আগে চব্বিশের গণহত্যার বিচার, তারপর অন্য কাজ
Published: 8th, February 2025 GMT
চব্বিশের গণহত্যার বিচার আগে করতে হবে, তারপর অন্য কাজ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রতিশোধের নীতিতে বিশ্বাস করি না। তবে অপরাধের বিচার চাই। প্রতিটি হত্যার বিচার হতে হবে, বিশেষ করে ২৪-এর গণহত্যার বিচার অবশ্যই করতে হবে। আগে ন্যায়বিচার, তারপর অন্য কিছু। তা না হলে শহীদের আত্মা কষ্ট পাবে।’’
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জের চারটি আসনে জামায়াত প্রার্থীর নাম ঘোষণা
আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মধ্যে কল্যাণ নেই: জামায়াত আমির
বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু বিভেদ তৈরি করে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে দাবি করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে, তারা সবাই গর্বিত নাগরিক। ইসলাম কারো ওপর জোর খাটানোর অধিকার দেয় না। তেমনি অন্য ধর্মও ইসলাম বা কোনো ধর্মের ওপর জোর খাটাতে পারে না।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘বিভিন্ন সময় ধর্মীয় বিভেদের মাধ্যমে সম্পদ দখল, জায়গা-জমি গ্রাস, এমনকি নারীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়িও। অথচ এইসব কর্মকাণ্ডের জন্য জামায়াতকে দোষারোপ করা হয়েছে।’’
ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা স্বাধীনতার ৫৪ বছরে কোথায় জামায়াতের কর্মীরা অন্যায় করেছে, তার সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ দিন। আমরা ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দেব। আমরা বিশ্বাস করি, এসব অপকর্মের সঙ্গে আমাদের কোনো সহকর্মী জড়িত নয়।’’
চব্বিশের আন্দোলনকারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘‘সাড়ে ১৫ বছর আমরা আন্দোলন করেছি, কিন্তু স্বৈরাচারকে পরাজিত করতে পারিনি। ধারাবাহিক সংগ্রামের ফলে ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে।’’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘‘বিচারব্যবস্থা স্বাধীন হলে দেশের মানুষ আরো ভালো অবস্থায় থাকত। এখনো আমরা সত্যিকারের স্বাধীন বিচারব্যবস্থা পাইনি। যারা বেআইনি কাজ করেছে, প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছে, তাদেরই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বানানো হয়েছে। এদের কাছ থেকে সঠিক বিচার আশা করা যায় না।’’
জামায়েতর শীর্ষ এই নেতা অভিযোগ করেন, ‘‘আমাদের ১১ জন শীর্ষ নেতা বিচারিক হত্যার শিকার হয়েছেন। তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।"
কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ আনোয়ারির সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন- জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, মুহাম্মদ শাহজাহান এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী।
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন র আম র
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।