মহাসড়ক অবরোধ করে অপহৃত চবি শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি
Published: 22nd, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপহৃতদের মুক্তি না দিলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পুরো দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইট সংলগ্ন চট্টগ্রাম-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে সড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় আধঘণ্টা পর দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এ অবরোধ শেষ হয়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শাফকাত বলেন, “আজ সাতদিন হয়ে গেলেও অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের পাহাড় কিংবা সমতলে কোথাও এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। অপহৃতদের মুক্তির বিষয়ে সরকারকে আরো কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। আমরা দ্রুত অক্ষত অবস্থায় তাদের মুক্তি চাই।”
আরো পড়ুন:
অনশনে অসুস্থ চবির ২ শিক্ষার্থী
চবিতে ২৪ ঘণ্টায়ও অনশন ভাঙেননি চারুকলার শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হুইসাং খুমি বলেন, “আমাদের অপহৃত ভাই-বোনদের দ্রুত মুক্তি চাই। পাশাপাশি অপহরণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, “এতদিনেও আমাদের চবি শিক্ষার্থীদের এখনো মুক্তি মেলেনি। যৌথবাহিনী এখনো তাদের কোনো সন্ধানই দিতে পারেনি। এটি সরকারের ব্যর্থতা। আমরা অতি শিগগির আমাদের ভাই-বোনদের মুক্তি চাই। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের মুক্তি না দিলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে (রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি-বান্দরবান) পুরো দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেব।”
এর আগে, রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বিজু উৎসব উদযাপন শেষে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চবির পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়। একইসঙ্গে তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফন্টের (ইউপিডিএফ-প্রসীত গ্রুপ) নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চারুকলা বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা, একই বিভাগের অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ অপহ ত
এছাড়াও পড়ুন:
সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ–দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী–পুরুষ। পরে বিকেল চারটার দিকে কয়েকজনকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান আমন্ত্রিত অতিথিরা।
সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির এ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবীর, সাঁওতাল নেতা স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, তৃষ্ণা মুর্মু, বিটিশ সরেন, গৌড় পাহাড়ি, রাফায়েল হাসদা, অলিভিয়া হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, লুইস মুর্মু, খিলন রবিদাস প্রমুখ। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।
গণ–অনশনে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ করার মতো সরকারের অনেক জমি পতিত আছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতেই কেন ইপিজেড করতে হবে? এ আন্দোলন ইপিজেডের বিরুদ্ধে নয়; বরং বাপ–দাদার জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। এসব জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আজও গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।
বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল–বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ হলে সাঁওতালরা দফায় দফায় এই জমি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। সেই সঙ্গে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধিতা করে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।