শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, এবার স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে তাঁদের, যাঁরা বাংলাদেশের জন্য জীবনব্যাপী অবদান রেখেছেন এবং নতুন কিছু তৈরি করেছেন, যার ধারাবাহিকতা এখনো চলছে।

আজ রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত জাতীয় পুরস্কারসংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এ কমিটির আহ্বায়ক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

আর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘আপনারা একুশে পদক দেখে খুশি হয়েছিলেন, এ পুরস্কার দেখে আপনারা আরও খুশি হবেন।’

স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য কাদের সুপারিশ করা হয়েছে, সে বিষয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, যাঁরা বাংলাদেশের জন্য জীবনব্যাপী অবদান রেখেছেন এবং নতুন কিছু তৈরি করেছেন যার ধারাবাহিকতা এখনো চলছে। সেটি যেকোনো ক্ষেত্রে—সংস্কৃতি, সাহিত্য, বিজ্ঞান বা সমাজসেবার ক্ষেত্রে নতুন ধারা, যেটি এখনো সারা দেশকে প্রভাবিত করে। কিন্তু আগে তাঁদের সেভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এটি সুপারিশ। উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত নামগুলো প্রকাশ করা যাবে না।

আগে অনেক বিতর্কিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে কমিটির সদস্য ও আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘র‍্যাবের মতো প্রতিষ্ঠানকেও স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। অথচ এটি আমাদের জাতীয় জীবনের সর্বোচ্চ পুরস্কার। আমরা এই পুরস্কারের (স্বাধীনতা পুরস্কার) মহিমা উপলব্ধি করে দলগত ও গোষ্ঠীগত চিন্তার ঊর্ধ্বে থেকে স্যারের (ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ) নেতৃত্বে এমন সব নাম সুপারিশ করেছি, আপনারা একুশে পদক দেখে খুশি হয়েছিলেন, এ পুরস্কার দেখে আপনারা আরও খুশি হবেন। মনে হবে, পুরস্কার দিতে পেরে আমরা নিজেরা ধন্য হচ্ছি।’ এবার ১০ জনের কম মানুষকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট হয় ছ ল আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ