সুন্দরবনে নতুন এলাকায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাটা হচ্ছে ফায়ারলাইন
Published: 23rd, March 2025 GMT
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকার আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা এলাকায় নতুন করে আগুন লেগেছে। আজ রোববার সকালে সেখানে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। পরে বনকর্মী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা মিলে ফায়ারলাইন কাটতে শুরু করেন।
ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) বিপুলেশ্বর দেবনাথ আজ বেলা পৌনে একটায় প্রথম আলোকে বলেন, ধানসাগর ও গুলিশাখালী বন টহল ফাঁড়ির মাঝামাঝি তেইশের ছিলা এলাকায় এখন আগুন জ্বলছে। পৌনে দুই ঘণ্টা ধরে সেখানে বন বিভাগ কাজ করছে। আগুন বেশ কিছুটা ছড়িয়েছে। তবে কতখানি এলাকায় আগুন ছড়িয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি বন বিভাগ।
গতকাল শনিবার সকালে কলমতেজী বনে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে দুপুর থেকে বন বিভাগ, সিপিজি, ভিটিআরটি, টাইগার টিমের শত শত লোকজন কাজ শুরু করেন। বিকেলের মধ্যে ফায়ারলাইন কাটা শেষ করে বন বিভাগ। সন্ধ্যার আগে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গেলেও পানি দিতে পারেনি। পানির উৎস দূরে হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। রাত ৯টা থেকে বন বিভাগের নিজস্ব পাম্প ও পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি দেওয়া শুরু হয়। রাতভর চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে আজ সকালে কলমতেজী টহল ফাঁড়ি এলাকা থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে তেইশের ছিলা এলাকায় ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা যায়।
স্থানীয় বনজীবী আজিজুল হাওলাদার বলেন, বনসংলগ্ন এলাকায় কিছু ব্যক্তি নিজের স্বার্থে বারবার আগুন লাগাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার সুবিধার্থে একটি মহল বারবার সুন্দরবনে আগুন দেয়। তারা শিং, মাগুরসহ এই প্রজাতির জিওল মাছ ধরতে বনে আগুন দেয়। বনের নতুন এলাকায় আগুন বেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুনসুন্দরবনে থেকে থেকে জ্বলছে আগুন, রাত নামায় পানি দেওয়া যায়নি১৮ ঘণ্টা আগেসুন্দরবন–পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, কলমতেজীতে লাগা আগুন এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। নতুন করে তেইশের ছিলা নামক স্থানে আগুন লেগেছে। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে ড্রোন ও জিপিআরএস ট্রাকিং এর মাধ্যমে ওই আগুন দেখা গেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দরবন বন ব ভ গ কলমত জ ন এল ক এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।