ইজতেমা ময়দানে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি
Published: 9th, February 2025 GMT
টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের ইজতেমা করার সুযোগ বন্ধ করা, ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের আগাম জামিন বাতিল ও জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।
‘ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ ও তাবলিগের সাথিবৃন্দ’ ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জরুরি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন মাওলানা মুফতি আমানুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমীসহ তাবলিগের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে টঙ্গী তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে বর্বর ও ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়। তৎকালীন ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের (সাদ কান্ধলভী) অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছিলেন। এ ছাড়া গত ১৮ ডিসেম্বর সাদপন্থীদের হামলায় চারজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। অথচ সাদপন্থীরা প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ না করে ‘বৈষম্য’ শব্দ ব্যবহার করে সহানুভূতি নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। মহানবী (সা.
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলামের (মাওলানা সাদ অনুসারী) বিতর্কিত ছেলে ওসামা ইসলাম সরকারের প্রচারিত পরিপত্রের মূল গুরুত্বপূর্ণ অংশকে বাদ দিয়ে স্বীয় স্বার্থে, নিজের ফেসবুক পোস্টে প্রচার শুরু করে দিয়েছেন, যা সরকারি সিদ্ধান্তকে অবজ্ঞা করার শামিল। এর জোর প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে এ বিষয়ে ভুল স্বীকার করে তা প্রত্যাহারের করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ডিসেম্বর মাসে দেওয়া সরকারি প্রজ্ঞাপনে যে সহাবস্থান শব্দটি ব্যবহার করে সব জেলায় ফেতনা–ফ্যাসাদের সৃষ্টি হয়েছে। তাই তা সংশোধন করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
আরও পড়ুনইজতেমার তৃতীয় ধাপ শুরু শুক্রবার, সাদপন্থীদের কাছে মাঠ হস্তান্তর৩ ঘণ্টা আগেইজতেমা ময়দান হস্তান্তরগাজীপুর সংবাদদাতা জানান, টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে মাওলানা সাদ অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা। এ জন্য মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের কাছে মাঠ হস্তান্তর করেছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন। রোববার দুপুরে ইজতেমা মাঠের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কক্ষে এই হস্তান্তরপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীদের কাছ থেকে ইজতেমা মাঠ বুঝে নেয় প্রশাসন। তাবলিগ জামাতের মধ্যে বিবদমান বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। এর মধ্যে গত ৩১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি দুই ধাপে ইজতেমা পালন করেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা। এরপর তৃতীয় ধাপে আগামী ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমা পালন করবেন মাওলানা সাদ অনুসারীরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স দপন থ সরক র ইজত ম ময়দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দেশবাসী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের মানুষ ২০ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি এবং নতুন প্রজন্মও ভোট দিতে পারেনি। তাই, তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পথেই এগিয়ে যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের যে ত্যাগ, সে পথেই দেশ অগ্রসর হবে।
প্রধান উপদেষ্টার মতো বিএনপিও রোজার আগে বিচার ও সংস্কারের অগ্রগতি চায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সংস্কারের বিষয়টি ঐকমত্যের ওপর নির্ভরশীল। এ বিষয়ে ড. ইউনূস, তারেক রহমান এবং বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ আগেই বলেছেন।
তিনি মনে করেন, ঐকমত্য হতে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বিচার বিভাগের ওপর নির্ভর করে। বিচার বিভাগ বিচার করবে এবং বিচারের আওতায় আনারও বিষয় আছে। যারা বিচারের আওতায় আসবে, তার জন্য আরো প্রায় ছয় মাস সময় আছে। আর যারা এর মধ্যে আসবে না, তাদের জন্য তো আগামী সরকার আছে।
সরকারের কি এখন নির্বাচনমুখী কর্মকাণ্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়া দরকার আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক এবং জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর কোনো পথ নেই। এ বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পোষণ করছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির অভিযোগ, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকার বিশেষ সম্পর্ক করছে, বিএনপি বিষয়টি কীভাবে দেখছে? এ প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, “আমি একটা জিনিস মনে করি, আমরা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে এখানে সবার মতামত নেওয়ার সুযোগ আছে। সুতরাং, সবাই তাদের মতামত দিতে পারে। আমার মনে হয়, এটাই আমাদের গণতন্ত্রের বড় পাওয়া, সবাই নিজেদের মতামত দেবে। এর মধ্যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
বিএনপি এত দিন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও এখন কেন ফেব্রুয়ারিতে গেল? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেক সময়। এবং এত সময়ও লাগার কোনো কারণ নেই। বিএনপি আগে ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব সমস্যার সমাধান করে নির্বাচনের কথা বলেছে। সুতরাং, ফেব্রুয়ারি আরো দীর্ঘ সময়। তবে, যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হয়, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
আমীর খসরু বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যত বেশি ঐকমত্যের মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারব, সেটা জাতির জন্য তত ভালো। আমরা যে ঐকমত্যের মধ্যে এসেছি, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “ঐকমত্য থাকার ফলেই আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পেরেছি। সুতরাং, আমরা চেষ্টা করব, যেখানেই সম্ভব ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব।”
তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ওয়ান-টু-ওয়ান বৈঠকে নির্বাচনে নিরপেক্ষতার বিষয়ে কোনো আলোচনা বা বার্তা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, যখনই নির্বাচন শুরু হবে, তখনই সরকার নিরপেক্ষতার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের ধারণা হলো— একটি নিরপেক্ষ সরকার। সুতরাং, নির্বাচনে সেই নিরপেক্ষতা সরকার নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বৈঠকে সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান বলেছেন, এখানে যতটুকু ঐকমত্য হবে, সংস্কারও ততটুকুই হবে। বাকি অংশটা নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সংস্কার তো চলমান প্রক্রিয়া। এটি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে না, নির্বাচনের পরেও এটি চলমান থাকবে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক