পিএসসি এবং ইউজিসিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক প্রতিনিধি নিয়োগ না দেওয়ার প্রতিবাদে এবং রাষ্ট্র ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে শিক্ষার্থীরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাই-আগস্টের রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারকে উৎখাত করেছি। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে আমরা এ অসাধ্য সাধন করতে পেরেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আপামর জনসাধারণের আকাঙ্ক্ষা এবং জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষিতে কাঙ্ক্ষিত বৈষম্যহীন রাষ্ট্রকাঠামো এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে জ্বলাই বিপ্লবের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে বিভাজন দেখা যাচ্ছে।

তারা বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হলো, বিভিন্ন সংস্কার কমিশন হলো, পিএসসি-ইউজিসিতে নিয়োগ দেওয়া হলো। এর সবগুলোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকাকেন্দ্রীক একচ্ছত্র আধিপত্য লক্ষ করা যাচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। যা ইনক্লুসিভ ও কোয়ালিটি বাংলাদেশ গঠনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে প্লেস ডিসক্রিমিনেশন এবং ইনস্টিটিউশনাল ডিক্টেটরশিপ দেখা যাচ্ছে, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একইসঙ্গে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে ঢাবি ও ঢাকাকেন্দ্রীক আধিপত্য কমিয়ে দ্রুত সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছি।

তারা আরো বলেন, পিএসসি-ইউজিসিসহ সবক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য সব বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানের দক্ষ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশের পূর্ণ বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। এ পরিস্থিতি বিবেচনা করার জন্য আগামী দুই দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হলো। এর মধ্যে কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান না হলে ‘ডিসেন্ট্রালাইজড্ বাংলাদেশ’ এর দাবিতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ