সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ডিপ্লোমা কোটা বাতিলের দাবি
Published: 17th, April 2025 GMT
চাকরিতে ডিপ্লোমা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের (সিইক) শিক্ষার্থীরা।
ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শতভাগ আসন নিশ্চিতের দাবিকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) কলেজ ক্যাম্পাসে এ বিক্ষোভ করেন তারা।
এ সময় তারা ‘ডিপ্লোমাদের দৌরাত্ম, থামিয়ে দিতে হবে’, ‘কোঠা প্রথা নিপাক যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
বিক্ষোভে সমাবেশে তারা প্রকৌশল নবম গ্রেডে সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়া, কারিগরি দশম গ্রেডে উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত করা এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী ব্যতীত অন্য কেউ প্রকৌশলী পদবি ব্যবহার করতে পারবে না মর্মে আইন পাশ করে গেজেট প্রকাশ করার দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের প্রভাবশালী গোষ্ঠীর কারণে প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারীরা পদোন্নতি ও নিয়োগে ন্যায্যতা থেকে অনেকদিন ধরেই বঞ্চিত হয়ে আসছেন। দীর্ঘ ৪ বছর কঠিন পাঠ্যক্রম, ল্যাব, থিসিস ও প্রজেক্টের মধ্য দিয়ে পাস করা বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা চাকরির বাজারে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
সরকারি চাকরির দশম গ্রেডে একচেটিয়া শতভাগ ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ এবং নবম গ্রেডে পদোন্নতিতে ৩৩.
তারা বলেন, সরকারি নিয়োগে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রাধান্য ও বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীদের উচ্চতর পদে প্রবেশে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা পেশাগত মর্যাদা ও ন্যায্যতা লঙ্ঘন করে। কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল। অভ্যুত্থানের পরেও চাকরি ক্ষেত্রে এ রকম অন্যায্য কোটা থাকা জুলাই শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি। তাই অনতিবিলম্বে এ কোটা প্রথা বাতিল চান তারা।
তারা আরো বলেন, জুলাই বিপ্লব ছিল সব স্তরের বৈষম্য দূরীকরণের আন্দোলন। বিএসসি প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে চলমান দীর্ঘদিনের বৈষম্যের অবসান আজ সময়ের দাবি। ডিপ্লোমাধারীরা দশম গ্রেড কুক্ষিগত করে রেখেছে এবং পরবর্তীতে ৩৩ শতাংশ বা বেশি কোটা নিয়ে সরাসরি নবম গ্রেডে পদোন্নতি পাচ্ছে, যা বিসিএস সমমানের।
সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে আমরা প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেদের আসন নিশ্চিত করি। কিন্ত ডিপ্লোমা হোল্ডাররা প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তাদের শতভাগ আসন নিশ্চিতের অযৌক্তিক দাবি জানাচ্ছে।
ঢাকা/আইনুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নবম গ র ড ব এসস
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস