গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে সন্ধির মানববন্ধন ও মিছিল
Published: 18th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা ও বর্বরতার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে দেওভোগের সামাজিক সংগঠন ‘সন্ধি।’ শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বাদ আছর শহরের চাষাঢ়াস্থ নূর মসজিদের সামনে সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা এ মানববন্ধন করে।
সংগঠনের সভাপতি মো: নূরউদ্দিন সাগরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাজী মো: খালিদ হোসেন পলাশের সঞ্চালনায় মানবন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক আজকের নীরবাংলা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক এসএম ইমদাদুল হক মিলন, দৈনিক বিজয় পত্রিকার সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সেন্টু, হিউম্যান এইড ইন্টারন্যাশনাল জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ক্লাব ট্রাস্ট জেলা শাখার সভাপতি এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, আইন সহায়তা তথ্য মানবাধিকার ফাউন্ডেশন জেলা শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম আরজু, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব নারায়ণগঞ্জ শাখার সভাপতি কাজী আনিসুল হক হীরা, হিউম্যান এইড ইন্টারন্যাশনাল জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সোহেল।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দরা বলেন, ফিলিস্তিন মুসলমান শুধুমাত্র এ জন্য আমরা এখানে দাঁড়াইনি। আমরা তথা সন্ধি সামাজিক সংগঠন বরাবরই মানুষের পক্ষে, মানবতার পক্ষে।
এখানে মুসলমান না হয়ে যদি অন্যধর্মের মানুষও গণহত্যার শিকার হতো, আমরা তাদের পক্ষেই দাঁড়াতাম। এখানে গণহত্যা হচ্ছে যেটা মানুষ হিসেবে আমাদের ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এক হয়ে এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি ফিলিস্তিনির মানুষের পক্ষে কোন ধর্মের পক্ষে নয়।
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের দাবি সরকারের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনির হয়ে আর্ন্তজাতিকভাবে এর প্রতিবাদ জানাতে হবে। জাতিসংঘে এটা নিয়ে নিন্দার প্রস্তাব তুলতে হবে।
যুদ্ধবিরতি কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ৭১-এ যেভাবে সারাবিশে^ আমাদের পক্ষে একটা জনমত গড়ে তোলা হয়েছিলো, ঠিক একই ভাবে ফিলিস্তিনির পক্ষেও জনমত গড়ে তোলতে হবে।
বক্তব্য শেষে ফিলিস্তিনিদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। পরে তারা শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিলও বের করেন। বিক্ষোভ মিছিলে ‘নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার স্লোগান’ ‘ইসরায়েলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ‘তুমি কে আমি কে, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন’, ইত্যাদি স্লোগান দেন সন্ধি সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
এসময় তাদের এ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে গোটা নগরী। পরে মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পশ্চিম দেওভোগস্থ সংগঠনটির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, মো: রায়হান উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মো: শাহাজালাল শাকিল, সাধারণ সম্পাদক মো: সোহেল, মহানগর প্রজন্মদরের যুগ্ম আহ্বায়ক মো: সানি খোকন, মো: হান্নান, মো: আদিম, আশরাফ উদ্দিন রাসেল, সন্ধি সামাজি সংগঠনের সহ সভাপতি মো: মমিনুল ইসলাম, সুমন রায়, মো: সালাউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান অভি, ক্রীড়া সম্পাদক মো: অভি চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক টুটুল চন্দ্র শীল, কোষাধ্যক্ষ শংকর দাস, কার্যকরী সদস্য মো: রনি, মাসুদুর রহমান, মো: সুমন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, মো: নিয়াজ, মো: সোহাগ, মো: মুকুল, মো: রতন, আব্দুর রাজ্জাক, মিলন, মো: মাহাবুব প্রমূখ।
  
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স গঠন র ল ইসল ম গণহত য
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ১৯ জন শিক্ষক ও ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও তাঁদের সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭১তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জড়িত অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিপরীতে ভূমিকা নেওয়া শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে গত ১৫ মার্চ আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আকতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ, তথ্যচিত্র, ভিডিও ও পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিটি ওই শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লববিরোধী ও দমনমূলক কার্যকলাপে সংশ্লিষ্টতা পায়। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনজুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এখনো রেজল্যুশন আকারে হয়নি। কাউকে চিঠিও দেওয়া হয়নি। রেজল্যুশন হলে, চিঠি দেওয়া হলে অফিসিয়ালি জানাতে পারব।’
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আকতার হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকা চিহ্নিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। আমাকে আহ্বায়ক করেন। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্পিত দায়িত্ব পালন করে তদন্ত শুরু করি। বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তর থেকে তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়। লিখিত অভিযোগ, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ছবি ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা সর্বশেষ প্রতিবেদন তৈরি করতে সক্ষম হই।’
উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে আরও একটি কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি বিবেচনা করবে, কাকে কতটুকু শাস্তি দেওয়া যায়। তবে ফ্যাসিস্টের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
এদিকে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিরোধী ভূমিকায় থাকা আইন বিভাগের দুই শিক্ষক শাহজাহান মণ্ডল ও রেবা মণ্ডলকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা একটার দিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ দাবি করে তাঁরা মানববন্ধন করেন। পরে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন।
ইংরেজি, ল অ্যান্ড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, আল-ফিকহ অ্যান্ড ল–সহ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরাও তাঁদের শিক্ষকদের পক্ষে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে।
মানববন্ধনে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তদন্ত কমিটির কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি পক্ষপাতিত্ব করে রাঘববোয়ালদের বাদ দিয়ে চুনোপুঁটিদের ধরায় ব্যস্ত। সিদ্ধান্তটি পক্ষপাতমূলক ও অযৌক্তিক।’
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মির্জা আল শাহরিয়ার বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় আমি ১২ দিন জেলে ছিলাম। তখন রেবা মণ্ডল ছিলেন বিভাগের চেয়ারম্যান, আর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শাহজাহান মণ্ডল। আন্দোলনের সময় আমাদের বিভাগ থেকে কাউকে যেতে নিষেধ করা হয়নি। এই দুজন শিক্ষক সব সময় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করেছেন। আমরা তাঁদের শ্রেণিকক্ষে ফেরত চাই।’