ডিম সেদ্ধ পানি কেন এত কার্যকর

ডিম সেদ্ধ করা পানিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং সামান্য পরিমাণ ফসফরাস ও আয়রন থাকে। যা গাছপালা, চুলের যত্ন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং কম্পোস্ট সারের জন্য উপকারী। এই পানি মাটিতে দিলে মাটির গুণগত মান উন্নত হয়, মাথার চুল মজবুত হতে পারে, আর ঘরগৃহস্থালির বিভিন্ন জিনিস পরিষ্কার করতেও ব্যবহার করা যায়। এর পাশাপাশি কম্পোস্ট সার বানাতেও কাজে লাগে।

১.

গাছের জন্য প্রাকৃতিক সার

ডিম সেদ্ধ পানিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম থাকে, যা গাছের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ডিম সেদ্ধ পানি ঠান্ডা করে গাছের গোড়ায় দিলে মাটির গুণগত মান উন্নত হয় এবং গাছের পুষ্টিগ্রহণের ক্ষমতা বাড়ে। ক্যালসিয়াম গাছের শিকড়ের বিকাশে সাহায্য করে, ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরোফিল উৎপাদন বাড়িয়ে গাছকে আরও সবুজ ও সতেজ করে তোলে। তবে গরম পানি গাছে প্রয়োগ করলে গাছ মরে যাবে, তাই অবশ্যই পানি ঠান্ডা করে নিতে হবে।

আরও পড়ুনভাজা ডিম নাকি সেদ্ধ, কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর? ২৩ আগস্ট ২০২৪২. চুলের প্রাকৃতিক পরিষ্কারক

শুনতে অদ্ভুত লাগতে পারে, তবে ডিম সেদ্ধ পানি চুলের জন্য দারুণ প্রাকৃতিক পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করতে পারে। এই পানিতে থাকা খনিজ উপাদান চুলের গোড়া মজবুত করতে, খুশকি কমাতে এবং চুল উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। প্রথমে ডিম সেদ্ধ পানি ঠান্ডা হতে দিন। তারপর সাধারণ কলের পানিতে চুল ধুয়ে নিন। আর শেষবার ধুয়ে নিন ঠান্ডা করে নেওয়া ডিম সেদ্ধ পানি দিয়ে। বিশেষ করে যাঁদের চুল শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের জন্য এই পানি বেশ উপকারী। এতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়। এ ছাড়া ডিমের খনিজ উপাদান চুলের স্থিতিস্থাপকতা ও মসৃণতা ফিরিয়ে আনতেও সাহায্য করে।

আরও পড়ুনডিম কীভাবে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার২৩ ডিসেম্বর ২০২৪৩. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় ব্যবহার

ডিম সেদ্ধ পানি শুধু গাছ ও চুলের জন্যই নয়, ঘরগৃহস্থালি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজেও ব্যবহার করা যায়। এর সামান্য ক্ষারীয় উপাদান (অ্যালকালাইন) চর্বি ও ময়লা তুলতে সাহায্য করে। রান্নাঘরের বেসিন, চুলার ওপরের অংশ বা আঠালো দাগ পরিষ্কারে ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া এই পানি ডিশওয়াশার বা ওয়াশিং মেশিনে ব্যবহার করলে জিনিসপত্র হবে ঝকঝকে। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো, রাসায়নিক ক্লিনারের পরিবেশবান্ধব বিকল্প হতে পারে এই পানি।

৪. কম্পোস্টিংয়ে সহায়তা করে

ডিম সেদ্ধ পানিতে থাকা খনিজ উপাদান জৈব বর্জ্য দ্রুত ভাঙতে বা পচতে সাহায্য করে। ঠান্ডা করা ডিম সেদ্ধ পানি কম্পোস্টে ঢালা হলে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়, যা কম্পোস্টকে আরও কার্যকর করে তোলে। এ ছাড়া এটি কম্পোস্টের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, যা জৈব বর্জ্য দ্রুত পচতে সহায়তা করে।

সূত্র: ইয়াহু

আরও পড়ুনচুল পড়া ঠেকাতে পারে রান্নাঘরের এই ১০টি উপাদান০১ এপ্রিল ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর স হ য য কর কম প স ট পর ষ ক র র জন য উপ দ ন এই প ন উপক র

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ