সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সিংহড়তলী গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধের ৩০ থেকে ৩৫ মিটার ফাটল দেখা দেওয়ার এক দিন পর একাংশ নদে ধসে গেছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে চুনকুড়ি নদের জোয়ারের তোড়ে হঠাৎ বাঁধের একাংশ ধসে যায়। দ্রুত বাঁধ মেরামত করতে না পারলে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ থেকে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

চুনকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা শওকাত হোসেন বলেন, চুনকুড়ি নদের বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দেওয়ার এক দিন পরেই হঠাৎ বাঁধের একাংশ ধসে পড়েছে। দ্রুত সংস্কার করা না গেলে ইউনিয়নের সিংহড়তলী, চুনকুড়ি, ধল, হরিনগর, ছোট ভেটখালি, হেতালখালি, পারশেমারি, টেংরাখালিসহ ১০টি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। পাশাপাশি ক্ষতি হতে পারে বসতবাড়ি, চিংড়ির ঘের, মিঠাপানির পুকুর, ফসলি জমিসহ রাস্তাঘাট।

শওকাত হোসেন আরও বলেন, ওই বাঁধ দিয়ে মূলত চুনকুড়ি, সিংহড়তলীসহ পাঁচ থেকে ছয়টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকে। বাঁধটি সম্পূর্ণ ধসে গেলে কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে। বর্তমানে মানুষ বাঁধের এক পাশ দিয়ে কোনোরকমে হেঁটে চলাচল করছে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা.

রনী খাতুন বলেন, ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। বাঁধটি সংস্কারের জন্য পাউবোর কর্মকর্তারা সকাল–সন্ধ্যা কাজ করছেন। তিনি এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে বাঁধ সংস্কারকাজে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

পাউবো সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বিভাগ–১–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন ঘটনাস্থল থেকে বলেন, ‘চুনকুড়ি নদের বেড়িবাঁধে গতকাল শনিবার ৩০ থেকে ৩৫ মিটার জায়গাজুড়ে ফাটল শুরু হয়। গতকাল থেকেই তাঁরা কাজ শুরু করেন। কিন্তু আজ হঠাৎ বেলা ১১টার দিকে চুনকুড়ি নদের জোয়ারের তোড়ে বাঁধের একাংশ ধসে যায়। বর্তমানে কাজ চলছে। সব ধরনের সামগ্রী এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। যাতে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে না পারে, সে জন্য ৫০ থেকে ৬০ মিটার রিং বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে। আশা করছেন, আজ রাতের মধ্যে রিং বাঁধ দিতে পারলে বড় ধরনের ঝুঁকি আর থাকবে না।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ধ র এক

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর পৌরসভায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতক্ষীরার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘শ্যামনগর আসন ছিল, শ্যামনগর থাকবে’, ‘পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে জেসি কমপ্লেক্স চত্বরে পথসভা করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়ামন কবীর, জেলা বিএনপির সদস্য জি এম লিয়াকত আলী, সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটির আসন পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সরাসরি যোগযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হলে কালীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে অথবা নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয়।

অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ ৪টি ইউনিয়ন। পুনর্বিন্যাস করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল