চলতি বছরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় বাম গণতান্ত্রিক জোট। আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নয়, তারা আগে জাতীয় নির্বাচন চায়। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে বাম জোট।

ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ইকবাল কবির জাহিদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান। জোটভুক্ত দলগুলোর সাত শীর্ষস্থানীয় নেতা নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে জোটের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

বৈঠক শেষে ইকবাল কবির সাংবাদিকদের বলেন, একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা উত্তরণসহ নানা ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ভেতর দিয়ে সরকারের পতন হয়েছে। এই পরিবর্তনের পর প্রথম কর্তব্য একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া। সে কারণে তাঁরা দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন না জাতীয় নির্বাচন—এমন বিতর্ক উত্থাপন করে পরিস্থিতিটা ঘোলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁরা মনে করেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগেই সম্পন্ন করা উচিত এবং এই বছরের ভেতরেই তা সম্পন্ন করা উচিত।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জোটের শরিক সিপিবির সভাপতি শাহ আলম সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমে সংস্কার না নির্বাচন, এই কথাটা বহুদিন চলল। সংস্কার এবং নির্বাচন একসঙ্গে চলতে পারে। এখন আবার নিয়ে আসা হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন না জাতীয় নির্বাচন। তাঁরা মনে করছেন, এর মধ্য দিয়ে সরকার নির্বাচন নিয়ে ‘ডিলে’ (কালক্ষেপণ) করছে। এটি জাতির জন্য আত্মঘাতী হবে। এই সরকার যতই কালক্ষেপণ করবে, দেশে ততই নানা জটিলতা বাড়বে। সে জন্য বাম জোট মনে করে, জাতীয় নির্বাচনটা আগে হওয়া দরকার। একটা স্থিতিশীল সরকার ছাড়া যে ভয়ের রাজনীতি দেশে চলছে, যে দমবন্ধ অবস্থা, তা থেকে মানুষ মুক্ত হবে না।

কোনো অজুহাতে কালক্ষেপণ চান না উল্লেখ করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা চান, দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হোক। ইসির সঙ্গে কথা বলে তাঁরা আশ্বস্ত হয়েছেন, ইসি সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন, ইসি তাঁদের বলেছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত হবে, তারা সেটা করবে। তবে তারা জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।

সরকার কালক্ষেপণ করছে বলে মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সর্বশেষ যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে, সেখানে অধিকাংশ দল আগে জাতীয় নির্বাচন দেওয়া দরকার বলে বলেছে। এখন অল্প দিনের মধ্যে সরকার যদি ইসিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা না বলে, তখন বলতেই হবে সরকার কালক্ষেপণ করছে।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, যদি সংসদ নির্বাচন না হয়, নির্বাচনপ্রক্রিয়ার মধ্যে না ঢোকা হয়, তাহলে ভয়ের সংস্কৃতি এবং অস্থিতিশীলতা আরও ক্রমাগত বাড়বে। পতিত স্বৈরাচার এবং তাদের দেশি–বিদেশি দোসরদের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচিত সরকারই কেবল এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক দ র বল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আরো ৩ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস

ইসরায়েলের কাছে আরো তিন জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গতকাল রবিবার রাতে মরদেহগুলো রেডক্রসের হাতে তুলে দেয় তারা।

আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। 

আরো পড়ুন:

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় হামলা, ৭৫ শতাংশ ত্রাণ প্রবেশে বাধা

পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, “রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েল তিন মৃত জিম্মির কফিন গ্রহণ করেছে। যেগুলো গাজায় থাকা প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেতের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্তে মরদেহগুলো শনাক্ত কেন্দ্রে পাঠানো হবে।”

যদি এই জিম্মির পরিচয় শনাক্ত হয় তাহলে যুদ্ধবিরতির পর হামাসের হস্তান্তর করা মরদেহের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছাবে। গত মাসে যখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় তখন তাদের কাছে ২৮ জিম্মির মরদেহ ছিল।

ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে মরদেহগুলো ফেরত দিতে দেরি করছে। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, মরদেহগুলো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ায় এগুলো উদ্ধার করতে তাদের সময় লাগছে।

হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড জানায়, রবিবার সকালে দক্ষিণ গাজার একটি সুড়ঙ্গ থেকে তারা মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে।

পরে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে বলা হয়,  “সব জিম্মিদের পরিবারকে সেই অনুযায়ী আপডেট করা হয়েছে এবং এই কঠিন সময়ে আমাদের হৃদয় তাদের সাথে রয়েছে। আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং শেষ জিম্মিটি ফিরে না আসা পর্যন্ত থামবে না।”

হোস্টেজ এবং মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম গাজা থেকে বাকি সব মৃত জিম্মিকে উদ্ধারের জন্য নেতানিয়াহুকে জরুরিভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।

হামাস ও ইসরায়েল একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।

হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, রবিবার উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা তাদের সৈন্যদের জন্য হুমকিস্বরূপ এক সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।

গত ১৩ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে গাজা থেকে জীবিত সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ