গলে অস্ট্রেলিয়ার দিন, সেঞ্চুরিতে সর্বকালের শীর্ষ পাঁচে স্মিথ
Published: 7th, February 2025 GMT
ক্যাচের পর সেঞ্চুরিতেও সর্বকালের শীর্ষ পাঁচে উঠে এলেন স্টিভ স্মিথ। গতকাল শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে প্রবাত জয়াসুরিয়ার ক্যাচটি ছিল টেস্ট ক্যারিয়ারে স্মিথের ১৯৭তম। রিকি পন্টিংকে ছাড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড গড়া স্মিথ উঠে এসেছেন সর্বকালের শীর্ষ পাঁচে।
সেই স্মিথ আজ গলে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে টেস্ট সেঞ্চুরিতে সর্বকালের শীর্ষ পাঁচে উঠে এসেছেন। আগের টেস্টে ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার পথে ৩৫তম সেঞ্চুরি পাওয়া স্মিথ পরের ইনিংসেই পেয়ে গেলেন ৩৬তম সেঞ্চুরি, যা তাঁকে টেস্ট সেঞ্চুরিতে রাহুল দ্রাবিড় ও জো রুটের পাশে বসিয়েছে।
দ্রাবিড়, রুট ও স্মিথের চেয়ে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরি আছে ভারতের শচীন টেন্ডুলকার (৫১), দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস (৪৫), অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং (৪১) ও শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারার (৩৮)।
স্মিথের সেঞ্চুরিতে শীর্ষ পাঁচে ওঠার দিনে সেঞ্চুরি পেয়েছেন তাঁর সতীর্থ অ্যালেক্স ক্যারিও। অস্ট্রেলিয়া ৯১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর স্মিথ ও ক্যারি ২৩৯ রানের জুটি গড়ে পাড়ি দিয়েছেন দিনের বাকি সময়টা। উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান ক্যারি পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১৩৯ রানের ইনিংসটি ৩৯ টেস্টের ক্যারিয়ারে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংসও। ২০২২ সালে মেলবোর্নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম ইনিংসে করা ১১১ ছিল তাঁর প্রথম। স্মিথ দিন শেষে অপরাজিত ১২০ রানে।
স্মিথ-ক্যারিতে দ্বিতীয় দিনটিকে নিজেদের করে নেওয়া অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে এগিয়ে গেছে ৭৩ রানে। এর আগে ৯ উইকেটে ২২৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস থামে ২৫৭ রানে। ৫৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা কুশল মেন্ডিস শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৮৫ রানে।
আরও পড়ুনআতিফ আসলামের কণ্ঠে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির থিম সং, কেমন হলো৫৩ মিনিট আগেদিনের প্রথম ঘণ্টাতেই ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়া উদ্বোধনী জুটিতে তোলে ৩২ রান। এই রানের ২১-ই ছিল নিশান পেইরিসের প্রথম শিকার ট্রাভিস হেডের। তিনে নামা মারনাস লাবুশেন ফেরেন পরের ওভারেই প্রবাত জয়াসুরিয়ার বলে এলবিডব্লু হয়ে।
স্মিথ নামেন এরপরই। উসমান খাজার সঙ্গে স্মিথের তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৫৪ রান। আগের ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়া খাজা আজ পেইরিসের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে করতে পারেন ৩৬ রান।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।