নবীগঞ্জে বালু উত্তোলন ঘিরে সংঘর্ষ, মামলার এজাহার নিয়ে বিভ্রান্তি
Published: 4th, February 2025 GMT
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা হয়েছে এবং পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মামলায় সংঘর্ষের মূল ঘটনাস্থল পরিবর্তন করে মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর দেখানো হয়েছে, যা এলাকায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
সংঘর্ষে আহত যুবলীগ নেতা এমরান আলী বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি আহমদ মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
তবে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনাটি মৌলভীবাজার জেলার শেরপুর নতুনবস্তি মসজিদের পাশে ঘটেছে। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, মূলত সংঘর্ষ হয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর ও বনগাঁও গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায়। ঘটনায় আসামি পক্ষের লোকজন মামলার স্থান পরিবর্তন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতা কয়ছর আহমদ বলেন, এক জেলায় সংঘটিত ঘটনা অন্য জেলায় দেখানোয় আমরা মর্মাহত। এটি সাজানো মামলা। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
মামলার আসামি হেলাল আহমদ বলেন, আমরা শেরপুরে কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। বাদী পক্ষের মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আমাদের হয়রানি করছে। আমরা সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে মামলার বাদী এমরান আলী দাবি করেছেন, তাকে প্রথমে নবীগঞ্জ থানার বনগাঁও ও পাহাড়পুর এলাকায় মারধর করা হয় এবং পরে শেরপুর এলাকায় আবারও হামলা হয়। তাই তিনি শেরপুরের ঘটনায় মামলা করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিপু কুমার দাশ বলেন, বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিবর্তন করা হয়ে থাকলে তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, বালু মহাল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সতর্ক রয়েছে। কেউ উত্তেজনার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ঘর ষ র এল ক য় ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে। সেই খসড়ায় বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেটা পেয়েছি, এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা, বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু খসড়ার কিছু বাক্য, শব্দ ও গঠনপ্রণালি নিয়ে কারও কোনো মতামত আছে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটি দিয়েছে কমিশন। আমাদের যে সংশোধনী থাকবে, আমরা তা কাল জমা দেব।’
খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধানে যত বেশি যুক্ত করা হবে, সংশোধন তত বেশি জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হবে।’
নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’
সংস্কার কমিশনের ৭০০–এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।’