এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণে সর্বোচ্চ সক্ষমতার যুগে বিমান
Published: 30th, March 2025 GMT
এয়ারক্রাফটের রক্ষণাবেক্ষণ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সক্ষমতার যুগে প্রবেশ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এখন আর প্রয়োজন হচ্ছে না বিদেশি ইঞ্জিনিয়ারের। ফলে অর্থ সাশ্রয়ের আলো দেখছে বিমান কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যে দীর্ঘ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বোয়িং-৭৩৭ মডেলের মতো আধুনিক মানের একটি এয়ারক্রাফটের ডি-চেক এবং ফুয়েল ট্যাংকের সংযোজনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে দক্ষ বিমান কর্মীরা বলে বিমান সংশ্লিষ্টরা জানান।
তারা বলেন, এরমধ্য দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত এ উড়োজাহাজ সংস্থায় দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি সাশ্রয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আধুনিক মানের যে কোনো ধরণের এয়ারক্রাফটের ইঞ্জিন রক্ষণাবেক্ষণসহ যাবতীয় কাজ সফল ভাবে করতে এখন আর প্রয়োজন হচ্ছে না বিদেশি কোনো ইঞ্জিনিয়ারের। এর ফলে মেরামতের জন্য এখন আর বিদেশে নিতে হবে না বিমানের কোনো এয়ারক্রাফট।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের দাবি, নিজস্ব সক্ষমতায় দেশেই এখন বোয়িং ৭৩৭ এর মতো আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের ডি-চেক সফলভাবে সম্পন্ন করতে দক্ষ জনবল রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে। সম্প্রতি জাতীয় পতাকাবাহী এ বিমান সংস্থাকে নিয়ে বর্তমান সরকারের উচ্চ মহলে নানা আলোচনা–সমালোচনা থাকলেও যাত্রী সেবার মান বিশ্বের নামি–দামি এয়ারলাইন্সের চেয়ে কোনো অংশ কম নয় বিমানের। উন্নত যাত্রীসেবা, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে উঠেছে বিমানে।
জানা যায়, বিমানের দুই যুগ পুরনো বোয়িং-৭৩৭ মডেলের একটি উড়োজাহাজের (এস-২ এএফএম) ‘ডি-চেক পুরোপুরি সম্পন্ন করছে নিজেদের দক্ষ জনবল দ্বারা। নিজেদের এ ব্যাপক কর্মযজ্ঞ, প্রচেষ্টা আর অর্থ সাশ্রয়ের কথা জানায় বিমান কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, বিদেশের বদলে দেশেই এখন এয়ারক্রাফটের ডি-চেক সফলভাবে সম্পন্ন করে বিপুল অর্থ সাশ্রয় করছে দক্ষ জনবল। এর আগে এয়ারক্রাফটের সি–চেক সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করে দক্ষ বিমান কর্মীরা।
এ ব্যাপারে বিমানের প্রকৌশল শাখার কয়েক কর্মকর্তা জানান, প্রায় পাঁচ মাস ধরে বোয়িং ৭৩৭ এর মতো আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের ডি–চেক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল একদল কর্মকর্তা–কর্মচারী। প্রায় ৫ মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এয়ারক্রাফটের ডি–চেক সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হন তারা। বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট পরিদপ্তর নিজস্ব সক্ষমতায় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফটের এ চেক সফলভাবে সম্পন্ন করে প্রায় ২ মিলিয়ন ইউএস ডলার সাশ্রয় হয়েছে বিমানের।
এ ব্যাপারে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড.                
      
				
তিনি বলেন, এয়ারক্রাফটের ডি–চেকসহ যাবতীয় কাজ এখন বিমানের হ্যাঙ্গারেই করা সম্ভব হচ্ছে। এ কাজে বিমানে রয়েছে দক্ষ জনবল। উন্নত যাত্রী সেবায় বিশ্বের উন্নত এয়ারলাইন্সের চেয়ে কোনো অংশে কম নেই বিমানে।
বিমানের সিইও আরও বলেন, যাত্রীদের জন্য চলতি বছরই বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ চালু করছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। এ টার্মিনাল চালুর শুরুতেই ২ বছর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিবে বিমান। এ লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বিমানে। এরইমধ্যে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতিসহ উন্নতমানের বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট বিদেশ থেকে ক্রয় করা হয়েছে। পাশাপাশি নিয়োগ করা হচ্ছে দক্ষ জনবল।
বিমান কর্মকর্তারা বলেন, বিমানবন্দর থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবারমান উন্নত হলে পর্যায়ক্রমে এ কাজ ফের পাবে বিমান। এ চিন্তা মাথায় রেখে কাজ করছে বিমান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ক সফলভ ব কর মকর ত ব ম ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে।
যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে।  
রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে। 
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”
তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।
শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’ 
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’
ঢাকা/শহিদুল/এস