ক্যাচের পর সেঞ্চুরিতেও সর্বকালের শীর্ষ পাঁচে উঠে এলেন স্টিভ স্মিথ। গতকাল শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে প্রবাত জয়াসুরিয়ার ক্যাচটি ছিল টেস্ট ক্যারিয়ারে স্মিথের ১৯৭তম। রিকি পন্টিংকে ছাড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড গড়া স্মিথ উঠে এসেছেন সর্বকালের শীর্ষ পাঁচে।

সেই স্মিথ আজ গলে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে টেস্ট সেঞ্চুরিতে সর্বকালের শীর্ষ পাঁচে উঠে এসেছেন। আগের টেস্টে ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার পথে ৩৫তম সেঞ্চুরি পাওয়া স্মিথ পরের ইনিংসেই পেয়ে গেলেন ৩৬তম সেঞ্চুরি, যা তাঁকে টেস্ট সেঞ্চুরিতে রাহুল দ্রাবিড় ও জো রুটের পাশে বসিয়েছে।

দ্রাবিড়, রুট ও স্মিথের চেয়ে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরি আছে ভারতের শচীন টেন্ডুলকার (৫১), দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস (৪৫), অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং (৪১) ও শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারার (৩৮)।

স্মিথের সেঞ্চুরিতে শীর্ষ পাঁচে ওঠার দিনে সেঞ্চুরি পেয়েছেন তাঁর সতীর্থ অ্যালেক্স ক্যারিও। অস্ট্রেলিয়া ৯১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর স্মিথ ও ক্যারি ২৩৯ রানের জুটি গড়ে পাড়ি দিয়েছেন দিনের বাকি সময়টা। উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান ক্যারি পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১৩৯ রানের ইনিংসটি ৩৯ টেস্টের ক্যারিয়ারে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংসও। ২০২২ সালে মেলবোর্নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম ইনিংসে করা ১১১ ছিল তাঁর প্রথম। স্মিথ দিন শেষে অপরাজিত ১২০ রানে।

স্মিথ-ক্যারিতে দ্বিতীয় দিনটিকে নিজেদের করে নেওয়া অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে এগিয়ে গেছে ৭৩ রানে। এর আগে ৯ উইকেটে ২২৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস থামে ২৫৭ রানে। ৫৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা কুশল মেন্ডিস শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৮৫ রানে।

আরও পড়ুনআতিফ আসলামের কণ্ঠে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির থিম সং, কেমন হলো৫৩ মিনিট আগে

দিনের প্রথম ঘণ্টাতেই ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়া উদ্বোধনী জুটিতে তোলে ৩২ রান। এই রানের ২১-ই ছিল নিশান পেইরিসের প্রথম শিকার ট্রাভিস হেডের। তিনে নামা মারনাস লাবুশেন ফেরেন পরের ওভারেই প্রবাত জয়াসুরিয়ার বলে এলবিডব্লু হয়ে।
স্মিথ নামেন এরপরই। উসমান খাজার সঙ্গে স্মিথের তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৫৪ রান। আগের ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়া খাজা আজ পেইরিসের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে করতে পারেন ৩৬ রান।

টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৬তম সেঞ্চুরির পর স্টিভ স্মিথ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প রথম উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ভবিষ্যতের চাকরিজগৎ ‘রিমোট’ বা ‘হাইব্রিড’ নয়—আসছে ‘মাইক্রোশিফটিং’ যুগ

সকালের নাশতার সময়ই ল্যাপটপ খুলে অফিসের ই-মেইল চেক করা, দুপুরে সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়া, বিকেলে কাজের ফাঁকে একটু ঘোরাঘুরি আর রাতে আবার বসে রিপোর্ট লেখা। এই ছন্দে কাজের নতুন ধরন ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাইক্রোশিফটিং’।

রিমোট বা হাইব্রিড কাজের পরবর্তী ধাপ হিসেবে পরিচিত কর্মপদ্ধতিতে কর্মীরা দিনে একটানা আট ঘণ্টা নয় বরং কয়েক দফায় নিজেদের সুবিধামতো কাজের সময় ভাগ করে নেন। কেউ সকালে দুই ঘণ্টা, কেউ বিকেলে তিন ঘণ্টা, আবার কেউ রাতে কয়েক ঘণ্টা কাজ করেন। এই সময়ের স্বাধীনতাই মাইক্রোশিফটিংয়ের মূল বৈশিষ্ট্য।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওল ল্যাবসের ২০২৫ সালের হাইব্রিড ওয়ার্ক অবস্থা প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বজুড়ে ৬৫ শতাংশ অফিসকর্মী এখন সময়সূচিতে আরও স্বাধীনতা চান। ডেপুটির ‘দ্য বিগ শিফট: যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫’ জরিপে দেখা গেছে, মাইক্রোশিফটিং জ্ঞানভিত্তিক কাজে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, বিশেষ করে জেনারেশন জেডের কর্মীরা স্বল্প সময়ের কাজের শিফট বেছে নিয়ে শিক্ষা ও প্রযুক্তিনির্ভর একাধিক দায়িত্বের ভারসাম্য বজায় রাখছেন।

বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রেও নতুন ছন্দ

বাংলাদেশের কর্মজগতেও মাইক্রোশিফটিংয়ের ছাপ পড়ছে। তরুণ ফ্রিল্যান্সার, আইটি পেশাজীবী, অনলাইন শিক্ষক, ডিজাইনার ও সাংবাদিকেরা দিনের মধ্যে নিজেদের সুবিধামতো কাজের সময় ভাগ করছেন। কেউ রাতজাগা, কেউ ভোরবেলা বেশি মনোযোগী; প্রতিজনের জীবনযাপন ও কাজের ধরন ভিন্ন।

ঢাকার মিরপুরে বসবাসকারী রিমা হক, দুই সন্তানের মা ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটার বলেন, ‘সারা দিন একটানা কাজ করার সময় পাই না। সকালে দুঘণ্টা লিখি, দুপুরে সন্তানদের দেখাশোনা করি, রাতে আবার বসে কাজ করি। এতে কাজও হয়, সংসারও চলে।’ তাঁর মতে মাইক্রোশিফটিংয়ের মূল দর্শন হলো, কাজের মান সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর এখানেই ৯টা থেকে ৫টা অফিসের ধারা প্রশ্নের মুখে পড়ছে।

বিশ্বজুড়ে অফিস সময়ের সীমানা বদলাচ্ছে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মও সেই পরিবর্তনের স্রোতে এগোচ্ছে। অভিজ্ঞ পেশাজীবীরা মনে করছেন, কাজের ধরন পাল্টে যাচ্ছে, কিন্তু কাজ থেমে নেই; শুধু ঘড়িটা বদলে গেছে।

সময়ের হিসাব পাল্টে যাচ্ছে

৯টা থেকে ৫টা অফিসের সময়সূচি শিল্পবিপ্লবের উত্তরাধিকার। কারখানায় শ্রমঘণ্টা মাপার জন্যই এই মডেল তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখনকার কাজ হচ্ছে মস্তিষ্ক ও সৃজনশীলতার, যেখানে উৎপাদন মাপা হয় আইডিয়া দিয়ে, সময়ের কাঁটায় নয়। তবু অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো কর্মীদের অফিসে ফেরাতে চাইছে।

ওল ল্যাবসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ৬৩ শতাংশ কর্মী পূর্ণকালীন অফিসে ফিরেছেন। কিন্তু একাধিক কর্মী জানাচ্ছেন যে অফিসে উপস্থিত থাকলেই উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত হয় না। বাংলাদেশেও কোভিড-১৯-এর সময় রিমোট কাজের অভিজ্ঞতা অনেককে নতুনভাবে ভাবতে শিখিয়েছে। এখন অনেক সংস্থা হাইব্রিড ব্যবস্থায় কাজ করলেও সময়ের স্বাধীনতা এখনো সীমিত। গুলশানের এক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আফরোজা খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কাজ ডেটা বিশ্লেষণ করা। অফিসে আট ঘণ্টা থাকলেও সব সময় কাজ হয় না। বরং নিজের মতো করে সময় ভাগ করলে ফলাফল ভালো হয়।’

আরও পড়ুনএই ‘ভুলে ভরা’ বিসিএস প্রশ্নপত্র কারা তৈরি করল১৪ অক্টোবর ২০২৫বাংলাদেশের কর্মজগতেও মাইক্রোশিফটিংয়ের ছাপ পড়ছে। তরুণ ফ্রিল্যান্সার, আইটি পেশাজীবী, অনলাইন শিক্ষক, ডিজাইনার ও সাংবাদিকেরা দিনের মধ্যে নিজেদের সুবিধামতো কাজের সময় ভাগ করছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ