প্রাচীনকাল থেকেই, চা অনেক সংস্কৃতির অংশ এবং সারা বিশ্বে দৈনন্দিন জীবনের একটি প্রধান উপাদান। জনপ্রিয় পানীয় হওয়ার পাশাপাশি এর সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং আর্থিক তাৎপর্যও রয়েছে। নিয়মিত পা পানের কিছু স্ব্স্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এর পাশাপাশি এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানসিক চাপ কমায়। এমন কিছু ভেষজ চা আছে যা প্রাকৃতিকভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে। যেমন-

পুদিনা চা
সুগন্ধযুক্ত পুদিনা পাতার চা শুধু খেতেই ভালো লাগে তা নয়, পেটের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। এই চা হজমশক্তি উন্নত করে এবং বদহজম বা গ্যাসের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। এর পাশাপাশি, এটি শরীরকে হালকা এবং সতেজ রাখে।

গ্রিন টি
গ্রিন টি-য়ে থাকা ক্যাটেচিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের বিপাক ক্রিয়া বাড়ায়। এটি দ্রুত চর্বি পোড়ায়, বিশেষ করে নিয়মিত এই চা খেলে পেট এবং কোমরের চারপাশে জমে থাকা চর্বি কমে।

লেবু-আদা চা
লেবু এবং আদা দুটিই ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ। লেবু-আদা চা শরীরে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং হজমশক্তি উন্নত করে। এই চা পেটের ফোলাভাব কমায় এবং বিপাক ত্বরান্বিত করে, যার ফলে ওজন কমানো সহজ হয়।

জবা চা
ফুল দিয়ে তৈরি এই চায়ের দারুন স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। জবা চা শরীরে চর্বি জমা রোধ করে এবং ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।

দারুচিনি-মধু চা
দারুচিনি বিপাক সক্রিয় করে, এবং মধু  প্রাকৃতিক চর্বি ঝরায়। উভয়ই শরীরে সঞ্চিত চর্বি দ্রবীভূত করতে একসাথে কাজ করে। এই চা কেবল ওজন কমায় না বরং শরীরে শর্করার মাত্রাও ভারসাম্যপূর্ণ রাখে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ