‘২৩৫ সিসি ক্যামেরা ও বাইনোকোলার দিয়ে মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে’
Published: 3rd, February 2025 GMT
২৩৫টি সিসি ক্যামেরা ও বাইনোকোলার দিয়ে মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ড. নাজমুল করীম খান। তিনি বলেন, গতকাল মোনাজাতের সময় পাবলিকের ড্রোনের ধাক্কায় বেলুন ফেটে শব্দ হয়ে ইজতেমা মাঠে আতঙ্ক তৈরি হয়। তাই, আজ ড্রোন ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ইজতেমা ময়দানের দুই কিলোমিটারের মধ্যে অনুমতি ছাড়া কেউ ড্রোন উড়াতে পারবে না।
আজ সোমবার সকাল ১১টায় বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে বিদেশি খিত্তার পাশে স্থাপিত জিএমপির নিয়ন্ত্রণ কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিং করে জিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন। টঙ্গীর তুরাগ তীরে সুরায়ে নেজামের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপের প্রথম পর্ব আজ শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
জিএমপি কমিশনার বলেন, প্রথম ধাপে মোনাজাত চলাকালে পাবলিকের ড্রোনের ধাক্কায় বেলুন ফেটে শব্দ হয়েছে আতঙ্ক তৈরি হয়, ব্যপারটি নিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। ফল এবার ড্রোন ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বাইনোকুলার দিয়েও মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রথম ধাপের ইজতেমা সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আজ থেকে দ্বিতীয় ধাপ শুরু হল। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি আগের মতই আছে।
প্রথম ধাপে সহযোগিতা করার জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি দ্বিতীয় ধাপেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। এ সময় পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে জিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারসহ উপকমিশনাররা এবং সংশ্লিষ্ট থানার ওসি ও আয়োজক কমিটির পক্ষে শুরায়ে নেজামের মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল রোববার আখেরী মোনাজাতের সময় ড্রোন আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে শতাধিক মুসল্লি আহত হন। এই ঘটনার পর সেখানে আতঙ্ক তৈরি হয়। তবে ঘটনার ২৬ ঘণ্টা পার হলেও পুলিশ ড্রোন উদ্ধার করে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
শুরায়ে নেজামের অধীনে গতকাল সকাল ৯টা ১১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত ২৪ মিনিটের আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ। আজ সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে। ৮ দিন বিরতি দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্ব বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবেন সাদ অনুসারীরা। ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রথম ধ প আতঙ ক ইজত ম জ এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।