কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে সহজেই বিভিন্ন বিষয়ের ছবি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা যায়। কিন্তু এর মাধ্যমে ভুয়া ছবি তৈরি করছেন অনেকেই। তাই বিষয়টি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে প্রযুক্তি-দুনিয়ায়। এ সমস্যা সমাধানে কেউ অনলাইনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি পোস্ট করলেই সেগুলোতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জলছাপ যুক্ত করে দেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। শুধু তা–ই নয়, নিজেদের তৈরি ছবির মেধাস্বত্ব নিশ্চিত করতেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছবিতে জলছাপ যুক্ত করে থাকে। কিন্তু গুগলের জেমিনি এআই চ্যাটবট কাজে লাগিয়ে সহজেই ছবিতে থাকা জলছাপ মুছে ফেলা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। এর ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে তৈরি ছবিগুলো চিনতে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি অন্য প্রতিষ্ঠানের তৈরি ছবি ব্যবহারের কারণে মেধাস্বত্ব আইন ভঙ্গের আশঙ্কা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনগুগল ফটোজে সম্পাদনা করা ছবি চেনাতে নতুন যে সুবিধা চালু হচ্ছে০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্প্রতি খুদে ব্লগ লেখার সাইট এক্স (সাবেক টুইটার) এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডিটের একাধিক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, জেমিনি ২.

০ ফ্ল্যাশ সহজেই গেটি ইমেজেসসহ বিভিন্ন স্টক ফটো ওয়েবসাইটের ছবিতে থাকা জলছাপ মুছে ফেলতে পারে। শুধু ছবির জলছাপ মুছে ফেলা নয়, জেমিনি ২.০ ফ্ল্যাশের লেখা থেকে ছবি তৈরির (টেক্সট-টু-ইমেজ) প্রযুক্তির ওপর গুগলের যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে এটি সরাসরি তারকাদের ছবি বা মেধাস্বত্ব করা বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করতে পারে।

প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেমিনি ২.০ ফ্ল্যাশের পরীক্ষামূলক ছবি তৈরির সুবিধাটি অন্যান্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির তুলনায় নিখুঁতভাবে জলছাপ মুছে ফেলতে পারে। তবে গুগল জানিয়েছে, জেমিনি ২.০ ফ্ল্যাশের ছবি তৈরির সুবিধাটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং এটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। বর্তমানে এ প্রযুক্তি শুধু সীমিত কিছু ডেভেলপার ব্যবহার করতে পারছেন।

আরও পড়ুনএআইয়ে তৈরি ছবি শনাক্ত করবেন কীভাবে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তৈরি ছবি ও লেখা শনাক্তের জন্য গুগল ইতিমধ্যে কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৪ সালে গুগল ডিপমাইন্ড কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি লেখা শনাক্ত করতে সিনথআইডি টেক্সট নামের জলছাপ দেওয়ার টুল চালু করে। গত মাসে গুগল ঘোষণা দেয়, তাদের গুগল ফটোজ অ্যাপে সিনথআইডি প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সম্পাদিত ছবি শনাক্ত করতে পারবে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

আরও পড়ুনকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি ছবি বিভ্রান্তি তৈরি করছে যেভাবে০১ অক্টোবর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ত র ম ব দ ধ মত ত ব যবহ র ক ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ