রাজশাহীতে শাশুড়িকে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
Published: 20th, March 2025 GMT
রাজশাহীর বাঘায় শাশুড়িকে হত্যা মামলার আসামি শাকিল আহমেদ ওরফে তছিকুলকে (২৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বুধবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার দিকে বাঘা উপজেলার হেদাতিপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাকিলের বাড়ি বাঘার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে। র্যাব-৫ এর রাজশাহীর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব এসব তথ্য জানিয়েছে। র্যাব জানায়, গত বছরের ২৭ এপ্রিল শ্বাসরোধ করে ও ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে শাকিল তার শাশুড়ি রেহেনা খাতুনকে (৫০) হত্যা করেন। এরপর লাশ ফেলে দিয়েছিলেন পুকুরে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন শাকিল। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব এই ঘটনার ছায়া তদন্ত করছিল।
র্যাব জানায়, ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট রেহেনা খাতুনের মেয়ে মনিকা খাতুনের (২৫) সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল শাকিলের। বিয়ের পর থেকেই মনিকাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন শাকিল। এক পর্যায়ে মনিকা মায়ের বাড়ি চলে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শাকিল। ২০২৪ সালের ২৭ এপ্রিল শাকিল মনিকার মায়ের বাড়িতে গিয়ে তাকে মাথায় আঘাত করে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেন। এরপর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।
বুধবার রাতে এলাকায় ফেরার খবর পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য তাকে বাঘা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
কমিটি নেই, সবাই নেতা
কয়রা উপজেলা বিএনপির কমিটি নেই একযুগ। দীর্ঘদিন ধরে চলেছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। সেটিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৪ মাস আগে। কমিটি না থাকায় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। ভেঙে পড়ছে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাও। কেউ কারও কথা শুনছেন না। অবস্থা এমন, যেন সবাই নেতা– অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীর।
কমিটি না থাকলেও উপজেলার একশ মিটারের মধ্যে পৃথক দুটি কার্যালয় রয়েছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) নুরুল আমিন বাবুল। আরেকটি কার্যালয় চলছে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসানের নেতৃত্বে। নেতৃত্বের এ দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি নেই। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচিতে কার্যক্রমও সীমিত। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি দেওয়ার দাবি দলীয় নেতাকর্মীর।
পৃথক কার্যালয়ের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, উপজেলায় একটি দলীয় কার্যালয় ছিল। পরে স্থানীয় একজন নেতা তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আরেকটি কার্যালয় খুলেছেন; যা সংগঠনবিরোধী কাজ। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কার্যালয়টি বন্ধ করেননি।
দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর আলম বলেন, ৫ আগস্টের পর দুই নেতার বিরোধ স্পষ্ট হয়েছে। আগে দলে বিভক্তি থাকলেও আলাদা কার্যালয় ছিল না। এখন দুটি কার্যালয় থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা।
২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ছিল। এরপর দুই দফায় আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ মোমরেজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও নুরুল আমিন বাবুলকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় জেলা বিএনপি। এরপর থেকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নুরুল আমিনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এ অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু।
এদিকে কমিটি না থাকায় বেশির ভাগ নেতা স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হাট, ঘাট, খাল দখলের অভিযোগ রয়েছে। সরকারি সুবিধায় হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ আছে। এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত কমিটি গঠন করা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সামাদ।
সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বর্তমানে দলীয় কোনো কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছি না। আশা করছি খুব দ্রুতই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হবে। তখন গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের চেষ্টা করব।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, এ মুহূর্তে কয়রায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কমিটি হলে দলীয় সব বিরোধ মিটে যাবে বলে আশা করছি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, কয়রায় কমিটি গঠনের জন্য জেলা বিএনপি থেকে ৫ সদস্যের সার্চ কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটি নেতাকর্মীর বিরোধও নিষ্পত্তি করবে। দ্রুতই ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটি উপহার দেওয়া হবে।