কুড়িগ্রামের রৌমারীর বকবান্ধা ও ব্যাপারীপাড়া এলাকায় জিঞ্জিরাম নদের তীরের মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ভাঙনের প্রতিকূলতায় দীর্ঘদিন ধরে জীবন যাপন করে আসছেন। অতিবৃষ্টিতে ঢল ধরলে ঘরবাড়ি, জমিজমা, এমনকি অনেকের শেষ সম্বলটুকুও হারিয়ে যায়। কিন্তু এই ভাঙনের বিপদ ঠেকানো নিয়ে প্রশাসনের দায় বা দায়িত্ব দুটোই যেন হারিয়ে গেছে নীরবতায়।
প্রথম আলোর খবরে এসেছে, প্রশাসনের আশায় বসে না থেকে স্থানীয় লোকজনই উদ্যোগ নিয়ে নদের তীরে অস্থায়ী বাঁশের বান্ডাল এবং জিও ব্যাগ স্থাপন করেছেন নদীভাঙন মোকাবিলা করতে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশের ‘ট্রোসা-২’ প্রকল্পের সহায়তায় এবং স্থানীয় লোকজনের স্বেচ্ছাশ্রমে ৬০০ মিটার এলাকায় ২৭টি বাঁশের বান্ডাল নির্মাণ করা হয়। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগও যোগ হয় এই উদ্যোগে। এতে অন্তত ৪০০ পরিবার ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় লোকজন নিজ অর্থায়ন ও শ্রম দিয়ে এই কাজ সম্পন্ন করেছেন; যাঁদের বেশির ভাগই নানাভাবে নদীভাঙনের ভুক্তভোগী।
এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, প্রশাসন কেন দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করতে পারেনি? যে সংস্থাগুলো স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে পারত, তারা কেন স্থানীয় মানুষের ওপর এই দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে? এটি স্পষ্ট করে যে স্থানীয় প্রশাসন ক্রমেই উদাসীন হয়ে পড়েছে। উপায় না পেয়ে জনগণই যেই কাজ করছে, যা প্রশাসনের করার কথা। তবে স্থানীয় লোকজনের এই উদ্যোগ আপাতত কাজ চালানোর মতো হলেও দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়।
বাঁশ ও জিও ব্যাগের সমন্বয় সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে। কিন্তু স্থায়ী বাঁধ না হলে নদীভাঙনের আতঙ্ক ফেরার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত, জনগণের স্বেচ্ছাশ্রম ও স্থানীয় এ উদ্যোগকে সহায়তা করে স্থায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। না হলে কেবল অস্থায়ী সুরক্ষা নয়, বরং জনসাধারণের দুর্দশা ও ঝুঁকি বারবার পুনরাবৃত্তি হবে।
বকবান্ধা ও ব্যাপারীপাড়ার জনগণকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তাঁরা দেখিয়ে দিয়েছেন, প্রকৃত প্রয়াস থাকলে ঐক্যবদ্ধভাবে যেকোনো সমস্যার সমাধান কেবলই সময়ের ব্যাপার। স্থানীয় জনগণকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি আমরা আশা করি, স্থানীয় প্রশাসন দ্রুতই ওই এলাকায় নদীভাঙন মোকাবিলায় কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেবে। নিজেদের সমস্যা মোকাবিলায় যেই দায়িত্বশীলতা স্থানীয় জনগণ দেখিয়েছেন, তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে প্রশাসনও টেকসই সমাধানের দিকে এগিয়ে যাবে।
জনগণ দায়িত্বশীল হলেও প্রশাসন যদি উদাসীন থেকে যায়, তাহলে প্রকৃত সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায় না। তাই প্রশাসনকে জনগণের এই সংকটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে টেকসই সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স থ ন য় ল কজন উদ য গ
এছাড়াও পড়ুন:
‘নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ আগুন সন্ত্রাসে মেতে উঠেছে’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ আগুন সন্ত্রাসে মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু।
তিনি বলেন, ‘‘কড়াইল বস্তিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে লাগা আগুনের পেছনে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা জরুরি। জনগণ বিশ্বাস করে, এগুলোর সঙ্গে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।’’
বুধবার (২৬ নভেম্বর) মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ছনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মীর সরফত আলী সপু বলেন, ‘‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, দেশের মানুষ এখন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। কোনো ধরনের সন্ত্রাস বা শৃঙ্খলাভঙ্গ করে নির্বাচন ব্যাহত করা যাবে না। জনগণ এবার ভোটের মাধ্যমে তাদের জবাব দেবে।’’
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য মোমিন আলী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস ধীরন।
ঢাকা/রতন/রাজীব