সংযুক্ত আরব আমিরাতে আরো ২৫ জন ভারতীয়কে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে তাদের এই দণ্ড এখনো কার্যকর হয়নি। বৃহস্পতিবার ভারতের পার্লামেন্টে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত মাসেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে একই দিন তিন জন ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল। এবার রাজ্যসভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ জানালেন, আরো ২৫ জন ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বাকি রয়েছে আমিরাতে।
কোন দেশের জেলে কত জন ভারতীয় বন্দি রয়েছেন, তা নিয়ে রাজ্যসভায় জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। তাদের মধ্যে কত জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বাকি রয়েছে এবং তাদের প্রাণ বাঁচাতে কী পদক্ষেপ করছে কেন্দ্র, তা-ও জানতে চাওয়া হয়।
জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন দেশে বর্তমানে মোট ১০ হাজার ১৫২ জন ভারতীয় জেলবন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেক বিচারাধীন বন্দিও রয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয়দের তথ্য দেওয়ার সময়ে নির্দিষ্টভাবে আটটি দেশের কথা জানান কীর্তিবর্ধন। তালিকায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় বন্দি রয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এছাড়া সৌদি আরবে ১১ জন, মালয়েশিয়াতে ছয় জন, কুয়েতে তিন জন এবং ইন্দোনেশিয়া, কাতার, আমেরিকা ও ইয়েমেনে এক জন করে ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বাকি রয়েছে।
গত পাঁচ বছরে (২০২০-২০২৪) কোনো প্রবাসী ভারতীয়ের বিদেশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন করা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। জবাবে মন্ত্রী জানান, কুয়েত এবং সৌদিতে ২০২৪ সালে তিন জন করে ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। ২০২৩ সালে কুয়েত এবং সৌদিতে পাঁচ জন করে ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এছাড়া ২০২৩ সালে মালয়েশিয়ায় এক জন এবং ২০২৪ সালে জিম্বাবুয়েতে এক জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট র মন ত র আম র ত
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ