২০২৪ সালে বাংলাদেশকে নিয়ে ৭২টি ভারতীয় গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্যাক্টচেকিং প্ল্যাটফর্ম রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ। প্রতি আড়াই দিনে বাংলাদেশকে নিয়ে একটি ভুল তথ্য প্রচার করেছে ভারতীয়রা। বেশি ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আগস্ট ও ডিসেম্বর মাসে। শনিবার সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। 

এতে বলা হয়েছে, গত বছর ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে বাংলাদেশ নিয়ে অন্তত ১৪৮টি ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়। অর্থাৎ প্রতি আড়াই দিনে ভারতীয়রা বাংলাদেশকে নিয়ে একটি ভুল তথ্য প্রচার করেছে। এর মধ্যে ভারতীয় ৭২টি গণমাধ্যম ৩২টি বিষয়ে মোট ১৩৭টি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেগুলোয় বাংলাদেশকে নিয়ে ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ভয়াবহতা এক্সে, চিন্তা ফেসবুক নিয়েও 
বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতীয়দের অপতথ্য প্রচারে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হওয়া প্ল্যাটফর্ম মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স (সাবেক টুইটার)। গেল বছর ১৪৮টি অপতথ্যের মধ্যে ১১৫টিই এক্সের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে প্রচার করা হয়েছে। এক্স ছাড়াও বাংলাদেশকে নিয়ে গত বছর ফেসবুকে ভারতীয় বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে অর্ধশতাধিক অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। অপতথ্য প্রচারের তালিকায় আছে ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামের নাম। এমনকি ভারতীয় গণমাধ্যমও অন্তত ৩২টি ঘটনায় অপতথ্য প্রচার করেছে। বাংলাদেশকে নিয়ে ছড়ানো অপতথ্যগুলো দেখানো হয়েছে অন্তত ২৫ কোটি বার। গত বছর ভারতীয়দের ছড়ানো যে ১৪৮টি অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার, তার মধ্যে ১১৫টিই সাম্প্রদায়িক অপতথ্য। 

৭২ গণমাধ্যমে অপতথ্য
রিউমর স্ক্যানার ২০২৪ সালে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভুল তথ্য নিয়ে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেকগুলো বিশ্লেষণ করে ৩২টি ঘটনায় ৭২টি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছে। এসব সংবাদমাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০টি থেকে সর্বনিম্ন একটি ভুল তথ্য-সংবলিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া গেছে। ৭২টি সংবাদমাধ্যমে থাকা ১৩৭টি প্রতিবেদন যাচাই করে ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। 

পরিসংখ্যানে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য প্রচারে প্রথম স্থানে রয়েছে ভারতের বাংলা ভাষার স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ‘রিপাবলিক বাংলা’। ৩২টি ঘটনার মধ্যে ১০টিতেই এই চ্যানেল ভুল তথ্য প্রচার করেছে। এ তালিকায় পরের তিন অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে হিন্দুস্তান টাইমস, জি ২৪ ঘণ্টা ও আজতক। পঞ্চম অবস্থানে যৌথভাবে রয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, মিন্ট, ইন্ডিয়া টুডে, টিভি নাইন, ওয়ার্ল্ড উজ ওয়ান নিউজ (ডব্লিউআইওএন) ও এই সময়। ভারতের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তিও বাংলাদেশকে নিয়ে অপতথ্যের প্রবাহের প্রসারে ভূমিকা রেখেছেন। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল: স্ত্রীর দাবি
  • রূপালী লাইফের আর্থিক হিসাবে ৬৯ কোটি টাকার গরমিল
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিটে ভর্তি: মাইগ্রেশন, বিষয় ও প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ প্রকাশ
  • হেলথ টেকনোলজি কোর্সে ভর্তি, অপেক্ষমাণ থেকে তৃতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
  • তাপমাত্রা বেড়ে দেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা, কীভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিল ঢাকা ইন্স্যুরেন্স
  • সোনালী ও রূপালী মুনাফায়, অগ্রণী ও জনতা লোকসানে