স্বপ্ন পূরণে যে পরামর্শ দিলেন শাহরুখ খান
Published: 23rd, April 2025 GMT
বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খান। তাকে ‘কিং খান’ও বলা হয়। কিন্তু এই মানুষটি বিশ্বাস করেন, মানুষের দেওয়া কোনো ‘ট্যাগ’ জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবনকে তিনি খুবই ছোট মনে করেন, এই ছোট জীবনে নিজের বড় স্বপ্ন পূরণে কি করা উচিত—সেই বিষয়ে একটি বক্তব্যে বিস্তারিত বলেছেন।
শাহরুখ খানের বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: মানুষ আপনার জীবনে যে ‘ট্যাগ’ই দিক, সেটা জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবন খুব ছোট। মানুষ আপনাকে স্বপ্নকে বড় ভাবে কিন্তু আপনার চুপ করে থাকাকে ভাবে দুর্বলতা। মানুষ আপনার সততা দেখে মনে করে আপনি নিষ্পাপ। সত্যিকার অর্থে শুধুমাত্র আপনিই জানেন, আপনি কে।
আমি যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসি তখন আমার মাথার ওপর কেউ ছিল না। এক জোড়া ছেঁড়া জুতা, একটি স্যুটকেস, সেকেন্ড হ্যান্ড জামাকাপড় আর বুকভর্তি স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। মানুষ আমাকে দেখলে বলতেন, এই ছেলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারবে! মানুষ আমাকে দেখলে হাসতেন। কিছু মানুষ আমাকে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল প্রধান হিরো হবো। আপনি দেখবেন যে, কোনো মানুষকে আপনার স্বপ্নের কথা বললে, তিনি বলবেন, এটা যথেষ্ট ভালো নয়, স্মার্ট নয়, ট্যালেন্টেড নয়। যখনই আপনি কারও কাছে আপনার স্বপ্নের কথা বলবেন, তার অর্থ আপনি তাদেরকে আপনাকে সংজ্ঞায়িত করার সুযোগ দিয়ে দিচ্ছেন। এটা খুবই বিদপজনক।
আরো পড়ুন:
ষাটের দশকের হেঁশেলের চিত্র ‘খাদ্যবিলাস’
যে রং দেখা যায় না
আপনি আপনার স্বপ্নের দিকে যাত্রা শুরু করুন। এরপর আপনার পাশে অন্য অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে যাবে। আপনি যদি আপনার লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে আপনি ভুলে যাবেন, আপনার স্বপ্নের কথা। মনে রাখবেন, আপনি কারও কাছ থেকে ‘বৈধ্যতা’ পাওয়ার জিনিস নন। আপনি কারও সেকেন্ড চয়েস নন। আপনি কারও ব্রেকআপ প্ল্যান নন। আপনি আপনার পরিকল্পনার প্রধান চরিত্র।
স্বপ্ন পূরণের পথে যাত্রা শুরু করুন। যে মানুষেরা আপনাকে অপমান করেনে, ছোট করেন তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। যেখানে আপনার মূল্যায়ন নেই, সেখান থেকে সরে যান। সেই সম্পর্ক থেকে সরে যান, যে সম্পর্ক আপনাকে কেবল ‘ছোট’ অনুভব করায়। এরপরে মানুষ আপনাকে বড় ভাবতে শুরু করবে। এর অর্থ এই নয় যে, আপনি মানুষকে ভয় পাবেন। এর অর্থ হলো, সেই সব মানুষের কাছ থেকে সরে থাকা; যারা আপনাকে মূল্য দেয় না।
নিজেকে গড়ে তোলার জন্য সময় নিন। শিক্ষা অর্জন করুন। নিজেকে নির্মাণ করুন। দয়া করে নিজের সঙ্গে কথা বলুন। অহংকারী হয়ে উঠবেন না, সচেতন হয়ে উঠুন। এর অর্থ এই নয় যে, আমি অন্যদের চেয়ে বড়। এর অর্থ হলো, আপনি অন্যদের চেয়ে ছোট নন।
অনেক সময় আমরা দ্বিধায় পড়ে যাই যে, নম্রতা হলো নিজেকে অবহেলা করা। মনে রাখবেন, আপনি উজ্জ্বলভাবে জ্বলে ওঠার জন্য জন্মেছেন। স্বপ্ন তাড়া করা থামিয়ে দেবেন না। এটি আপনার ডেইলি রুটিনে যুক্ত করে নিন। একদিন সকালে আপনি একজন সুপারস্টারের মতো জেগে উঠবেন আর অন্যদিনগুলোতে আপনি আপনার গল্পে একজন পার্শ্ব চরিত্রের মতো জেগে উঠবেন; এটাও ঠিক আছে। এটা কোনো ব্যাপার নয় যে, আপনি আপনার গল্পের বা ফিল্মের কোন চরিত্রটি অনুভব করছেন। কিন্তু নিজেকে এটা মনে করিয়ে দিন ‘আমি বিক্রির জন্য নই, আমার কোনো ডিসকাউন্ট নেই, আমার কোনো দর কষাকষি নেই।’ আয়নায় শুধু নিজের মুখ দেখবেন না, নিজের ভেতরে থাকা আগুন দেখুন। কারণ ওই আগুনই সত্য।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ন ষ আপন আপন ক
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত