অস্ত্র রেখে শান্তির পথে তুরস্কের পিকেকে
Published: 1st, March 2025 GMT
তুরস্কের সঙ্গে চার দশক ধরে চলা সংঘাতের অবসান ঘটাতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। দলটির বন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকালানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। খবর আলজাজিরার।
শনিবার পিকেকের ঘনিষ্ঠ সংবাদ সংস্থা এএনএফে প্রকাশিত বিবৃতিতে দলটির নির্বাহী কমিটি জানায়, শান্তি ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজ থেকেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করছে তারা। পিকেকে আরও জানায়, তাদের কোনো সদস্য আক্রমণের শিকার না হলে আর অস্ত্র ব্যবহার করবে না তারা।
এর আগে বৃহস্পতিবার দলটির কারাবন্দি শীর্ষ নেতা আবদুল্লাহ ওকালানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায় কুর্দিপন্থি ডিইএম পার্টির একটি প্রতিনিধি দল। সেখানে ওকালান পিকেকেকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে তিনি কুর্দিদের রাষ্ট্র ও সমাজের সঙ্গে মিলিত হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
পরে ইস্তাম্বুলে সংবাদ সম্মেলনে এ রাজনীতিকরা তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানান। তারা বলেন, আবদুল্লাহ ওকালান বলেছেন, ‘আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি, (কুর্দি) কংগ্রেসের অধিবেশনের ডাক দিন। রাষ্ট্র ও সমাজের সঙ্গে মিলিত হয়ে যান।’ অনুসারীদের এ কুর্দি নেতা আরও বলেন, কুর্দি সব দল যেন অস্ত্র ফেলে দেয় এবং পিকেকেকে যেন বিলুপ্ত করা হয়।
১৯৮৪ সালে কুর্দিদের জন্য একটি জাতিগত আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পিকেকে তাদের লড়াই শুরু করে। সেই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। পরে কুর্দিরা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী লক্ষ্য থেকে সরে এসে দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়ায় একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং বৃহত্তর কুর্দি অধিকারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখে।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর পিকেকের আশা, তুরস্ক সরকার ওকালানকে মুক্তি দেবে এবং শান্তি প্রক্রিয়া সফল করতে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করবে। তবে দলটি এখনও সম্পূর্ণরূপে নিজেদের বিলুপ্ত করার নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত রস ক
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।