ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা ও বর্বরতার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে দেওভোগের সামাজিক সংগঠন ‘সন্ধি।’ শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বাদ আছর শহরের চাষাঢ়াস্থ নূর মসজিদের সামনে সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা এ মানববন্ধন করে।

সংগঠনের সভাপতি মো: নূরউদ্দিন সাগরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাজী মো: খালিদ হোসেন পলাশের সঞ্চালনায় মানবন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক আজকের নীরবাংলা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এসএম ইমদাদুল হক মিলন, দৈনিক বিজয় পত্রিকার সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সেন্টু, হিউম্যান এইড  ইন্টারন্যাশনাল জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ক্লাব ট্রাস্ট জেলা শাখার সভাপতি এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, আইন সহায়তা তথ্য মানবাধিকার ফাউন্ডেশন জেলা শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম আরজু, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব নারায়ণগঞ্জ শাখার সভাপতি কাজী আনিসুল হক হীরা, হিউম্যান এইড ইন্টারন্যাশনাল জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সোহেল।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দরা বলেন, ফিলিস্তিন মুসলমান শুধুমাত্র এ জন্য আমরা এখানে দাঁড়াইনি। আমরা তথা সন্ধি সামাজিক সংগঠন বরাবরই মানুষের পক্ষে, মানবতার পক্ষে।

এখানে মুসলমান না হয়ে যদি অন্যধর্মের মানুষও গণহত্যার শিকার হতো, আমরা তাদের পক্ষেই দাঁড়াতাম। এখানে গণহত্যা হচ্ছে যেটা মানুষ হিসেবে আমাদের ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এক হয়ে এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি ফিলিস্তিনির মানুষের পক্ষে কোন ধর্মের পক্ষে নয়।

বক্তারা আরও বলেন, আমাদের দাবি সরকারের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনির হয়ে আর্ন্তজাতিকভাবে এর প্রতিবাদ জানাতে হবে। জাতিসংঘে এটা নিয়ে নিন্দার প্রস্তাব তুলতে হবে।

যুদ্ধবিরতি কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ৭১-এ যেভাবে সারাবিশে^ আমাদের পক্ষে একটা জনমত গড়ে তোলা হয়েছিলো, ঠিক একই ভাবে ফিলিস্তিনির পক্ষেও জনমত গড়ে তোলতে হবে।

বক্তব্য শেষে ফিলিস্তিনিদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। পরে তারা শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিলও বের করেন। বিক্ষোভ মিছিলে ‘নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার স্লোগান’ ‘ইসরায়েলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ‘তুমি কে আমি কে, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন’, ইত্যাদি স্লোগান দেন সন্ধি সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।

এসময় তাদের এ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে গোটা নগরী। পরে মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পশ্চিম দেওভোগস্থ সংগঠনটির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, মো: রায়হান উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মো: শাহাজালাল শাকিল, সাধারণ সম্পাদক মো: সোহেল, মহানগর প্রজন্মদরের যুগ্ম আহ্বায়ক মো: সানি খোকন, মো: হান্নান, মো: আদিম, আশরাফ উদ্দিন রাসেল, সন্ধি সামাজি সংগঠনের সহ সভাপতি মো: মমিনুল ইসলাম, সুমন রায়, মো: সালাউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান অভি, ক্রীড়া সম্পাদক মো: অভি চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক টুটুল চন্দ্র শীল, কোষাধ্যক্ষ শংকর দাস, কার্যকরী সদস্য মো: রনি, মাসুদুর রহমান, মো: সুমন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, মো: নিয়াজ, মো: সোহাগ, মো: মুকুল, মো: রতন, আব্দুর রাজ্জাক, মিলন, মো: মাহাবুব প্রমূখ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স গঠন র ল ইসল ম গণহত য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ

আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১ মে থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের সরকারি ছুটি। এই তিন দিনে রাজধানী ঢাকায় তিনটি দল ও সংগঠন পৃথক জনসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এসব কর্মসূচি ঘিরে ছুটির তিন দিনে রাজধানীতে ব্যাপক জনসমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে।

১ মে বৃহস্পতিবার ঢাকার নয়াপল্টনে শ্রমিক সমাবেশ করবে বিএনপি। পরদিন ২ মে শুক্রবার আওয়ামী লীগের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে সমাবেশ করবে। ৩ মে শনিবার নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ বিভিন্ন দাবিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বেলা দুইটায় ঢাকার নয়াপল্টনে শ্রমিক সমাবেশ করবে বিএনপি। এতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি থাকবেন। তিনি লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন। এ ছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। এই সমাবেশ আয়োজনে যুক্ত রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রধান উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম খান ও শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। ঢাকা মহানগরের বাইরে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ আশপাশের জেলা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা সমাবেশে অংশ নেবেন।

নজরুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, সমাবেশটি অনেক বড় করার। আশা করি, আপনারা সেদিন উপস্থিত থাকলে দেখতে পাবেন।’

পরদিন শুক্রবার বেলা তিনটায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে সমাবেশ করবে গণ–অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল এনসিপি। দলটির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, এই কর্মসূচি থেকে গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিস্ট দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, এর রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা এবং নিবন্ধন বাতিল করার দাবি জোরালোভাবে জানানো হবে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড, জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ও ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদির আগমনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের মতো বড় হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচারও দাবি করা হবে।

২১ এপ্রিল থেকে দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিলের মতো কর্মসূচি করছে এনসিপি। শুক্রবারের সমাবেশে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে বলে জানান এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির।

এনসিপির সমাবেশের পরদিন শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশের দিকে অনেকের দৃষ্টি। এক মাস ধরে সংগঠনটি সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআন-সুন্নাহবিরোধী প্রতিবেদনসহ কমিশন বাতিল, সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল, ফ্যাসিবাদের আমলে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যাসহ সব হত্যার বিচার এবং ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের’ দাবিতে এই মহাসমাবেশ ডাকা হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল সকালে খিলগাঁও জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম মাদ্রাসায় মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সভা হয়।

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয়, মহানগর ও আঞ্চলিক কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে বেলা ১১টায় মহাসমাবেশের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে নেতারা সংবাদ সম্মেলন করেন।

হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, এই মহাসমাবেশে তাঁদের মুখ্য দাবি হবে মূলত চারটি। এর মধ্যে প্রধান দাবি হচ্ছে, অনতিবিলম্বে হেফাজত নেতাদের নামে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার। কারণ, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এই মামলাগুলোকে পুঁজি করে হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে। ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে, তারাও একই কাজ করতে পারে। তাই মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে তাঁদের মুখ্য দাবি। সংগঠনটির হিসাবমতে, সারা দেশে হেফাজত নেতাদের নামে প্রায় ৩০০টি মামলা রয়েছে।

এ ছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, ২০২১ সালের মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফর ঘিরে হত্যাকাণ্ড, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার। এরপর যথাক্রমে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল, সংবিধানের প্রস্তাবনায় আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা, ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের দাবিগুলো থাকবে।

উল্লেখ্য, এক যুগ আগে ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে যৌথ বাহিনীর রক্তক্ষয়ী অভিযানের ঘটনা ঘটে।

আগামী ৫ মে সোমবার সরকারি কর্মদিবস। সপ্তাহের মাঝখানে রাজধানীতে সমাবেশ করলে বড় ধরনের জনদুর্ভোগে সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সে জন্য হেফাজতে ইসলাম ছুটির দিনে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া হেফাজত ৫ মে বিশেষ দিবস হিসেবে পালন করে না। এ ধরনের দিবস পালন ইসলামের নীতিবিরোধী। তাই সবকিছু বিবেচনা করে ৩ মে মহাসমাবেশ করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সংগঠনের নেতাদের নামে থাকা অতীতের মামলা-মোকদ্দমাগুলো প্রত্যাহারে সরকারের ওপর চাপ তৈরি, একই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক প্রভাব দৃষ্টিগ্রাহ্য করারও একটি লক্ষ্য রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্পের প্রতি অসন্তুষ্ট বেশির ভাগ মার্কিন, অর্থনীতি ও অভিবাসন ইস্যুতে অসন্তোষ বাড়ছে
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত
  • রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ
  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • ইসলামবিরোধী প্রস্তাবনা রুখে দেওয়া হবে: মামুনুল হক
  • শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
  • ‘বিশ্বের নজরদারির মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল’
  • রাখাইনে করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ হেফাজতের
  • ইয়েমেনে মার্কিন হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ইরানের
  • নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি