Samakal:
2025-06-16@02:55:37 GMT

মাটির পাত্রে রাখা পানি

Published: 29th, April 2025 GMT

মাটির পাত্রে রাখা পানি

এক সময় মানুষ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি বাসনপত্রে রান্না করত। পানি সংরক্ষণের জন্যও ব্যবহার করা হতো মাটির পাত্র। এ অভ্যাস তৎকালীন প্রজন্মকে সুস্থ জীবনযাপনে সাহায্য করত। সময়ের বিবর্তনে আবারও ফিরে এসেছে সেই চল। অনেকে আজকাল পানি সংরক্ষণের জন্য মাটির ফিল্টার ও জগ ব্যবহার করছেন। অনেকে আবার পানি খাওয়ার জন্য ব্যবহার করছেন মাটির মগ বা গ্লাস। মাটির পাত্রে রাখা পানি পানে নানা ধরনের উপকারিতা রয়েছে। যেমন–
প্রাকৃতিকভাবে পানি ঠান্ডা রাখে 
মাটির পাত্রে রাখা পানি প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা থাকে। এ গরমে বাইরে থেকে ফিরে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি না খেয়ে এ পাত্রে রাখা পানি পান করুন। এতে শরীর শীতল হবে। 
হজম শক্তিকে উন্নত করে
মাটির পাত্রে পানি রেখে পান করলে হজম শক্তি উন্নত হয়। মাটিতে থাকা ক্ষার পানির অম্লতা নিরপেক্ষ করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ভালো। সেই সঙ্গে মাটিতে থাকা খনিজ ও লবণ হজমের জন্য উপকারী। মাটির পাত্রে রাখা পানি পানে এসিডিটি, ফোলাভাব ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো হজমের সমস্যা কমে। শরীরে টক্সিক কেমিক্যালের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে মাটির পাত্রে রাখা পানি।
হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করে
প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোক একটি সাধারণ সমস্যা। মাটির পাত্রে রাখা পানি পান করলে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে সাহায্য করে। কারণ এ পাত্রে পানি থাকায় খনিজ এবং পুষ্টি উপাদানগুলো অক্ষত থাকে। এর ফলে শরীর দ্রুত ডিহাইড্রেট হয়।
পানির গুণমান উন্নত
মাটির পাত্র কেবল পানি ঠান্ডা করে না, বরং প্রাকৃতিকভাবে পানি বিশুদ্ধ করার জন্যও কার্যকর। কাদামাটি দিয়ে তৈরি ছিদ্রযুক্ত মাটির পাত্র প্রাকৃতিকভাবে পানি ফিল্টার করে। যার ফলে পরিষ্কার এবং বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়।
স্বাদ বাড়ায়: মাটির পাত্র রাখা পানি পান করলে পানিতে অন্য রকম এক স্বাদ ও সুগন্ধ যোগ হয়। মাটির বিভিন্ন উপাদান পানিতে মিশে স্বাদটা ভিন্নমাত্রা পায়। এ কারণে এই পানি খেতে অনেক সতেজ লাগে।  
পরিবেশবান্ধব
প্লাস্টিকের বোতলের চেয়ে মাটির পাত্র বেশি ভালো হওয়া কারণ, এটি পরিবেশবান্ধব। এ ছাড়া কাচের বোতলের চেয়ে মাটির বোতল ব্যবহার করা সাশ্রয়ী। মাটির পাত্র দীর্ঘ সময় ব্যবহারও করা যায়। v
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস, হেলথ শটস

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র জন য প ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে যাক

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তার অবসান হবে আশা করা যায়। নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়ে দুই পক্ষই নীতিগতভাবে একমত হয়েছে যে ২০২৬ সালের রোজার আগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। 

সাম্প্রতিক কালে নানা বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বের বিরোধ লক্ষ করা যাচ্ছিল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে বিএনপি–দলীয় প্রার্থী ইশরাক হোসেনের শপথ ইস্যু সেই বিরোধকে আরও বাড়িয়ে দেয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সর্বশেষ বৈঠকে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করে।

কিন্তু ঈদুল আজহার আগের রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণার ব্যাপারে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানায়। এর আগে বিএনপির নেতৃত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ এনে তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে। 

এমনই একটি পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরের সময় লন্ডনে তাঁর সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বৈঠকের ঘোষিত যৌথ বিবৃতিতে নির্বাচনের দিনক্ষণের বিষয়টি সামনে এলেও দুই পক্ষের আলোচনা কেবল এর মধ্যে সীমিত ছিল না। প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান ও সংস্কারের ধারাবাহিকতার ওপরও জোর দেন তঁারা। 

বৈঠকের ফলাফলকে প্রায় সব দলই স্বাগত জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি ঘোষণার ধরন নিয়ে আপত্তি জানালেও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সরাসরি বিরোধিতা কেউ করেনি। আমরাও মনে করি, কোনো বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদ দেখা দিলে আলোচনার মাধ্যমেই তা সমাধান করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ যারা সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে, সেটাও গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিতে হবে। লন্ডন বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সংস্কার ও বিচারকাজ দৃশ্যমান করার ওপর জোর দিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে দেশে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরাগমন না ঘটে, সে জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের কাজটি ত্বরান্বিত করা জরুরি। আবার অপরাধ করে যাতে কেউ পার না পায়, সে জন্য জুলাই-আগস্টের হত্যার বিচারও অপরিহার্য। কিন্তু এই দুটি বিষয়কে কোনোভাবে নির্বাচনের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা সমীচীন হবে না।

যেসব সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে নির্বাচন ও সংবিধানের বিষয়টি জড়িত নয়, সেগুলো সরকার নির্বাহী আদেশেও বাস্তবায়ন করা যায়। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে তেমন বাধা আসার কথা নয়। তবে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার অর্থ এই নয় যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এখন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করাই বড় চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক দলগুলোর সার্বিক সহযোগিতা না থাকলে সরকার একা কাজটি করতে পারবে না। 

ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তর্দলীয় ও আন্তদলীয় সংঘাতের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে না চললে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না। আমরা আশা করি, দিন-তারিখের বিষয়ে সমঝোতার পর নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। রাজনীতিতে মত ও পথের পার্থক্য থাকবে; তাই বলে একে অপরকে ‘শত্রুজ্ঞান’ করার পুরোনো সংস্কৃতি থেকে তাদের বেরিয়ে আসতে হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ