১৭ বছর কারাদণ্ডাদেশের মামলায় খালাস পেলেন লুৎফুজ্জামান বাবর
Published: 19th, March 2025 GMT
অস্ত্র আইনে করা এক মামলায় দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে প্রায় ১৮ বছর আগে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের করা আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে বাবরের ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন। ফলে বাবর এ মামলা থেকে খালাস পেলেন।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ২৮ মে বাবরের গুলশানের বাসার শোবার ঘর থেকে অবৈধ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থানায় ওই বছরের ৩ জুন মামলাটি করা হয়। ঢাকার মেট্রোপলিটন স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল–৯ এ মামলায় ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর রায় দেন। রায়ে দুটি ধারায় লুৎফুজ্জামান বাবরের ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন লুৎফুজ্জামান। শুনানি শেষে এ আপিল মঞ্জুর করে আজ রায় দেওয়া হয়।
আদালতে লুৎফুজ্জামান বাবরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরের সাজা খাটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। আপিল মঞ্জুর হওয়ায় তিনি নির্দোষ প্রামাণিত হলেন ও খালাস পেলেন।
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ২৮ মে লুৎফুজ্জামান বাবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর থেকে কারাগারে ছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মামলায় তাঁর দণ্ড হয়। সেসব মামলায় খালাস ও জামিনের পর ১৬ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
রায়ের পর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ১/১১ সরকারের আমলে লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছিল। এ মামলায় ২০ দিনে অভিযোগপত্র এবং তিন মাসের মধ্যে তাঁকে ১৭ বছরের সাজা দেওয়া হয়। এর সাজার বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছিলেন। আপিল শুনানি শেষে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তারপর তাঁর বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজানো হয়েছিল। যেদিন তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় তারও ছয় দিন পর মামলাটি করা হয়। এ মামলা করার যে প্রক্রিয়া ছিল, সেটিকে অবৈধ বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল