৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি: একই শিক্ষাবর্ষের অনেকেই কি বঞ্চিত হবেন
Published: 10th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সম্প্রতি ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যেখানে আবেদনের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। তবে দেশের অনেক শিক্ষার্থীর জন্য এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করা কঠিন হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, মার্কেটিং, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য। একই শিক্ষাবর্ষের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেখানে ৪৭তম বিসিএসে অংশ নিতে পারবেন, সেখানে এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হতে চলেছেন।
বিগত বছরগুলোর নানা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কারণে দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া গণ-অভ্যুত্থানের ফলে দীর্ঘদিন ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ছিল। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক ক্যালেন্ডারে জট তৈরি হয়, যা এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি।
এ অবস্থায় ৪৭তম বিসিএসের আবেদনের শর্ত অনুযায়ী, যাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনার্স লিখিত পরীক্ষা সম্পন্ন করার সনদ হাতে পাবেন না, তাঁরা আবেদন করতে পারবেন না। ফলে একই শিক্ষাবর্ষের অনেক শিক্ষার্থী যেখানে বিসিএসের জন্য আবেদন করতে পারবেন, সেখানে কিছু নির্দিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা শুধু পরীক্ষার জটের কারণে আবেদন করার সুযোগ হারাবেন। এটা স্পষ্টতই অসংগতিপূর্ণ ও বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি করছে।
এমন পরিস্থিতিতে পিএসসির উচিত মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি পর্যালোচনা করা এবং আবেদনের সময়সীমা অন্তত এক মাস বাড়ানো। ৪৭তম বিসিএসের আবেদনের সময়সীমা ইতিমধ্যে দুই দফায় বাড়িয়ে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে, তাই আরেকটি সুযোগ দেওয়া হলে হাজারো শিক্ষার্থী উপকৃত হবেন এবং তাঁরা তাঁদের ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন।
শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক দাবির প্রতি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে পিএসসি চেয়ারম্যানের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিসিএস পরীক্ষার আবেদনের সময়সীমা বাড়ানোর এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা হতে পারে।
মো.
মেহেদী হাসান
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষ বর ষ র পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।
২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।
ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।