মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩,৬০০
Published: 8th, April 2025 GMT
মিয়ানমারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে এবং আহত হয়েছে ৫ হাজার ১৭ জন। এখনও ১৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে সোমবার (৭ এপ্রিল) দেশটির রাজ্য প্রশাসনিক কাউন্সিল জানিয়েছে। খবর আনাদোলু এজেন্সির।
গত শুক্রবার, ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প মিয়ানমারের সাগাইং শহরসহ আশপাশের গ্রামীণ এলাকা ধ্বংস করে দেয়। ভূমিকম্পের পর সাগাইং শহরের অবস্থা ভয়াবহ হয়ে ওঠে। শহরের ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রায় প্রতিটি বাড়ি ও অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে। ভূমিকম্পে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষের মধ্যে চাপা পড়ে রয়েছে বহু মানুষের লাশ। শহরজুড়ে মৃত্যুর গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে এবং সবকিছু ধ্বংসের পর দৃশ্যমান কেবল ধ্বংসস্তূপ।
মিয়ানমারের রাজ্য প্রশাসনিক কাউন্সিল জানিয়েছে, নিখোঁজদের অনুসন্ধানে উদ্ধারকারী দলগুলো এখনও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত
মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩,৩৫৪
সিনহুয়া নিউজের তথ্যানুসারে, জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের যুদ্ধ ও সংঘাতের কারণে বিপর্যস্ত সাগাইং অঞ্চলে মানবিক প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। সামরিক সরকারের অনুমোদন না থাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান তেমন অগ্রসর হতে পারেনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয় জানিয়েছে, জান্তা সরকার ভূমিকম্প-কবলিত এলাকায় সাহায্য সরবরাহ সীমিত করছে, যেখানে সম্প্রদায়গুলো সেনা শাসনকে সমর্থন করেনি।
২০২১ সালে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে সামরিক বাহিনী মিয়ানমার পরিচালনা করতে লড়াই করছে।
জাতিসংঘ বলছে, অভ্যুত্থানের পর সৃষ্ট গৃহযুদ্ধ ৩০ লাখের বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। ব্যাপক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে এবং জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন। এ অবস্থায় ২৮ মার্চের ভূমিকম্পের ফলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে।
মিয়ানমার নাউ-এর মতে, মিয়ানমারে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তরা অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের জন্য স্থানীয় অলাভজনক জরুরি প্রতিক্রিয়া দলের ওপর নির্ভর করছেন।
সাগাইংয়েই কমপক্ষে ৬৯৩ জন মানুষ মারা গেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)।
ভারী যন্ত্রপাতির ঘাটতি এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া বাসিন্দাদের ধীর গতিতে সাড়া দেওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান বিলম্বিত হওয়ায় নিহতদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।
মিয়ানমার নাউ-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একজন বাসিন্দা বলেছেন, “উদ্ধার মিশন শুধুমাত্র কায়িক শ্রম দ্বারা সম্পন্ন করা হচ্ছে। কারণ ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য তেমন কোনো ভারী যন্ত্রপাতি নেই। ফলস্বরুপ, অনেক মানুষ অপ্রেয়োজনীয়ভাবে প্রাণ হারিয়েছেন।”
মিয়ানমার নাউ-এর মতে, স্বেচ্ছাসেবকদের নেতৃত্বে উদ্ধারকারী দলগুলোকে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান তদারকির জন্য জান্তা অফিসে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ঠিকানার মতো বিস্তারিত তথ্য জমা দিয়ে সামরিক সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ ম কম প ভ ম কম প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে একটি মসজিদে ঢুকে ভাঙচুর ও মুসল্লিদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে নেশাগ্রস্ত তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে মসজিদ কমিটির সভাপতি আশরাফ আলী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারোমারী বাজার এলাকার উত্তর বাতকুচি ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন বাইতুল নূর জামে মসজিদে হামলা ও আসবাবপত্র ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের গুলিতে যুবক নিহত
লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তর বাতকুচি গ্রামের জহুর উদ্দিনের তিন ছেলে ফরহাদ মিয়া, রুবেল মিয়া ও ফারুক মিয়া নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করেন। তারা ইমাম শফিকুল ইসলামের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আজ থেকে এই মসজিদে আর আযান দেওয়া যাবে না। আমাদের অনুমতি ছাড়া আর আযান হবে না।’ ইমাম এই কথার প্রতিবাদ করলে তারা তাকে ভয়ভীতি দেখান। আত্মরক্ষার্থে ইমাম পালিয়ে গেলে অভিযুক্তরা মসজিদের মাইক সেট, বৈদ্যুতিক বোর্ড, টিনের বেড়াসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন।
এসময় হাবিবুর রহমান ও কাজল মিয়া নামে দুই মুসল্লি বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকেও মারধর করেন নেশাগ্রস্তরা। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। পরে আহতদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আশরাফ আলী বলেন, “এই ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং এ নিয়ে থানায় একটি লখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
নালিতাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, “মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ