তুরস্কের সঙ্গে চার দশক ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটাতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। দলটির বন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকালানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। খবর আলজাজিরার। 

শনিবার পিকেকের ঘনিষ্ঠ সংবাদ সংস্থা এএনএফে প্রকাশিত বিবৃতিতে দলটির নির্বাহী কমিটি জানায়, শান্তি ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজ থেকেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করছে তারা। পিকেকে আরও জানায়, তাদের কোনো সদস্য আক্রমণের শিকার না হলে আর অস্ত্র ব্যবহার করবে না তারা।

এর আগে বৃহস্পতিবার দলটির কারাবন্দি শীর্ষ নেতা আবদুল্লাহ ওকালানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায় কুর্দিপন্থি ডিইএম পার্টির একটি প্রতিনিধি দল। সেখানে ওকালান পিকেকেকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে তিনি কুর্দিদের রাষ্ট্র ও সমাজের সঙ্গে মিলিত হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

পরে ইস্তাম্বুলে সংবাদ সম্মেলনে এ রাজনীতিকরা তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানান। তারা বলেন, আবদুল্লাহ ওকালান বলেছেন, ‘আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি, (কুর্দি) কংগ্রেসের অধিবেশনের ডাক দিন। রাষ্ট্র ও সমাজের সঙ্গে মিলিত হয়ে যান।’ অনুসারীদের এ কুর্দি নেতা আরও বলেন, কুর্দি সব দল যেন অস্ত্র ফেলে দেয় এবং পিকেকেকে যেন বিলুপ্ত করা হয়।

১৯৮৪ সালে কুর্দিদের জন্য একটি জাতিগত আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পিকেকে তাদের লড়াই শুরু করে। সেই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। পরে কুর্দিরা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী লক্ষ্য থেকে সরে এসে দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়ায় একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং বৃহত্তর কুর্দি অধিকারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখে।

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর পিকেকের আশা, তুরস্ক সরকার ওকালানকে মুক্তি দেবে এবং শান্তি প্রক্রিয়া সফল করতে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করবে। তবে দলটি এখনও সম্পূর্ণরূপে নিজেদের বিলুপ্ত করার নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেনি।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত রস ক

এছাড়াও পড়ুন:

আরো ৩ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস

ইসরায়েলের কাছে আরো তিন জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গতকাল রবিবার রাতে মরদেহগুলো রেডক্রসের হাতে তুলে দেয় তারা।

আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। 

আরো পড়ুন:

যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় হামলা, ৭৫ শতাংশ ত্রাণ প্রবেশে বাধা

পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, “রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েল তিন মৃত জিম্মির কফিন গ্রহণ করেছে। যেগুলো গাজায় থাকা প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেতের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্তে মরদেহগুলো শনাক্ত কেন্দ্রে পাঠানো হবে।”

যদি এই জিম্মির পরিচয় শনাক্ত হয় তাহলে যুদ্ধবিরতির পর হামাসের হস্তান্তর করা মরদেহের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছাবে। গত মাসে যখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় তখন তাদের কাছে ২৮ জিম্মির মরদেহ ছিল।

ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে মরদেহগুলো ফেরত দিতে দেরি করছে। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, মরদেহগুলো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ায় এগুলো উদ্ধার করতে তাদের সময় লাগছে।

হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড জানায়, রবিবার সকালে দক্ষিণ গাজার একটি সুড়ঙ্গ থেকে তারা মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে।

পরে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে বলা হয়,  “সব জিম্মিদের পরিবারকে সেই অনুযায়ী আপডেট করা হয়েছে এবং এই কঠিন সময়ে আমাদের হৃদয় তাদের সাথে রয়েছে। আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং শেষ জিম্মিটি ফিরে না আসা পর্যন্ত থামবে না।”

হোস্টেজ এবং মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম গাজা থেকে বাকি সব মৃত জিম্মিকে উদ্ধারের জন্য নেতানিয়াহুকে জরুরিভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।

হামাস ও ইসরায়েল একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।

হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, রবিবার উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা তাদের সৈন্যদের জন্য হুমকিস্বরূপ এক সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।

গত ১৩ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে গাজা থেকে জীবিত সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ