মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীর মাঝে দ্বন্দ্ব, বিবাদ আর বিভক্তি এখনও বিদ্যমান। যে কারণে এসব এলাকায় সাংগঠনিকভাবে গুছিয়ে উঠতে বেগ পেতে হচ্ছে দলটিকে। সম্প্রতি একই পরিস্থিতি চলছে রাজনগর বিএনপিতে।

জেলার রাজনগর উপজেলাধীন বিভিন্ন ইউনিয়নে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে আসছে বিএনপির গৃহবিবাদ। বিভক্ত নেতাকর্মীর মাঝে সংঘাত, প্রতিঘাত, বিক্ষোভ চলমান। যার কারণে বাড়ছে দূরত্ব এবং সাংগঠনিক সমন্বয়। একই সঙ্গে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান জুবেল আহমদ চৌধুরীকে বহিষ্কারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। এতে রাজনগর বিএনপির ইমেজ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জেলা বিএনপিতে চলমান পক্ষপাতিত্বের কারণে উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিটে দ্বন্দ্ব চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলা বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিল করে বিভক্ত পক্ষগুলোকে সমন্বিত করে গত বছরের ৪ নভেম্বর আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সে সময় বিভক্তি ভুলে দলকে ঐক্যবদ্ধ করার কথা জানিয়েছিলেন নেতারা।

সে সময় ওই কমিটির অনুমোদন দেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর মাত্র ১১ দিনের ব্যবধানে জেলার সব উপজেলা ও সমমানের ইউনিট কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। জেলা বিএনপির আহ্বায়কসহ শীর্ষ নেতারা বিভক্তি ও অন্তর্দ্বন্দ্ব মিটিয়ে চলতি বছরের ২ থেকে ২১ জানুয়ারির মধ্যে সব ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেন। স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীর একাংশের দাবি, দুঃসময়ে দলের প্রতি নিবেদিত, পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের অনেকেই বাদ পড়েন এসব কমিটি থেকে। সেখানে ঠাঁই দেওয়া হয় গত সরকারের আমলে সুবিধা নেওয়া নেতাদের।

এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসা রাজনগর, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার সদর, জুড়ীসহ বিভিন্ন ইউনিটে প্রতিবাদ জানান ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা; যার মধ্যে রাজনগরে পরিস্থিতি বেশি জটিল হয়ে পড়ে। এ উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটি গঠনে বিএনপির একাংশের নেতারা গোপনে কর্মিসভার আয়োজন করলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়।

১১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে উপজেলা সদরের কলেজ পয়েন্টে ছাত্রদল-যুবদলসহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন এ ঘটনার প্রতিবাদে সভা করে। এতে করে ক্ষুব্ধ হন বিএনপির অপর একটি অংশের নেতারা। এ দিকে ১৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রাজনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান জুবেল আহমদ চৌধুরীকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। জেলাকে পাশ কাটিয়ে তাকে বহিষ্কার করার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। 

জুবেল আহমদ চৌধুরী জানান, বছর তিনেক আগে জেলা বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার রাজনৈতিক শিষ্টাচারবিবর্জিত কার্যকলাপের প্রতিবাদ জানিয়ে একযোগে ৪৭ জন নেতা কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তাদের একজন তিনি নিজে। এখনও দলের মাঝে আগের সেই খামখেয়ালি আচরণ রয়ে গেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এমন ঘাটতি নিয়ে বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানো কঠিন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র ন ত কর ম র ব ভ ন ন ইউন দ বন দ ব পর স থ ত ব এনপ র র জনগর উপজ ল ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি

জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণাকে স্ববিরোধিতা বলে মনে করছে বিএনপি।

জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনসহ কয়েকটি দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামীসহ চারটি রাজনৈতিক দল। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।

এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা অব্যাহত আছে। এ অবস্থায় রাস্তায় কর্মসূচি দেওয়া অনেকটা স্ববিরোধিতা। তবে অবশ্যই যেকোনো দলের কর্মসূচি দেওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। তারা কর্মসূচি দিতে পারে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের দাবির মধ্যে জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষেও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এই নেতা বলেন, জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতির বিষয়টি কখনো ঐকমত্য কমিশনে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল না। এখন কোনো দল তাদের রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে এটি নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে চাইলে দিতে পারে। কিন্তু জনগণের নামে এক দলের আদর্শ বা দাবি অন্যদের ওপর আরোপ করা কতটা সঠিক, সেটা দেখতে হবে।

জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের শরিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করার দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা বলেছি, শুধু প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা আমরা সমর্থন করি না। আগে আইন ছিল না, এখন আইন হয়েছে। কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হওয়া উচিত। এখন ঢালাওভাবে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করতে চাইলে তা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না, সেটা জনগণ বিবেচনা করবে।’

শুরু থেকেই আমরা বলেছি, শুধু প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা আমরা সমর্থন করি না। আগে আইন ছিল না, এখন আইন হয়েছে। কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হওয়া উচিত। সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপি নেতা

সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে আরও বলেন, এই আন্দোলন কাদের বিরুদ্ধে, সেটা দেখতে হবে। এটা কি অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে, নাকি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে, নাকি বিএনপির বিরুদ্ধে? এটা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার কোনো কৌশল কি না, সেটাও দেখতে হবে। যারা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করার অধিকার আছে। তারা যদি রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে কর্মসূচি দেয়, তাদের মাঠের রাজনৈতিক বক্তব্যের জবাব বিএনপি মাঠের বক্তৃতার মাধ্যমেই দেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি
  • হাওরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা