আয়োজনে, আকারে, দর্শক আগ্রহে আইসিসির সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট বিশ্বকাপ। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির চেয়ে বড় তো বটেই। তবে মাঠের খেলায় বিশ্বকাপের চেয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিকে বেশি কঠিন মনে করেন টেম্বা বাভুমা। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়কের মতে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফরম্যাট টুর্নামেন্টটিকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।

১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলবে ৮ দল। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা।

রোববার লাহোরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক বলেন, ‘বিশ্বকাপে দলগুলো নিজেদের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা, পুনরায় তৈরি হওয়া এবং মোমেন্টাম তৈরি করার মতো সময় পায়। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কোনো ভুল পদক্ষেপের সুযোগ নেই। হয় টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ভালো করবেন, নয়তো বাদ পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের সঙ্গে তুলনা করলে এখানেই চ্যালেঞ্জ বেশি।’

২০২৩ বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল ১০ দল। টুর্নামেন্ট ছিল লিগ পদ্ধতির। প্রতিটি দল ৯ ম্যাচ করে খেলার সুযোগ পেয়েছে। পয়েন্ট তালিকায় সেরা চারে থাকা দল উঠেছিল সেমিফাইনালে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

কিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ৪ দল নিয়ে একটা করে গ্রুপ হওয়ায় প্রতি দলের জন্য সুযোগ মাত্র ৩ ম্যাচের। গ্রুপের চার দলের মধ্যে সেরা দুইয়ে থাকতে পারলেই শুধু সেমিফাইনাল খেলা যাবে, এক ম্যাচ হারলেই তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের ম্যাচের দিকে। বড় প্রভাবক হয়ে উঠতে পারে রান রেটও।

দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ভালো দিক হচ্ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগেই পাকিস্তানের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে তারা। পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের অংশ দক্ষিণ আফ্রিকা, যে সিরিজে আজ নিজেদের প্রথম ম্যাচটি খেলতেও নেমেছে প্রোটিয়ারা। বাভুমাও ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতির জন্য ভালো সুযোগ হিসেবেই দেখছেন, ‘এই ত্রিদেশীয় সিরিজটা পাকিস্তানে আমাদের দল গুছিয়ে নেওয়ার জন্য ভালো সুযোগ এনে দিয়েছে। একই সঙ্গে তরুণদের জন্যও এটা ভালো একটা মঞ্চ।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ২১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ম্যাচ খেলবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ