৪০ খিত্তায় ২২ জেলার মুসল্লিদের সময় কাটছে ধর্মীয় বয়ান শুনে
Published: 4th, February 2025 GMT
শুরায়ি নেজামের দ্বিতীয় ধাপের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি)। নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিয়ে গভীর মনোযোগে ধর্মীয় বয়ান শুনছেন মুসল্লিরা। আগামীকাল সকালে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই পর্ব।
মোনাজাতে অংশগ্রহণকারী ও ইজতেমা শেষে বাড়ি ফেরা মুসল্লিদের যাতায়াত সুবিধার জন্য ১১টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে রেলওয়ে বিভাগ। এছাড়াও আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ভোর থেকে মোনাজাত শেষ না পর্যন্ত টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের আশেপাশের মহাসড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
আজ মঙ্গলবার বাদ ফজর বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা উবায়দুল্লাহ খুরশিদ। সকালে তালিমের মোজাকারা (আলোচনা) করেন ভারতের মাওলানা জামাল সাহেব। পরে খিত্তায় খিত্তায় তালিম করা হয়। এছাড়াও সকাল পৌনে ১০টায় বয়ান মিম্বারের সামনে ওলামায়ে কেরামের সাথে কথা বলবেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা সাহেব। এরপর নামাজের মিম্বারের সামনে মাদ্রাসার ত্বলাবাদের সাথে কথা বলবেন পাকিস্তানের মাওলানা ফরীদ সাহেব।
৪০টি খিত্তায় অবস্থান নিয়ে তাবলীগ বিষয়ে মুরুব্বিদের দিকনির্দেশনা শুনছেন ২২ জেলার লাখো মুসুল্লি। ইজতেমার মাধ্যমে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব গড়ে উঠায় ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন দেশি-বিদেশি মুসুল্লিরা।
এদিকে আগামীকাল আখেরি মোনাজাতে মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধায় ১১টি বিশেষ ট্রেন ও বাড়তি বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বনলতা, কক্সবাজার এক্সপ্রেস, সুবর্ণলতা, পর্যটক এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা এই পাঁচটি বিশেষ ট্রেন ব্যতীত টঙ্গি স্টেশনে সকল ট্রেনের যাত্রাবিরতি রাখা হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, “আগামীকালের আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কাল ভোর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস থেকে আব্দুল্লাহপুর এবং ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাইল থেকে আব্দুল্লাপুর পর্যন্ত মহাসড়কে আখেরি মোনাজাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে।”
তিনি আরো বলেন, “গতকাল মোনাজাতের সময় একটি সাধারণ ড্রোনের ধাক্কায় বেলুন ফুটে আতঙ্ক তৈরি হয়। তাই ড্রোন ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ইজতেমা ময়দানের দুই কিলোমিটারের মধ্যে অনুমতি ছাড়া কেউ ড্রোন উড়াতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/রেজাউল/ইমন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।
সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।
এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।
জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।
আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।
এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।