শ্যামনগরে উপকূল রক্ষা বাঁধে ফাটলের পর একাংশ নদে বিলীন, আতঙ্কে এলাকাবাসী
Published: 27th, April 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সিংহড়তলী গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধের ৩০ থেকে ৩৫ মিটার ফাটল দেখা দেওয়ার এক দিন পর একাংশ নদে ধসে গেছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে চুনকুড়ি নদের জোয়ারের তোড়ে হঠাৎ বাঁধের একাংশ ধসে যায়। দ্রুত বাঁধ মেরামত করতে না পারলে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ থেকে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
চুনকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা শওকাত হোসেন বলেন, চুনকুড়ি নদের বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দেওয়ার এক দিন পরেই হঠাৎ বাঁধের একাংশ ধসে পড়েছে। দ্রুত সংস্কার করা না গেলে ইউনিয়নের সিংহড়তলী, চুনকুড়ি, ধল, হরিনগর, ছোট ভেটখালি, হেতালখালি, পারশেমারি, টেংরাখালিসহ ১০টি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। পাশাপাশি ক্ষতি হতে পারে বসতবাড়ি, চিংড়ির ঘের, মিঠাপানির পুকুর, ফসলি জমিসহ রাস্তাঘাট।
শওকাত হোসেন আরও বলেন, ওই বাঁধ দিয়ে মূলত চুনকুড়ি, সিংহড়তলীসহ পাঁচ থেকে ছয়টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে থাকে। বাঁধটি সম্পূর্ণ ধসে গেলে কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে। বর্তমানে মানুষ বাঁধের এক পাশ দিয়ে কোনোরকমে হেঁটে চলাচল করছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা.
পাউবো সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বিভাগ–১–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন ঘটনাস্থল থেকে বলেন, ‘চুনকুড়ি নদের বেড়িবাঁধে গতকাল শনিবার ৩০ থেকে ৩৫ মিটার জায়গাজুড়ে ফাটল শুরু হয়। গতকাল থেকেই তাঁরা কাজ শুরু করেন। কিন্তু আজ হঠাৎ বেলা ১১টার দিকে চুনকুড়ি নদের জোয়ারের তোড়ে বাঁধের একাংশ ধসে যায়। বর্তমানে কাজ চলছে। সব ধরনের সামগ্রী এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। যাতে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকতে না পারে, সে জন্য ৫০ থেকে ৬০ মিটার রিং বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে। আশা করছেন, আজ রাতের মধ্যে রিং বাঁধ দিতে পারলে বড় ধরনের ঝুঁকি আর থাকবে না।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ধ র এক
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ২
সাতক্ষীরায় পৃথক দুর্ঘটনায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাড়ি ও শ্যামনগর উপজেলার তারানপুরে এদুটি দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে নাঈম হাসান (১৮) এবং শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের তারানপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মাও. ফজলুর রহমান (৫৫)।
নিহত নাঈম হোসেন সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং ফজলুর রহমান শ্যামনগর উপজেলার দরগাহপুর এনডিএস মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক।
কেড়াগাছি গ্রামের শহীদুল ইসলাম জানান, তার ছেলে নাঈম হাসান ২০২০ সালে সেনাবাহিনীতে চাকরি পাওয়ার পর রাজশাহীতে চার মাস প্রশিক্ষণ দিয়ে বাড়ি চলে আসে। বর্তমানে সে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশুনা করার পাশপাশি সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মোহরার হিসেবে কাজ করতেন।
প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে সে কর্মস্থলে আসার উদ্দেশ্যে মোটর সাইকেল যোগে বাড়ি থেকে বের হয়। পথিমধ্যে আগরদাড়ি মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সামনে পৌঁছালে সাতক্ষীরা থেকে বাঁশদহাগামি একটি পণ্যভর্তি ট্রাক (যার নাম্বার যশোর-ট-১১-১৬৫৬) তার মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘেষেণা করেন। বিক্ষুদ্ধ জনতা এসময় ঘাতক ট্রাকটি আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক রাশেদুজ্জামান জানান, হাসপাতালের আনার আগেই নাঈমের মৃত্যু হয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামিনুল হক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, শ্যামনগরের তারানপুর গ্রামে বিদ্যুৎ স্পর্শে মাওলানা ফজলুর রহমান নামে এক মাদ্রাসা প্রভাষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়ির প্রাচীরে মোটর দিয়ে পানি দেওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কারো কোন অভিযোগ না থাকায় প্রভাষক ফজলুর রহমানের মরদেহ পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/এস