছাড়া কোনোভাবেই নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না।
দাবিসমূহ হলো- আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন ও ওই আদেশের ওপর গণভোট; আগামী নির্বাচনে উভয় কক্ষে (দুই কক্ষে) পিআর পদ্ধতি প্রবর্তন; সকলের জন্য লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন; গতকালকের জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচারের দৃশ্যমানতা নিশ্চিতকরণ; স্বৈরাচারের সহযোগী হিসেবে উদ্ভূত জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম বন্ধের দাবি (প্রস্তাবিত)।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি সুলতান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে নগর সহ-সভাপতি মাওলানা হাসান ইমাম মুন্সী, জয়েন্ট সেক্রেটারি ডা. সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শামসুল আলম, প্রচার-দাওয়াহ সম্পাদক বিলাল খানসহ অন্যান্য জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।