পাবনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী নিজামী পুত্র মোমেন
Published: 13th, March 2025 GMT
পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে দলটির সাবেক আমীর ও সাবেক মন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) সাঁথিয়া উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে দলটির বিশেষ সভায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর শাহাদাতের পর এখানে আমাদের দলের প্রার্থী নাজিবুর রহমান মোমেনই ছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের জুলুম নির্যাতনের কারণে মতিউর রহমান নিজামীর পরিবারের কোনো সদস্য দেশে থাকতে পারেননি। তাই মাঝখানে নির্বাচনের জন্য আমরা প্রার্থী করেছিলাম আব্দুল বাসেদ খান ভাইকে। আবারও আমরা বিজয়ের সম্ভাবনাকে নিশ্চিত করতেই ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেনকে প্রার্থী করলাম। আমাদের দলের প্রার্থী হওয়া বা প্রার্থী করা কোনোটাই প্রার্থীর সাথে সম্পর্ককৃত নয়, সবকিছুই দলের সঙ্গে সম্পর্ককৃত।”
সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীর আগাম প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও দলের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে দলের প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। এই আসনে এতো দিন প্রচারণা চালাচ্ছিলেন বেড়া উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল বাসেদ খান।
মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর দ্বিতীয় পুত্র মোমেন লন্ডন থেকে ব্যারিস্টারি ডিগ্রি নিয়ে ২০১০ সালে ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। পরে ২০১৬ সালের ১০ মে মধ্যরাতে মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় তার বাবা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের পর সরকারের নানা চাপে দেশত্যাগ করে লন্ডনে চলে যান। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
মতিউর রহমান নিজামীর ৬ সন্তানের মধ্যে নাজিবুর রহমান মোমেন দ্বিতীয়। বড় ছেলে ড.
ঢাকা/শাহীন/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন জ ব র রহম ন ম ম ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
রাজধানীর রমনা থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম ও এস এম গোলাম মোস্তফা আজাদকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আজ বুধবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত এনায়েত করিম চৌধুরী ও এস এম গোলাম মোস্তফাকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মাসুদ ও মোস্তফাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে এনায়েত করিম ওরফে মাসুদ করিমকে গত সোমবার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বাস্তবে তিনি র-এর (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এজেন্ট। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার মিশন নিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বর্তমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দুটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। সেটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হলে তাঁর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আরও অনেক নতুন তথ্য জানা যাবে। এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিমসহ আর কারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, সেটি জানার জন্য তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
অপরদিকে এনায়েত করিম চৌধুরীর পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি ৬ সেপ্টেম্বর দেশে এসেছেন, তাঁর আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার কথা ১৪ সেপ্টেম্বর। তিনি বাংলাদেশে এসে গুলশানে অবস্থান করছিলেন।
এনায়েত করিম চৌধুরীর আইনজীবী ফারহান এমডি আরাফ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর মক্কেল কোনোভাবেই জড়িত নন। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তিনি কোনোভাবে যুক্ত নন।
এর আগে গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরীকে (৫৫) সন্দেহভাজন হিসেবে আটকের পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার সকালে রাজধানীর মিন্টোরোড থেকে এনায়েত করিম চৌধুরীকে আটক করা হয়। তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তিনি মার্কিন নাগরিক।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, এনায়েত করিম নিজেকে মাসুদ করিম নামে পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের প্রধান বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। এই পরিচয়ে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখান। ২০১৮ সালের ভোটের আগেও তিনি একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেশের বাইরে বৈঠক করেন।
পুলিশ বলছে, গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরী প্রাডো গাড়িতে করে মিন্টোরোড এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। গাড়ি থামিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে তাঁকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পাশাপাশি সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েত করিম বলেছেন, বর্তমান সরকার পরিবর্তন করে নতুন জাতীয় সরকার গঠনে কাজ করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর দাবি, তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার খুব নাজুক অবস্থায় আছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গেও এই সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে বর্তমান সরকারকে পরিবর্তন করতে বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারি উচ্চ ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।