পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটির সামনে সুযোগ ছিল টেবিলের তৃতীয় স্থানে ওঠার। তবে সেক্ষেত্রে তাদের হারাতে হতো এই মৌসুমের চমক নটিংহ্যাম ফরেস্টকে। সেই সুযোগ কাজে লাগানো দূরে থাক, উল্টো ম্যাচটা হেরে যেতে হলো ম্যানসিটিকে। নিয়মিত পয়েন্ট হারিয়ে দলটির আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লীগ খেলার সম্ভাবনায় জমেছে শঙ্কার মেঘ। এরপর ক্ষিপ্ত ম্যানেজার গার্দিওলা বললেন, চ্যাম্পিয়নস লীগ কোয়ালিফিকেশন আকাশ থেকে পড়বে না।

নটিংহ্যামের সিটি গ্রাউন্ডে শনিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ১-০ গোলে হেরে গিয়েছে গত চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের প্রথমার্ধে এলোমেলো খেলেছে দুদলই। দ্বিতীয়ার্ধে ৬৭ মিনিটের আগে স্বাগতিক নটিংহ্যাম কোন পরিস্কার সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। ম্যাচের প্রথম সুযোগটি তৈরি করেন ক্যালাম হাডসন-ওডোইয়ের। তখন গোল হয়নি। তবে এই উইঙ্গারের ৮৩তম মিনিটে স্বাগতিকদের আনন্দে ভাসান ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে গোল করে।

নটিংহ্যাম জানুয়ারিতে লিভারপুল এবং ফেব্রুয়ারিতে আর্সেনালকে রুখে দিয়েছিল। তবে আরেক জায়ান্ট ম্যানসিটির বিপক্ষে পুরো তিন পয়েন্ট তুলে নিল নুনো সান্তোর দলটি। পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকা ফরেস্টের সংগ্রহ ২৮ ম্যাচ শেষে ৫১ পয়েন্ট। সমান সংখ্যক ম্যাচে চতুর্থ স্থানে থাকা সিটির সংগ্রহ ৪৭। তবে এক ম্যাচ কম খেলা চেলসি যদি আজ (৯ মার্চ, ২০২৫) লিস্টার সিটির বিপক্ষে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ড্রও করতে পারে, তাহলে শীর্ষ চার উঠে যাবে।

আরো পড়ুন:

ম্যানসিটিতে ‘নতুন মেসি’ নিয়ে আসলেন গার্দিওলা 

হেরে তরুণ ফুটবলার কেনার কথা জানালেন গার্দিওলা

সিটির মৌসুমটি চোটে একাকার। ব্যালন ডি’অর বজয়ী রদ্রি, ডিফেন্ডার জন স্টোনস, ম্যানুয়েল আকাঞ্জি এবং নাথান আকে সহ অনেকেই স্কোয়াডের বাইরে চোট নিয়ে। তাই বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের শেষ চারের দৌড়ে টিকে থাকাটা কঠিন।

ম্যাচ শেষে গার্দিওয়াল বলেন, “আমাদের ম্যাচ জিততে হবে এবং যদি আমরা যথেষ্ট ম্যাচ না জিতি, তাহলে কষ্টকর হয়ে যাবে (শেষ চারে থাকাটা)। আমাদের ১০টি ম্যাচ বাকি আছে এবং চ্যাম্পিয়নস লিগে যোগ্যতা অর্জনের জন্য আমাদের অনেক ম্যাচ জিততে হবে।” গার্দিওলা রিপোর্টারদের বলেন।

তবে সেটা কিভাবে। লাস্ট কয়েক মাসে ম্যানসিটির ম্যাচ জয়ের সংখ্যা অত্যন্ত কম। গার্দিওলা এই ব্যাপারে বলেন, “একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে, আপনাকে ভালো খেলার চেষ্টা করতে হবে। আপনাকে কিছু একটা খুঁজে বের করতে হবে। এটি আকাশ থেকে আসবে না। আপনাকে এটা করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে কিছু একটা খুঁজে বের করতে হবে।”

গার্দিওলা আরও যোগ করেন, “পরিস্থিতি যা তাতে, আমাদের ১০টি ম্যাচ বাকি। সেই ম্যাচ গুলো আগামী শনিবার ব্রাইটনের বিপক্ষে শুরু হবে, তারপর আন্তর্জাতিক বিরতি এবং তারপর আমরা দেখব কি হয়।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ