টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের ইজতেমা করার সুযোগ বন্ধ করা, ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের আগাম জামিন বাতিল ও জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।

‘ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ ও তাবলিগের সাথিবৃন্দ’ ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জরুরি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন মাওলানা মুফতি আমানুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমীসহ তাবলিগের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে টঙ্গী তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে বর্বর ও ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়। তৎকালীন ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের (সাদ কান্ধলভী) অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছিলেন। এ ছাড়া গত ১৮ ডিসেম্বর সাদপন্থীদের হামলায় চারজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। অথচ সাদপন্থীরা প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ না করে ‘বৈষম্য’ শব্দ ব্যবহার করে সহানুভূতি নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। মহানবী (সা.

)-এর সমালোচনা করার অপরাধে অভিযুক্ত ভারতের বিতর্কিত ব্যক্তি মাওলানা সাদ; তাঁর পক্ষ নিয়ে সমান অধিকার আদায় করার চেষ্টা হাস্যকর, আপত্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলামের (মাওলানা সাদ অনুসারী) বিতর্কিত ছেলে ওসামা ইসলাম সরকারের প্রচারিত পরিপত্রের মূল গুরুত্বপূর্ণ অংশকে বাদ দিয়ে স্বীয় স্বার্থে, নিজের ফেসবুক পোস্টে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন, যা সরকারি সিদ্ধান্তকে অবজ্ঞা করার শামিল। এর জোর প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে ভুল স্বীকার করে তা প্রত্যাহারের করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ডিসেম্বর মাসে দেওয়া সরকারি প্রজ্ঞাপনে যে সহাবস্থান শব্দটি ব্যবহার করে সব জেলায় ফেতনা–ফ্যাসাদের সৃষ্টি হয়েছে। তাই তা সংশোধন করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

আরও পড়ুনইজতেমার তৃতীয় ধাপ শুরু শুক্রবার, সাদপন্থীদের কাছে মাঠ হস্তান্তর৩ ঘণ্টা আগেইজতেমা ময়দান হস্তান্তর

গাজীপুর সংবাদদাতা জানান, টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে মাওলানা সাদ অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা। এ জন্য মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের কাছে মাঠ হস্তান্তর করেছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন। রোববার দুপুরে ইজতেমা মাঠের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কক্ষে এই হস্তান্তরপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীদের কাছ থেকে ইজতেমা মাঠ বুঝে নেয় প্রশাসন। তাবলিগ জামাতের মধ্যে বিবদমান বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। এর মধ্যে গত ৩১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি দুই ধাপে ইজতেমা পালন করেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা। এরপর তৃতীয় ধাপে আগামী ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমা পালন করবেন মাওলানা সাদ অনুসারীরা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স দপন থ সরক র ইজত ম ময়দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যু

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। তবে পুলিশ বলছে, তারা অন্য কাজে এলাকায় গিয়েছিল, ওই কাউন্সিলরকে ধরতে যায়নি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরের দাসপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই কাউন্সিলরের নাম কামাল হোসেন (৫৫)। তিনি নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। একসময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে দলে তাঁর কোনো পদ–পদবি ছিল না।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কামাল হোসেনের নামে চারটি মামলা হয়। তিনি এলাকায় থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। পরিবারের ধারণা, মামলা থাকায় পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে কিংবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

কামালের ছেলে সোহান শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে আমাদের এলাকায় পুলিশ এসেছিল। পুলিশ দেখে আমার বাবা তবজুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যান। তখন সিঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।’

নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। তিনি আত্মগোপনে থাকতেন। শুনেছি রাতে তিনি মারা গেছেন।’

ওসি বলেন, রাতে দাসপুকুর এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে কামালকে ধরতে যায়নি। পুলিশ গিয়েছিল অন্য কাজে। কিন্তু পুলিশ দেখে পালাচ্ছিলেন কামাল হোসেন। তখন হৃদ্‌রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছেই আছে। তারা দাফনের ব্যবস্থা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ