ময়মনসিংহে প্রচারে বিঘ্ন ঘটায় সিনেমা হলে দর্শকদের ভাঙচুর
Published: 2nd, April 2025 GMT
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে প্রচারে বিঘ্ন ঘটায় সিনেমা হলে ভাঙচুর চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধ দর্শকেরা। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ মহালে সোনালি টকিজ সিনেমা হলে ঈদ উপলক্ষে ‘বরবাদ’ সিনেমা চলছে। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হওয়া শোতে বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শকেরা আসেন। ডিসি, বেলকনি ও প্রথম শ্রেণির টিকিট বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু সিনেমার মাঝপথে সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সিনেমা প্রদর্শন থেমে যায়। বেশ কিছু সময় নিয়ে যান্ত্রিক ত্রুটি ঠিক করতে না পারায় দর্শকেরা হলের ভেতরে রাত সাড়ে ৮টা থেকে ভাঙচুর শুরু করেন। আধা ঘণ্টা ধরে চলে এই অবস্থা। এই সময় দর্শকেরা সিনেমা হলে বসার বেঞ্চ, চেয়ার ও টিকিট বিক্রির কক্ষে ভাঙচুর চালান। পোস্টার ছিঁড়ে হলের নিচতলায় অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় দর্শকদের ধাওয়া দেন স্থানীয় একদল যুবক। তখন তাঁরা এলাকা ছেড়ে যান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
কয়েকজন দর্শকের দাবি, যান্ত্রিক ত্রুটির সময় হল কর্তৃপক্ষ কলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে চলে যাওয়ায় দর্শকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর চালান।
ঘটনার খবর পেয়ে সিনেমা হলে গেলে হলটি পরিচালনা করা হারুনুর রশিদকে পাওয়া যায়নি। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিশ্রামে আছেন বলে হলের কর্মীরা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিনেমা হলের একজন কর্মী বলেন, তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন। উত্তেজিত দর্শক তাঁকে মারতে তেড়ে এসেছিলেন। তিনি নিয়ন্ত্রণকক্ষের লাইট বন্ধ করে দরজায় তালা লাগিয়ে ভেতরে বসে থাকায় বেঁচে গেছেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাস বলেন, সিনেমা চলার সময় সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সেটি মেরামত করতে না পারায় কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া করে আনতে যায়। কিন্তু বাইরে কলাপসিবল গেটে তালা দেখে দর্শকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙচুর চালান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পোশাক শ্রমিকরা। এ ঘটনায় শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি নিক্ষেপ করেছে।
বুধবার সকাল ৯টার থেকে গাজীপুরা এলাকার সৃজন্স ড্রেসেস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ শুরু করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারখানার কয়েক'শ শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে শিল্প পুলিশ-২ এবং টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ কয়েক দফা চেষ্টা করেও শ্রমিকদের সরাতে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং গরম পানি ছিটিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।
বিক্ষোভরত শ্রমিক শিল্পি আক্তার বলেন, ঈদের আগে আমাদের অর্ধেক বেতন আর অর্ধেক বোনাস দিয়ে কারখানা ছুটি দেয়। বলা হয়েছিল, ঈদের পরেই বাকী টাকা পরিশোধ হবে। কিন্তু এখনও কিছুই পাইনি। বাড়িওয়ালা তো আশ্বাসে ভাড়া নেয় না, দোকানও বাকির টাকা চায়। সরকার যদি আমাদের পাশে না দাঁড়ায়, আমরা কোথায় যাবো?
আরেক শ্রমিক রহমত বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসে ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ আমাদের ওপর গরম পানি ছুড়ে দেওয়া হলো। এভাবে কি শ্রমিকের ন্যায্য দাবি দমন করা যায়?
শ্রমিকদের দাবি, কারখানার মালিক পক্ষ গত ২০ এপ্রিল কিছু বোনাস পরিশোধ করলেও ২৮ এপ্রিলের মধ্যে পুরো বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাখেনি। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ–২ এর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।