ময়মনসিংহে জাতীয় পার্টির কার্যালয় হিসেবে পরিচিত ভবনের নাম সুন্দর মহল। সম্প্রতি রাজনৈতিক কার্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করে রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের কাছে। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ভবনটির সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে মানববন্ধন করে সুন্দর মহলকে দালাল মহল ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী ফ্যাসিস্টদের সহচর রওশন এরশাদের সুন্দর মহলকে বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। তারা ভবনটিকে রেস্টুরেন্টের কাছে ভাড়া দিয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ সরকারকে গণহত্যায় পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে। এখন তারা গা বাঁচাতে সুশীলদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সুশীলতার আড়ালে তারা আওয়ামী লীগকেই পুনর্বাসন করতে চায়।

ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা আবদুল্লাহ আল নাকিব জানান, অভ্যুত্থানে ময়মনসিংহে যাদের অবদান ছিল, তাদের একটি অংশ আজকে (বুধবার) দালাল মহলের সামনে উপস্থিত হয়েছেন। বিগত সরকারের আমলে যতগুলো বিনা ভোটে নির্বাচন হয়েছে, সবক’টিতেই রওশন এরশাদ সমর্থন জানিয়েছেন শেখ হাসিনাকে। গণতন্ত্র হত্যাকারীদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ওয়ালিদ আহমেদ ওলি বলেন, ছাত্র-জনতার পর আপনাদের নির্দেশে গুলি চলেছে। এখন আপনারা গর্তে লুকিয়েছেন। গর্ত থেকে আপনারা ভিডিও বার্তা দিচ্ছেন। তাদের প্রতিহত করার জন্য ছাত্র-জনতা সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। এই দেশকে আপনারা চাইলেও আর পেছনে নিয়ে যেতে পারবেন না। ছাত্র-জনতাকে আর কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।

সুন্দর মহলের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয় ও ভেতরে অবস্থিত কেয়ারটেকার থাকার বাসাটি ভাঙা। সামনে দ্বিতীয় তলার বারান্দায় টানানো হয়েছে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ড। দেয়াল ভাঙার ইটগুলোর পলেস্তারা খুলে পরিষ্কার করা হয়েছে। সুন্দর মহল লেখাটি এখনও জ্বলজ্বলে থাকলেও সঙ্গে ভবনের বিভিন্ন অংশে ‘দালাল মহল’ লিখে রেখেছে ছাত্র-জনতা। সরকার পতনের দিন ভবনটি ভাঙচুরও করা হয়েছে।

মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবদুল আউয়াল সেলিম জানান, সুন্দর মহলের সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে রওশন এরশাদের মায়ের স্মৃতিবিজড়িত কবর রয়েছে। অনেকে এখন কারণে-অকারণে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়। দলের অবস্থা এখন ভালো না। রওশন এরশাদের নির্দেশে বাড়িতে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, পরিবারের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি রেস্টুরেন্টের কাছে মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, ১২ বছরের জন্য তারা এখানে থাকতে পারবেন। মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ টাকা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়মনস হ রওশন এরশ দ ছ ত র জনত দ ল ল মহল

এছাড়াও পড়ুন:

বড়াইগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত বৃদ্ধের মৃত্যু

নাটোরের বড়াইগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত রওশন আলম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। শনিবার দুপুরে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার দিঘইর গ্রামের বাসিন্দা।

গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার দিঘইর দেশপাড়া গ্রামে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম ও উপজেলা সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তখন রওশন আলম আহত হন। তিনি উপজেলার দিঘইর গ্রামের বাসিন্দা।

আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, স্থানীয় সোহেল রানার সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। তিনি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ২০ থেকে ২৫ জন লোক নিয়ে তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা করেন। এতে চারজন আহত হন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে রওশন আলম মারা যান।

তবে সোহেল রানা বলেন, আরিফুল ইসলাম ও তাঁর লোকজন এলাকাবাসীকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করে আসছিলেন। সেই ঘটনার সূত্রে মারামারি হয়েছে। আরিফুলের সমর্থকেরা হত্যা করে তাঁদের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, মারামারি নিয়ে আগেই মামলা হয়েছিল। এখন মারামারির মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বড়াইগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত বৃদ্ধের মৃত্যু