বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম চারদিনের সরকারি সফরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আসছেন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.

এএম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় লিখিত বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম।

সংবাদ সম্মেলনে উপ-উপাচার্য জানান, সফর উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সফরের প্রথম দিনে ড. আমিনুল ইসলাম বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা), জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (সমন্বয়ক) সঙ্গেও মতবিনিময় করার কথা রয়েছে।

তিনি জানান, দ্বিতীয় দিনে শাবিপ্রবি পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এরপর শিক্ষার্থীদের জন্য ১ হাজার আসন বিশিষ্ট দুটি আবাসিক হলের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন তিনি। একই দিনে শিক্ষকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সফরের তৃতীয় দিনে তিনি সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেবেন। এছাড়া তিনি ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও দপ্তর প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। সফরের শেষ দিনে তিনি মিনি অডিটোরিয়ামে গবেষণা ও উদ্ভাবন বিষয়ক ১২তম বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নেবেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি কমানো হয়েছে, পাশাপাশি ১ হাজার আসন বিশিষ্ট দুটি আবাসিক হল নির্মাণের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের কাজও শুরু হবে।” শাবিপ্রবিকে গবেষণা-ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রাজিক মিয়া, স্টেট পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাসনাত, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মোহাম্মদ আব্দুল কাদির, ডেপুটি রেজিস্ট্রার এএফএম ড. সালাউদ্দিন, এএফএম মিফতাউল হক, মো. কালাম আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।

অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি ২০০৬ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শাবিপ্রবির উপাচার্য ছিলেন। এছাড়া ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ