বিশ্ব ইজতেমায় নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই: জিএমপি কমিশনার
Published: 31st, January 2025 GMT
ইজতেমা নিয়ে আমেরিকান দূতাবাসের সতর্কতা জারি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেছেন, আমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই। বিদেশিদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। আমার মনে হয় না তাদের কোনো নিরাপত্তার ঘাটতি আছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইজতেমায় ডিএমপির কন্ট্রোল রুমে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব বলেন কমিশনার।
জিএমপি কমিশনার বলেন, “ইজতেমার পরিবেশ নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। অনেক গুজব ছড়াবে, এটির বিষয়ে আমাদের সবার সজাগ থাকতে হবে।”
এ সময় তিনি বলেন, “এখানে প্রচুর ভিক্ষুক লক্ষ করা যাচ্ছে, আমার মনে হয় এটা কোনো চক্রের মাধ্যমে ব্যবসায়ীক ভাবে বসানো হয়েছে। মানবিক কারণে উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। তাদের অন্য কোনো স্থানে নিয়ে বসিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এ জন্য ইজতেমায় দায়িত্বশীল মুসল্লিদের নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
জিএমপি কমিশনার আরো বলেন, “অনেক হকার বসেছে, তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এবার অনেক শান্তিপূর্ণ ভাবে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইজতেমা মাঠের আশপাশে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।”
ইজতেমা আয়োজকরা জানান, এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে দুই ধাপে। এর মধ্যে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হবে প্রথম ধাপের প্রথম পর্ব। প্রথম ধাপে অংশ গ্রহণ করবেন ৪১ জেলা ও ঢাকার একাংশের মুসল্লিরা। এরপর আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা।
এ ধাপে অংশ নেবেন ২২ জেলা ও ঢাকার বাকী অংশের মুসল্লিরা। দুই ধাপের আখেরি মোনাজাত হবে যথাক্রমে আগামী প্রথম পর্বের মোনাজাত ২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের মোনাজাত ৫ ফেব্রুয়ারি।
৮ দিন বিরতি দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় ধাপের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবেন সাদ অনুসারীরা। ১৬ ফেব্রুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা। পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি বাদ মাগরিব প্রশাসনের নিকট ময়দান বুঝিয়ে দিবেন সাদ অনুসারীরা।
এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপে প্রথম পর্বে অংশ নিতে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার থেকেই ময়দানে আসছেন বিশ্ব ইজতেমার আগত মুসল্লিরা। ইজতেমা মাঠের প্রায় প্রতিটি প্রবেশ পথেই মুসল্লিদের ঢল।
ঢাকা/রেজাউল/ইমন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ব ইজত ম র র ব শ ব ইজত ম প রথম পর ব জ এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।