সম্প্রতি ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির বাড়িসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর, স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ৮ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে সারা দেশে যৌথ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরই প্রেক্ষিতে জাতীয় দৈনিক সমকালের ফটোকার্ডের আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডের মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বরিশালে অপারেশন ডেভিল হান্টে সেনাবাহিনীর গুলিতে ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয়েছে।

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরুর পর বরিশালে সেনাবাহিনীর গুলিতে ছাত্রলীগ কর্মী নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং সমকালও উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং সমকালের ভিন্ন ঘটনার একটি ফটোকার্ডের লেখা বদলে দিয়ে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে জাতীয় দৈনিক সমকালের নাম, লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ‘৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫’ উল্লেখ করা হয়েছে। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে একই তারিখে পত্রিকাটির ফেসবুক পেজে “গাজীপুরে মোটরসাইকেলে এসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। 

ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন, ফন্ট এবং ছবির মিল রয়েছে। কিন্তু এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পাদনা করে ফটোকার্ডের বাক্য বদলে দিয়ে “বরিশালে অপারেশন ডেভিল হান্ট সেনাবাহিনীর গুলিতে ছাত্রলীগ কর্মী নিহত” শীর্ষক বাক্য বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সমকালের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গাজীপুরের ভাওয়াল রাজবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলির ঘটনা ঘটেছে। ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মোবাশ্বের হোসেন নামের এক ছাত্র। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই গুলি ছুড়েছে।

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে আরো অনুসন্ধানে গণমাধ্যমের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই অভিযান শুরুর পর গাজীপুরে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ। এছাড়া সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশের কোথাও এই অভিযানে কারো নিহতের খবর আসেনি। 

সুতরাং, “বরিশালে অপারেশন ডেভিল হান্ট সেনাবাহিনীর গুলিতে ছাত্রলীগ কর্মী নিহত” শীর্ষক শিরোনামে সমকালের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমক ল সমক ল র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নের দাবি

শ্রমিক সমা‌জের মু‌ক্তির জন‌্য ইসলামী শ্রমনী‌তি প্রণয়ন ও বাস্তবায়‌নের দা‌বিতে রাজধানীসহ দে‌শের বি‌ভিন্ন স্থা‌নে র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সমা‌বেশ ক‌রে‌ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহ‌যোগী সংগঠনগু‌লো।

মহান মে দিবস উপল‌ক্ষে বৃহস্প‌তিবার (১ মে) সকাল থে‌কে এসব কর্মসূচি পালন ক‌রা হয়।

গাজীপুরে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ইসলামী শ্রমনীতি ছাড়া যে শ্রমিকের মুক্তি সম্ভব না, তা আজ প্রমাণিত। স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও বিদ্যমান শ্রম নীতিমালাই বাস্তবায়ন করা যায়নি। দেশের অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে, জিডিপির আকার বড় হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। টাকার অংকে শ্রমিকের বেতন বাড়লেও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকৃত মজুরি বরং আরো কমেছে। এই বাস্তবতায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামকে ভিত্তি বানাতে না পারলে শ্রমিকের ভাগ্য কোনোদিনই পরিবর্তন হবে না।

ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান নোয়াখালীর সেনবাগে তার নির্বাচনি এলাকায় শ্রমিক-জনতা সমাবেশে বলেছেন, ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নে সামগ্রিক আন্দোলন করা ছাড়া শ্রমিকের সামনে আর কোনো পথ নেই। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সে পথেই হাঁটবে।

তি‌নি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কেবল একটি দিন নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও ন্যায্যতার প্রতীক। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই এ চেতনাকে ধারণ করে শ্রমজীবী জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এবারের দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী যে উদ্দীপনা ও অংশগ্রহণ আমরা দেখেছি, তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণাদায়ক।

মে দিবসে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, নড়াইল, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, মাগুরা, মেঘনাঘাটসহ সাংগঠনিক জেলাগুলো সভা-সমা‌বে‌শ ক‌রে‌ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ