চাঁদাবাজি দিয়ে যে দলের শুরু তারা বলে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের কী হবে: মির্জা আব্বাস
Published: 18th, March 2025 GMT
বিএনপিকে আওয়ামী লীগের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি দিয়ে যে দলের শুরু, সে দলটা আমাদের বলে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের কী হবে।’
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিল কলোনি সমাজকল্যাণ সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠান ও ইফতার মাহফিলে এ কথা বলেন মির্জা আব্বাস। মতিঝিলের এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কালকে পত্রিকায় দেখলাম, নতুন যে দলটা হইছে, সে ভাইদের বিরুদ্ধে আমজনতা পার্টি যে ভাষায় কথা বলেছে, আমি তো তাদের ভাষায় বলতে পারছি না। ফেসবুকে দেখি, তারা বসুন্ধরার থেকে টাকা নিয়েছে। তাদের কথা বলা হয়েছে, তারা এ কে আজাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, একজন বোন আছে, সে নাকি ইদানীং ব্র্যান্ডের জামাকাপড় পরে ঘুরে বেড়ায়। টাকা পায় কোথায়? ওরাই বলতেছে, আমি কিন্তু বলি নাই। ভাই, আমি কিন্তু বলি নাই। এটা কিন্তু ফেসবুকে প্রেস ব্রিফিংয়ের কথা বলতেছি। তো, চাঁদাবাজি দিয়ে যে দলের শুরু, সে দলটা আমাদের বলে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের কী হবে।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে অনেকে বিএনপিকে আওয়ামী লীগের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। একটু খেয়াল করে দেখবেন, পত্রপত্রিকায় বিএনপি সম্পর্কে ভালো কথা লেখে না। শুধু খারাপ যেটা আছে, ওমুক জায়গায় চান্দাবাজি করেছে বিএনপি, অন্য জায়গায় জামায়াতে ইসলামী যে করেছে, ওটা লেখে না।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘পরিষ্কার করে বলতে চাই, বিএনপির বিরুদ্ধে আপনারা যে অপবাদ দিয়েছেন, আজকে দেশের মানুষ সে অপবাদকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ দেশের কোর্ট রায় দিয়েছেন, বিএনপি কোনো প্রতারকের দল নয়, বিএনপি কোনো ভন্ডের দল নয়, বরং বিএনপির কাঁধে ভর করে অনেক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মন্ত্রী হয়েছেন। এ কথাটা মাথায় রাখতে হবে। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করছেন।’
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘সবাই ভাবতেছে, বিএনপি ক্ষমতায় আসবে কিছুদিন পর, সুতরাং কোণঠাসা করতে হবে। বিএনপিকে আওয়ামী লীগের মতো দেশ থেকে বের করে দিতে হবে। আওয়ামী লীগের তো একটা মামুর বাড়ি ছিল। বিএনপির তো মামুর বাড়িও নাই, চাচার বাড়িও নাই। এটিই তো বাড়ি।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে এই রাজনীতিক বলেন, ‘আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, “বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, কোনো প্রভু নাই।” তাঁকে এক–এগারোর সময়ে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি বলেছেন, “আমি এ দেশ ছেড়ে যাব না।” খালেদা জিয়া দেশ ছেড়ে যাননি, ছেড়ে যাওয়ার মানুষও নন। তিনি এখনো অসুস্থ অবস্থায়। ছেলে, ছেলের বউ, নাতনি পরিবার ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসতে চাইছেন। হয়তো ঈদের পরে ফেরত আসবেন।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপিকে অযথা দোষারোপ করবেন না। সব রাজনৈতিক দল নির্দোষ, একমাত্র দোষ হলো বিএনপির। বিএনপিকে আওয়ামী লীগের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, আর আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ১৭ বছর ঘরছাড়া রেখেছে। আমি ১১ বছর জেল খেটেছি, আমার স্ত্রীর ১৬ বছর জেল হয়েছে।’
মতিঝিল কলোনি সমাজকল্যাণ সমিতির সভাপতি কাজী মাহফুজ এলাহীর সভাপতিত্বে অভিষেক অনুষ্ঠান ও ইফতার মাহিফলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুসহ দলটির নেতারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক ব এনপ ক ক ষমত য় ব এনপ র আম দ র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?