ডিসেন্ট্রালাইজড বাংলাদেশের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
Published: 20th, February 2025 GMT
পিএসসি এবং ইউজিসিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক প্রতিনিধি নিয়োগ না দেওয়ার প্রতিবাদে এবং রাষ্ট্র ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে শিক্ষার্থীরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারকে উৎখাত করেছি। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে আমরা এ অসাধ্য সাধন করতে পেরেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আপামর জনসাধারণের আকাঙ্ক্ষা এবং জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষিতে কাঙ্ক্ষিত বৈষম্যহীন রাষ্ট্রকাঠামো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে জ্বলাই বিপ্লবের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে বিভাজন দেখা যাচ্ছে।
তারা বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হলো, বিভিন্ন সংস্কার কমিশন হলো, পিএসসি-ইউজিসিতে নিয়োগ দেওয়া হলো। এর সবগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকাকেন্দ্রীক একচ্ছত্র আধিপত্য লক্ষ করা যাচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। যা ইনক্লুসিভ ও কোয়ালিটি বাংলাদেশ গঠনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে প্লেস ডিসক্রিমিনেশন এবং ইনস্টিটিউশনাল ডিক্টেটরশিপ দেখা যাচ্ছে, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একইসঙ্গে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে ঢাবি ও ঢাকাকেন্দ্রীক আধিপত্য কমিয়ে দ্রুত সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছি।
তারা আরো বলেন, পিএসসি-ইউজিসিসহ সবক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য সব বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানের দক্ষ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশের পূর্ণ বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। এ পরিস্থিতি বিবেচনা করার জন্য আগামী দুই দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হলো। এর মধ্যে কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হলে ‘ডিসেন্ট্রালাইজড্ বাংলাদেশ’ এর দাবিতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ