পুলিশের অনুমতি ছাড়া গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের দুই কিলোমিটার এলাকায় ড্রোন ও ড্রোন ক্যামেরা উড়ানো বা ব্যবহার করা যাবে না। এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান স্বাক্ষরিত  গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন ইজতেমা ময়দানে বিশ্ব ইজতেমা ২০২৫ চলমান রয়েছে। বিশ্ব ইজতেমা দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লির সমাগম হয়। মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশ এলাকার ২ (দুই) কিলোমিটারের মধ্যে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ শাখা (সিটিএসবি) এর অনুমতি ছাড়া ২ ফেব্রুয়ারি হতে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ড্রোন ও ড্রোন ক্যামেরা অথবা ভিডিওসহ অন্য কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইস উড়ানো বা ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করা হলো।” 

আরো পড়ুন:

বিশ্ব ইজতেমায় ৬৩ যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত 

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত সোয়া ৯টার মধ্যে 

বিজ্ঞপ্তি আরো বলা হয়, “এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি সংস্থা কর্তৃক বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে ড্রোন ব্যবহারের সংখ্যা ও ড্রোন উড্ডয়নের সময় সম্পর্কে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিএসবিকে পূর্বে অবগত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।”

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত চলাকালে ইজতেমা ময়দানের ২ নম্বর গেটের সামনে বিকট শব্দ হয়। এতে মুসল্লিরা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। এঘটনায় অর্ধশতাধিক মুসল্লি টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এলাকাবাসী জানান, যে বিকট শব্দ পাওয়া যায়, সেটি ছিল একটি ড্রোনের আছড়ে পড়ার শব্দ।

টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অসংখ্য মুসল্লি আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।ইজতেমার মোনাজাত চলাকালে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করার সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন।”

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ব ইজত ম আহত ব শ ব ইজত ম ময়দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ