রওশন এরশাদের ‘সুন্দর মহল’কে ‘দালাল মহল’ ঘোষণার দাবি
Published: 23rd, April 2025 GMT
জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদের ময়মনসিংহের ‘সুন্দর মহল’ নামে পরিচিত বাড়িটিকে ‘দালাল মহল’ ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নগরীর টাউন হলের পাশে বাড়িটির সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। পরে আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন।
রওশন এরশাদের পৈতৃক এ বাড়িটি জাতীয় পার্টির কার্যালয় হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। গত বছরের ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক কার্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের কাছে বাড়িটি ভাড়া দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে নার্স-মিডওয়াইফ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
চীনের অর্থায়নে হাসপাতাল ফেনীতে স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী ফ্যাসিস্টদের সহচর রওশন এরশাদের সুন্দর মহলকে বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। তারা এ ভবনটিকে রেস্টুরেন্টের কাছে ভাড়া দিয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ সরকারকে গণহত্যায় পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে। এখন তারা গা বাঁচাতে সুশীলদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সুশীলতার আড়ালে তারা আওয়ামী লীগকেই পুনর্বাসন করতে চায়।
ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল নাকিব বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে ময়মনসিংহে যাদের অবদান ছিল তাদের একটি অংশ আজকে ‘দালাল মহল’-এর সামনে উপস্থিত হয়েছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যতগুলো বিনা ভোটে নির্বাচন হয়েছে, সবগুলোতেই রওশন এরশাদ সমর্থন জানিয়েছেন শেখ হাসিনাকে। গণতন্ত্র হত্যাকারীদের অবশ্যই বিচার করতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ওয়ালিদ আহমেদ ওলি বলেন, “ছাত্র-জনতার ওপর আপনাদের নির্দেশে গুলি চলেছে। এখন আপনারা গর্তে লুকিয়েছেন। গর্ত থেকে আপনারা ভিডিও বার্তা দিচ্ছেন। আপনাদের প্রতিহত করার জন্য ছাত্র-জনতা সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। এই দেশকে আপনারা চাইলেও আর পেছনে নিয়ে যেতে পারবেন না। ছাত্র-জনতাকে আর কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।”
‘সুন্দর মহল’-এর ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয় ও ভেতরে অবস্থিত কেয়ারটেকার থাকার বাসাটি ভাঙা। সামনে দ্বিতীয় তলার বারান্দায় টানানো হয়েছে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের সাইনবোর্ড। দেয়াল ভাঙার ইটগুলোর পলেস্তারা খুলে পরিষ্কার করা হয়েছে। ‘সুন্দর মহল’ লেখাটি এখনো জ্বলজ্বলে থাকলেও ভবনের বিভিন্ন অংশে ‘দালাল মহল’ লিখে রেখেছে ছাত্র-জনতা। সরকার পতনের দিন ভবনটি ভাঙচুর করা হয়।
মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল আউয়াল সেলিম বলেন, “সুন্দর মহলের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে রওশন এরশাদের মায়ের কবরটি রয়েছে। অনেকে এখন কারণে-অকারণে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়। দলের অবস্থা এখন ভালো না। রওশন এরশাদদের নির্দেশে বাড়িতে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “পরিবারের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি রেস্টুরেন্টের কাছে মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ১২ বছরের জন্য তারা এখানে থাকতে পারবেন। মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ টাকা।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ল ল মহল ছ ত র জনত র র জন
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় অবৈধ মাটি ব্যবসা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেলের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। হামলার চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বক্তারা। জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঢেউ’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন, প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য শাহাজাহান সাজু, খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের উদ্যোক্তা হারুন অর রশিদ ও শাহীন মৃধা, প্রথম আলোর বন্ধুসভার জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায় ও সাধারণ সম্পাদক শাহাজান মিয়া এবং ঢেউয়ের সদস্য শাহাদাত হোসেন।
বক্তারা বলেন, যাঁরা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত, তাঁদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। বাংলাদেশ সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের মতপ্রকাশের অধিকার দিয়েছে। একজন সাংবাদিক হিসেবে মাইনুদ্দিন রুবেল সেই অধিকার প্রয়োগ করেছেন। সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সত্য প্রকাশ থেকে বিরত রাখা যাবে না। হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
মাইনুদ্দিন রুবেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি। তাঁর বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটি দাউদপুর গ্রামে। তিনি ২০ বছর ধরে জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে বসবাস করছেন।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে বিজয়নগরের মির্জাপুর এলাকায় উপজেলা পরিষদের সামনে তাঁর ওপর হামলা হয়। এতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কাইয়ুম মিয়া এবং বহিষ্কৃত যুবদল নেতা ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সীসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন রুবেল।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মোখলেছুর ও কাইয়ুম দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে মাটি ব্যবসা করছেন। পুকুর ও কৃষিজমির মাটি কেটে তা ট্রাক্টরে করে অন্যত্র বিক্রি করছেন তাঁরা। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।