বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে ঢাকার মহাখালীর রাস্তায় অনশনে বসা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের অবরোধ ২৮ ঘণ্টা গড়িয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে কথা বলে তাদের অনশন ভাঙাতে আসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

সেখানে আসা যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ নুরুজ্জামানসহ অন্যরা এখনো অবস্থান করছেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্তও শিক্ষার্থীদের অনশনে দেখা গেছে। অনশনের পাশাপাশি তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি করতে দেখা গেছে।

আন্দোলনরত এসব শিক্ষার্থীদের কাছে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ নুরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের তাদের দাবিগুলো জানতে চান। দাবি শোনার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আন্দোলনটি, সেটা যৌক্তিক ও নায্য উল্লেখ করে সেগুলো রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে তুলে ধরার আশ্বাস প্রদান করেন।

এ সময় আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীরা জানান, রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা তাদের সঙ্গে গত ২ মাসে অনেক দ্বিচারিতা করেছেন। তারা এখন কোন ধরনের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করতে রাজি নন।

তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের প্লাটফর্ম তিতুমীর ঐক্যের উপদেষ্টারা বলেন, আমাদের এ দাবি দীর্ঘ বছরের। আজ সেই দাবির মর্যাদা দিয়ে তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিতে হবে।

তারা বলেন, প্রয়োজনে রাষ্ট্রের যে পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন, আমাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করে আজকের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দিতে হবে। অন্যথায় এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এখনো আলোচনা করছেন। তবে কি ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে তা জানা যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে গত ১৮ নভেম্বর মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার ও রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ‘ক্লোজডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ৩ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে এর আগে নানা কর্মসূচি পালনের পর গত ৭ জানুয়ারি কলেজের প্রধান ফটকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। 

গত সোমবার মধ্যরাতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। তা না হলে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা। এরপর বুধবার রাত থেকে অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে তিনজন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ঢাকা/হাফছা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ

সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।

তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।

আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।

অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।

অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।

আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।

আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ‍্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’

আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগে

যতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।

এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।

তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দাবি মেনে নেওয়ায় অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা
  • জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
  • ৩ দাবিই পূরণ চান অনশনরত জবি শিক্ষার্থীরা
  • টানা ৩০ ঘণ্টা অনশনে তিন জবি শিক্ষার্থী অসুস্থ
  • তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
  • সাতরাস্তা মোড়ে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার কারিগরি শিক্ষার্থীদের, তবে অবস্থান চলবে
  • তিন দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
  • ডিসেম্বর মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আশ্বাস জবি উপাচার্যের
  • জকসুর রোডম্যাপসহ ৩ দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
  • সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী