সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা এলাকায় নতুন করে আগুন লেগেছে। আজ রোববার সকালে সেখানে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। পরে বনকর্মী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা মিলে ফায়ারলাইন কাটতে শুরু করেন।

ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) বিপুলেশ্বর দেবনাথ আজ বেলা পৌনে একটায় প্রথম আলোকে বলেন, ধানসাগর ও গুলিশাখালী বন টহল ফাঁড়ির মাঝামাঝি তেইশের ছিলা এলাকায় এখন আগুন জ্বলছে। পৌনে দুই ঘণ্টা ধরে সেখানে বন বিভাগ কাজ করছে। আগুন বেশ কিছুটা ছড়িয়েছে। তবে কতখানি এলাকায় আগুন ছড়িয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি বন বিভাগ।

গতকাল শনিবার সকালে কলমতেজী বনে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে দুপুর থেকে বন বিভাগ, সিপিজি, ভিটিআরটি, টাইগার টিমের শত শত লোকজন কাজ শুরু করেন। বিকেলের মধ্যে ফায়ারলাইন কাটা শেষ করে বন বিভাগ। সন্ধ্যার আগে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গেলেও পানি দিতে পারেনি। পানির উৎস দূরে হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। রাত ৯টা থেকে বন বিভাগের নিজস্ব পাম্প ও পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি দেওয়া শুরু হয়। রাতভর চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে আজ সকালে কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকা থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে তেইশের ছিলা এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা যায়।

আরও পড়ুনরাতভর চেষ্টায় সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, নতুন এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী৩ ঘণ্টা আগে

স্থানীয় বনজীবী আজিজুল হাওলাদার বলেন, বনসংলগ্ন এলাকায় কিছু ব্যক্তি নিজের স্বার্থে বারবার আগুন লাগাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার সুবিধার্থে একটি মহল বারবার সুন্দরবনে আগুন দেয়। তারা শিং, মাগুরসহ এই প্রজাতির জিওল মাছ ধরতে বনে আগুন দেয়। বনের নতুন এলাকায় আগুন বেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুনসুন্দরবনে থেকে থেকে জ্বলছে আগুন, রাত নামায় পানি দেওয়া যায়নি১৮ ঘণ্টা আগে

সুন্দরবন–পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, কলমতেজীতে লাগা আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। নতুন করে তেইশের ছিলা নামক স্থানে আগুন লেগেছে। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ড্রোন ও জিপিআরএস ট্রাকিং এর মাধ্যমে ওই আগুন দেখা গেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন দরবন বন ব ভ গ কলমত জ ন এল ক এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ

জীব ও প্রাণ-বৈচিত্র্য রক্ষার অংশ হিসেবে সুন্দরবনকে বিশ্রাম দিতে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। এই সময়ে বনজীবী থেকে শুরু করে পর্যটক, কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবন ঘুরেছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন। তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা যুবদল ও মৎস্যজীবী দলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী।

গত শুক্রবার তারা ভ্রমণে যান। সুন্দরবনের কলাগাছিয়া টহল ফাঁড়িতে অবস্থানকালে নিজেদের ছবি রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে প্রবেশ নিয়ে জানতে চাইলে যুবদলের সাবেক নেতা আমিনুর রহমান জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব সুন্দরবনে যাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এডিসি পদমর্যাদার একজনের মাধ্যমে বন বিভাগের কাছ থেকে ১০ জনের অনুমতি মেলে। ওই দলে তিনি যুক্ত হওয়ার পর স্থানীয় কিছু কর্মী-সমর্থক তাঁর সঙ্গে ট্রলারে উঠে পড়েন। এ সময় তাদের আর নামিয়ে দেওয়া যায়নি। 

উপসচিব বা তাঁর জন্য নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সুন্দরবনে যাওয়া উচিত ছিল কিনা– জানতে চাইলে আমিনুর বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা চলার তথ্য আমাদের জানানো হয়নি।’ কথা বলার জন্য ওই উপসচিবের নাম ও যোগাযোগ নম্বর চাইলে তিনি দেননি।

এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের জিয়াউর রহমান বলেন, এক উপসচিবের একান্ত সচিব (পিএস) পরিচয়ে ১০ জনের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণের অনুমতি চাওয়া হয়। অনেকটা ‘অনুরোধে ঢেঁকি গেলা’র মতো করে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একই সঙ্গে কয়েক রাজনৈতিক ব্যক্তির সুন্দরবনে যাওয়ার বিষয়টি তারা জানতে পারেন। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের এমন আবদারে তারা অসহায় হয়ে পড়েন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ